অতিরিক্ত সচিবের বাড়িতে ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৭
Published: 19th, January 2025 GMT
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় বাড়ৈইখালীর শিবরামপুর গ্রামে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সেলিম খানের পৈতৃক বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। লুট করা বিভিন্ন সামগ্রী ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্রও উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শামসুল আলম সরকার।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন– মো.
পুলিশ সুপার বলেন, ৪ জানুয়ারি রাতে শিবরামপুর গ্রামে অতিরিক্ত সচিবের পৈতৃক বাড়ির দরজা ভেঙে অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জন প্রবেশ করে। তারা ধারালো অস্ত্রের মুখে রওশন আরার দুই হাতসহ মুখ বেঁধে এবং তাঁর মেয়েকে অস্ত্রের ভয় দেখায়। পরে স্টিলের আলমারির চাবি নিয়ে লকার খুলে ৫ ভরি স্বর্ণালংকার এবং টাকা লুট করে।
পরে অতিরিক্ত সচিবের চাচাতো ভাই রেজানুর রহমান রতনের বাড়িতে প্রবেশ করে তাদেরও জিম্মি করে খুন-জখমের ভয় দেখায়। একপর্যায়ে স্টিলের আলমারির লকার ভেঙে টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন লুট করে।
পুলিশ সুপারের ভাষ্য, ডাকাতির খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর অভিযান চালিয়ে এর সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চালায়। পরবর্তী সময়ে শ্রীনগর থানা ও মুন্সীগঞ্জ ডিবি পুলিশের একাধিক দল অভিযানে নামে। তারা তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে।
একপর্যায়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় অভিযান চালিয়ে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে লুটের সামগ্রীসহ ডাকাতিতে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ভৈরবে ব্যবসায়ীকে তুলে নিয়ে মুক্তিপণ আদায়, ডিবির দুই সদস্য বরখাস্ত
কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সদস্য পরিচয়ে এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে তুলে নেওয়া হয়। ৫ ঘণ্টা পর ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা দিয়ে মুক্তি পেয়েছেন ওই ব্যবসায়ী। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন ও কনস্টেবল ইসমাইল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
গতকাল শনিবার কিশোরগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী এক আদেশে অভিযুক্ত দুজনের বিরুদ্ধে এই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেন। আজ রোববার দুপুরে মুঠোফোনে কিশোরগঞ্জ ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুল হক প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে দেলোয়ার ও ইসমাইলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যাওয়ায় পুলিশ সুপার শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিয়েছেন।
ভৈরব উপজেলার মানিকদী নতুন বাজারে আমির হোসেন নামের এক ব্যক্তি মুদিদোকানে ব্যবসা করেন। অভিযোগ রয়েছে, গত সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সাদা রঙের একটি মাইক্রোবাস আমির হোসেনের দোকানের সামনে থামে। মাইক্রোবাস থেকে ডিবি পুলিশের আটজন সদস্য নামেন। নেমেই আমির হোসেনের কাছে জানতে চান জ্বালানি তেল বিক্রি করেন কি না। পরে ওই দোকানে তল্লাশি শুরু করেন। একপর্যায়ে আমির হোসেনকে বাইরে নিয়ে যেতে চান। আমির হোসেন যেতে চাননি। তখন কপালে অস্ত্র ঠেকিয়ে গাড়িতে ওঠানো হয়। পরে গাড়ি দিয়ে তাঁকে ভৈরব ও কুলিয়ারচরের বিভিন্ন প্রান্তে নেওয়া হয়। চলমান অবস্থায় তাঁর কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করা হয়। না দিতে পারলে এক হাজার পিস ইয়াবা দিয়ে চালান দেওয়ার কথা বলা হয়। একপর্যায়ে এসআই দেলোয়ারের মুঠোফোন দিয়ে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আমির হোসেন যোগাযোগ করেন এবং ১ লাখ ৯৩ হাজার টাকা দেওয়া হয়। তাঁকে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।
আমির হোসেন বলেন, ‘আমার অপরাধ আমি জানি না। গাড়ির ভেতর মারধর করা হয়েছে, টাকা দেওয়ার পর আমাকে ছাড়া হয়। বিষয়টি আমি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এসআই দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমির হোসেনের কাছে মাদক আছে—এমন অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালানো হয়েছিল। কিন্তু ওই দিন তাঁর কাছ থেকে কিছুই পাওয়া যায়নি। মনে হয়েছে, আমির হোসেনকে নিয়ে আরও কয়েকটি বাড়িতে অভিযান চালানো গেলে মাদক পাওয়া যেতে পারে। সেই কারণে তাঁকে গাড়িতে ওঠানো হয়। কিন্তু তাতেও আমরা সফল হইনি। শেষে দুজনকে ছেড়ে দিয়েছি। এর মধ্যে লেনদেনের কোনো বিষয় নেই।’