পোলট্রি খাতে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে করপোরেট প্রতিষ্ঠান
Published: 18th, January 2025 GMT
পোলট্রি খাতের করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো ফিড, এক দিন বয়সী বাচ্চা, ওষুধ এবং বাজার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে একচেটিয়া আধিপত্য তৈরি করছে; যা প্রান্তিক খামারিদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উৎপাদন খরচ ক্রমাগত বাড়লেও তারা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না।
গতকাল শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। এ খাত রক্ষায় পোলট্রি বোর্ড গঠন করার দাবি করেছেন সংগঠনের সভাপতি সুমন হাওলাদার।
বিপিএ যখন খামারিরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না অভিযোগ তুলেছে, তখন বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি দুইশ টাকা ছাড়িয়ে গেছে। শনিবার ঢাকার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ১৯০ থেকে ২১০ টাকা দরে। সোনালি জাতের মুরগির কেজি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা। কারওয়ান বাজারের মা নুরজাহান চিকেন হাউসের বিক্রয়কর্মী এরশাদ মিয়া সমকালকে বলেন, প্রতিবছর শীতে মুরগির চাহিদা বাড়ে। কারণ এ সময় শহরে-গ্রামে সব জায়গায় নানা ধরনের অনুষ্ঠান থাকে।
বিপিএ বলেছে, করপোরেট গ্রুপগুলোর পরিকল্পিত আধিপত্য বিস্তারের কারণে পোলট্রি খাত গভীর সংকটে পড়েছে। তাদের দৌরাত্ম্য এবং সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দেশের প্রান্তিক খামারিরা খামার চালাতে পারবেন না।
বিপিএ সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, কিছু সরকারি অসাধু কর্মকর্তার দায়িত্বে অবহেলার কারণেও পোলট্রি খাত বিপর্যয়ের মুখে পড়ছে। করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহযোগিতা করার নামে তারা এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, যা প্রান্তিক খামারিদের অস্তিত্বকে বিপন্ন করছে। তিনি বলেন, তাদের উৎপাদন খরচ ক্রমাগত বাড়ছে। তারা পণ্যের ন্যায্য দর পাচ্ছেন না। ফলে খামারিরা তাদের খামার বন্ধ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে ডিম ও মুরগির উৎপাদনে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি হবে।
তিনি বলেন, পোলট্রি খাতকে রক্ষা করতে হলে প্রান্তিক খামারিদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। সেজন্য দ্রুত পোলট্রি বোর্ড গঠন করতে হবে। এছাড়া প্রান্তিক খামারিদের জন্য সহজ শর্তে জামানতবিহীন ঋণ, প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, দামের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং ফিড ও ডিওসির দাম নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্যোগ নেওয়া দরকার। পাশাপাশি অসাধু কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: করপ র ট
এছাড়াও পড়ুন:
স্বপ্ন পূরণে যে পরামর্শ দিলেন শাহরুখ খান
বলিউডের সুপারস্টার শাহরুখ খান। তাকে ‘কিং খান’ও বলা হয়। কিন্তু এই মানুষটি বিশ্বাস করেন, মানুষের দেওয়া কোনো ‘ট্যাগ’ জীবনে খুব একটা কাজে আসে না। জীবনকে তিনি খুবই ছোট মনে করেন, এই ছোট জীবনে নিজের বড় স্বপ্ন পূরণে কি করা উচিত—সেই বিষয়ে একটি বক্তব্যে বিস্তারিত বলেছেন।
শাহরুখ খানের বক্তব্যের সংক্ষিপ্ত অনুবাদ: মানুষ আপনার জীবনে যে ‘ট্যাগ’ই দিক, সেটা জীবনে খুব একটা কাজে আসে না। জীবন খুব ছোট। মানুষ আপনাকে স্বপ্নকে বড় ভাবে কিন্তু আপনার চুপ করে থাকাকে ভাবে দুর্বলতা। মানুষ আপনার সততা দেখে মনে করে আপনি নিষ্পাপ। সত্যিকার অর্থে শুধুমাত্র আপনিই জানেন, আপনি কে।
আমি যখন ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে আসি তখন আমার মাথার ওপর কেউ ছিল না। এক জোড়া ছেঁড়া জুতা, একটি স্যুটকেস, সেকেন্ড হ্যান্ড জামাকাপড় আর বুকভর্তি স্বপ্ন নিয়ে এসেছিলাম। মানুষ আমাকে দেখলে বলতেন, এই ছেলে ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে পারবে! মানুষ আমাকে দেখলে হাসতেন। কিছু মানুষ আমাকে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু আমার স্বপ্ন ছিল প্রধান হিরো হবো। আপনি দেখবেন যে, কোনো মানুষকে আপনার স্বপ্নের কথা বললে, তিনি বলবেন, এটা যথেষ্ট ভালো নয়, স্মার্ট নয়, ট্যালেন্টেড নয়। যখনই আপনি কারও কাছে আপনার স্বপ্নের কথা বলবেন, তার অর্থ আপনি তাদেরকে আপনাকে সংজ্ঞায়িত করার সুযোগ দিয়ে দিচ্ছেন। এটা খুবই বিদপজনক।
আরো পড়ুন:
ষাটের দশকের হেঁশেলের চিত্র ‘খাদ্যবিলাস’
যে রং দেখা যায় না
আপনি আপনার স্বপ্নের দিকে যাত্রা শুরু করুন। এরপর আপনার পাশে অন্য অনেক মানুষ দাঁড়িয়ে যাবে। আপনি যদি আপনার লক্ষ্য থেকে সরে দাঁড়ান, তাহলে আপনি ভুলে যাবেন, আপনার স্বপ্নের কথা। মনে রাখবেন, আপনি কারও কাছ থেকে ‘বৈধ্যতা’ পাওয়ার জিনিস নন। আপনি কারও সেকেন্ড চয়েস নন। আপনি কারও ব্রেকআপ প্ল্যান নন। আপনি আপনার পরিকল্পনার প্রধান চরিত্র।
স্বপ্ন পূরণের পথে যাত্রা শুরু করুন। যে মানুষেরা আপনাকে অপমান করেনে, ছোট করেন তাদের কাছ থেকে দূরে থাকুন। যেখানে আপনার মূল্যায়ন নেই, সেখান থেকে সরে যান। সেই সম্পর্ক থেকে সরে যান, যে সম্পর্ক আপনাকে কেবল ‘ছোট’ অনুভব করায়। এরপরে মানুষ আপনাকে বড় ভাবতে শুরু করবে। এর অর্থ এই নয় যে, আপনি মানুষকে ভয় পাবেন। এর অর্থ হলো, সেই সব মানুষের কাছ থেকে সরে থাকা; যারা আপনাকে মূল্য দেয় না।
নিজেকে গড়ে তোলার জন্য সময় নিন। শিক্ষা অর্জন করুন। নিজেকে নির্মাণ করুন। দয়া করে নিজের সঙ্গে কথা বলুন। অহংকারী হয়ে উঠবেন না, সচেতন হয়ে উঠুন। এর অর্থ এই নয় যে, আমি অন্যদের চেয়ে বড়। এর অর্থ হলো, আপনি অন্যদের চেয়ে ছোট নন।
অনেক সময় আমরা দ্বিধায় পড়ে যাই যে, নম্রতা হলো নিজেকে অবহেলা করা। মনে রাখবেন, আপনি উজ্জ্বলভাবে জ্বলে ওঠার জন্য জন্মেছেন। স্বপ্ন তাড়া করা থামিয়ে দেবেন না। এটি আপনার ডেইলি রুটিনে যুক্ত করে নিন। একদিন সকালে আপনি একজন সুপারস্টারের মতো জেগে উঠবেন আর অন্যদিনগুলোতে আপনি আপনার গল্পে একজন পার্শ্ব চরিত্রের মতো জেগে উঠবেন; এটাও ঠিক আছে। এটা কোনো ব্যাপার নয় যে, আপনি আপনার গল্পের বা ফিল্মের কোন চরিত্রটি অনুভব করছেন। কিন্তু নিজেকে এটা মনে করিয়ে দিন ‘আমি বিক্রির জন্য নই, আমার কোনো ডিসকাউন্ট নেই, আমার কোনো দর কষাকষি নেই।’ আয়নায় শুধু নিজের মুখ দেখবেন না, নিজের ভেতরে থাকা আগুন দেখুন। কারণ ওই আগুনই সত্য।
ঢাকা/লিপি