নামফলক ভাঙতে গিয়ে পিটুনির শিকার শ্রমিক দল ও আ.লীগ নেতা
Published: 19th, January 2025 GMT
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা পরিচয়ে উন্নয়ন কাজের নামফলক ভাঙতে গিয়ে পিটুনির শিকার হয়েছেন শ্রমিক দল ও আওয়ামী লীগের দুই নেতা। গত বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ভাওড়া ইউনিয়নের কামারপাড়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
গতকাল শনিবার উপজেলার ভাওড়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম শ্যামল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নামফলকে টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনের সাবেক এমপি খান আহমেদ শুভর নাম থাকায় তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
পিটুনির শিকার দুই নেতা হলেন– উপজেলা শ্রমিক দলের প্রচার সম্পাদক আবুল কালাম ও পৌর আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক শরিফ সিকদার।
স্থানীয়রা জানান, ভাওড়া ইউনিয়নের কামারপাড়া বাজারে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে নির্মিত ‘কামারপাড়া-শশধরপট্টি’ সড়কের ভিত্তিপ্রস্তরের নামফলক রয়েছে। এতে সাবেক এমপি খান আহমেদ শুভর নাম আছে। বৃহস্পতিবার রাতে ফলকটি আবুল কালাম ও শরিফ সিকদার ভাঙতে শুরু করেন।
খবর পেয়ে ইউপি সদস্য শ্যামল তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা পরিচয় দেন। এ সময় লিখিত নির্দেশনা চাইলে তারা দেখাতে পারেননি। একপর্যায়ে কামারপাড়া বাজারে থাকা স্থানীয় লোকজন তাদের পিটুনি দেন। পরে ক্ষমা চেয়ে তারা সেখান থেকে চলে যান।
শরিফ শিকদার বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি ওই এলাকায় ওয়াজ মাহফিলে গিয়েছিলাম। ফলক ভাঙার খবর পেয়ে গেলে এলাকার মানুষ আমাকে ভুল বোঝে।’ এ বিষয়ে আবুল কালামের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতি কুব্বত আলী মৃধা বলেন, যদি এ ধরনের কাজ সংগঠনের কেউ করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন অর রশিদ বলেন, শরিফ পৌর আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক হলেও এখন বিএনপির রাজনীতি করেন।
বিষয়টি শুনেছেন জানিয়ে উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল সাজ-রিজনের বলেন, এ নিয়ে ইউএনওর সঙ্গে কথা বলব। তিনি যে পরামর্শ দেবেন, সেভাবে বিষয়টি দেখা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ আওয় ম ল গ উপজ ল আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
ঠিকাদার বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ২ প্রকৌশলীকে হুমকির অভিযোগ
খুলনা নগরীর খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্লা সোহাগের বিরুদ্ধে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) দুই প্রকৌশলীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কুয়েটের একটি ভবনের ছাদের ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজে ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে লাভ আরও বেশি নির্ধারণের কথা বলেছিলেন ওই ঠিকাদার। এ নিয়ে প্রকৌশলীদের তিনি হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ প্রেক্ষাপটে কুয়েটের নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) শেখ আবু হায়াত ও নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) মো. গোলাম কিবরিয়া সোমবার কুয়েট উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করে নিরাপত্তা চেয়েছেন।
সূত্র জানায়, কুয়েটের ১৩ নম্বর ভবনের ছাদের ওপর ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজ নিয়েছেন মোল্লা সোহাগ। কাজটি কয়েকদিন আগে শুরু হয়। গত রোববার বিকেল ৩টার দিকে ঠিকাদার সোহাগ প্রথমে নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়ার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী এ বি এম মামুনুর রশিদ এবং অন্য নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াতকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হুমকি দেন। গালাগাল করতে নিষেধ করলে তিনি গোলাম কিবরিয়াকেও গালাগাল ও হুমকি দেন। পরে তিনি একই পরিচয় দিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াতকে ফোনে গালাগাল ও হুমকি দেন।
উপাচার্যের কাছে দুই নির্বাহী প্রকৌশলী লিখিত অভিযোগে বলেন, ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজের দর প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ের প্রকৌশলীরা বাজারদরের সঙ্গে সরকারি নিয়মে ভ্যাট, আইটি ও ১০ শতাংশ প্রফিট বা লাভ (পূর্বনির্ধারিত) যুক্ত করে নির্ধারণ করেন। ঠিকাদার সোহাগ ১০ শতাংশ লাভ কেন যুক্ত করে দর নির্ধারণ করা হয়েছে, তাঁকে আরও বেশি লাভ দিতে হবে বলে ফোনে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়াকে জানান। এ কথা বলার পর প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু কোনো কথা না শুনে ফোনে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া ও শেখ আবু হায়াতকে গালাগাল ও মারধরের হুমকি দেন সোহাগ। এ অবস্থায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াত বলেন, রোববার বিকেল ৩টার কিছু আগে খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয়ে আমাকে ফোন দিয়ে বলে– ‘তুই চেয়ারের পরে বসে সবাইরে ১০ লাখ ২০ লাখ টাকার কাজ দিস। আমাকে দিছিস টেন পারসেন্ট লাভে।’ এই বলে আমাকে যাচ্ছেতাই বলে গালাগাল করেন। পাঁচ মিনিট পর ফোন দিয়ে আমাকে দেখে ছাড়বেন, আমার বাড়ি আক্রমণ করবেন, ফুলবাড়িগেটে গেলে আমাকে দেখে নেবেন– এসব বলে হিুমকি দেন।
নিজের সাংগঠনিক পরিচয় ও প্রকৌশলীকে ফোন দেওয়ার কথা স্বীকার করেন মোল্লা সোহাগ। তবে কোনো ধরনের ঠিকাদারি কাজের সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলে দাবি করেন। মোল্লা সোহাগ বলেন, আমার নেতার অর্ডার আছে– আমি কোনো জায়গায় কোনো টেন্ডারেও যাই না, কোনো ঠিকাদারিতেও নেই। আমার কোনো কাজ কুয়েটে চলে না। আমার ট্রেড লাইসেন্সই নেই, কাজ পরের কথা। আমি তাদের (প্রকৌশলী) ফোন দিয়েছিলাম, কথা হয়েছে, তবে কোনো হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়নি।
কোনো কাজ চলছে না, তাহলে প্রকৌশলীদের কার হয়ে ফোন দিয়েছিলেন– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা আবু হায়াত ও গোলাম কিবরিয়াকে ফোন দিলে ভালোভাবে জানতে পারবেন।’