‘কয়দিন ধইর‍্যা নদীর বাতাস বাড়ছে। প্রচণ্ড শীতের কষ্টে দিন কাটছে আমাগো। ঠান্ডা বাতাসে কেঁপে কেঁপে উঠি মোরা। কোনো কাঁথা-কাফোড় নাই। আমার ছোট মেয়াডারে গ্রামে পাঠাই, সে কোনোদিন ২০০ পায়, কোনোদিন ১০০ পায়। কোনোদিন খাইয়া থাহি, কোনোদিন না খাইয়া। আমরাগো সরকার যদি কিছু সাহায্য সহযোগিতা করত।’

কথাগুলো বলছিলেন শিল্পী বেগম নামের এক বেদেনি। ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কুমার নদ জোড়া ব্রিজের নিচে একটি নৌকায় বসবাস করেন তিনি। স্বামী নেই। চার ছেলেমেয়ে নিয়ে কোনোরকমে দিন কাটছে। শিল্পী বলেন, ‘গ্রামে গ্রামে ঘুরে বেড়াই। দাঁতের পোকটোক ওঠোই, বাতবুত কাটি। কিন্তু আগের মতোন তো এখন ইনকাম নাই। এখন মনে করেন ডাক্তারের চাহিদা বাড়িয়া যাওয়ায় আমাদের সেই দিন নাই। আগে গ্রামে গেলি ৫০০ টাকা আয় হইত। এহনে কোনোরকম চাইয়া চিন্তায় দিন কাটছে।’

সম্প্রতি ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল মহাসড়কের কুমার নদ জোড়া ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নদের পারে ১৪টি বেদে পরিবার বসবাস করছে। সেখানে গাছের সঙ্গে রশি বেঁধে বাঁশ-টিন ও কাঠ ব্যবহার করে ছোট ছোট ঘর করেছেন তারা। যেখানে প্রায় ১০টি বসতঘর করা হয়েছে। ঘরগুলো কিছুটা উঁচু। ঘরে ঢোকার জন্য মইয়ের মতো কাঠের সিঁড়ি ব্যবহার করা হয়েছে। কুমার নদের পারে কয়েকটি নৌকায় বসবাস করছেন বেদে পরিবারের আরও কয়েকজন। প্রচণ্ড ঠান্ডা, হিমেল বাতাস ও কুয়াশার মধ্যেই হাসিমুখে খেলছে শিশুরা। তাদের গায়ে তেমন কোনো শীতের পোশাক নেই। 
বেদেনি সুমি আক্তার বলেন, এই শীতে তাদের শিশুদের পরার মতো জামা-কাপড় নেই। কয়েক দিনের প্রচণ্ড শীতে শিশুদের জ্বর-সর্দি-কাশি, পাতলা পায়খানা বেড়ছে।

বেদেনি বিথী বেগমের ভাষ্য, গ্রামে ঘুরে ঘুরে আগে সাপের খেলা দেখাতেন, মানুষ আনন্দ পেত। এখন আর সেই দিন নাই। অনেক কষ্টে তাদের দিন কাটছে।
বেদে সর্দার কালাম শেখ জানান, কুমার নদ ঘেঁষে প্রায় ৩০ বছর ধরে বসবাস করছেন তারা। ১৪টি পরিবারের মধ্যে পুরুষ ৮ জন, নারী ১২-১৩ জন, শিশু ও কিশোরীসহ ১৬ জন। তাদের শিশুদের জন্মনিবন্ধন করা প্রয়োজন। পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ছিলাধরচর গ্রামের ভোটার তারা। ভোটার হয়েও পৌরসভার কোনো সুবিধা পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, শীতে তারা প্রচণ্ড কষ্ট পান। তাদের শীতবস্ত্র দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
বেদে সর্দারনী শাহীনূর বেগম ও শিল্পী বেগম জানান, পুরুষরা যে কোনো জায়গায় গোসলসহ মলমূত্র ত্যাগ করতে পারে। কিন্তু নারীদের ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব হয় না। কোনো স্যানিটেশনের ব্যবস্থা না থাকায় খোলা জায়গায় অথবা অন্য কোনোভাবে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে হয় নারীদের। শীতবস্ত্র না থাকায় বিভিন্ন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নারী ও শিশুরা। এ অবস্থায় খুবই জরুরি অস্থায়ী দুটি বাথরুম ও একটি টিউবওয়েল। এ ছাড়া তাদের স্থায়ী বসবাসের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানান বেদে পরিবারের সদস্যরা।
ইউএনও মাসুদুর রহমান জানান, বেদে পরিবারগুলোকে সহায়তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

বরিশালে খেলবেন মিলনে, কবে যোগ দেবেন বিপিএলে 

বিপিএলে যোগ দিচ্ছেন নিউজিল্যান্ডের পেসার অ্যাডাম মিলনে। তারকাসমৃদ্ধ ফরচুন বরিশালে খেলবেন তিনি। বরিশাল ফ্র্যাঞ্চাইজি এক বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। 

মিলনে ৩ ফেব্রুয়ারি বরিশালের ক্যাম্পে যোগ দেবেন। ওই দিন বিপিএলের প্রথম কোয়ালিফায়ার মাঠে গড়াবে। যে ম্যাচে মাঠে নামবে বরিশাল। তাদের প্রতিপক্ষ হবে রংপুর রাইডার্স ও চট্টগ্রাম কিংসের মধ্যে একদল। 

সব ঠিক থাকলে মিলনে ওই ম্যাচে বরিশালের জার্সিতে মাঠে নামতে পারেন। এছাড়া বিপিএল ছেড়ে যাওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলরাউন্ডার কাইল মায়ার্স ফিরছেন বরিশালের ক্যাম্পে।  

চলতি বিপিএলে সবার আগে কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত করেছে ফরচুন বরিশাল। ১১ ম্যাচের ৯টিতে জিতেছে তামিম ইকবালের নেতৃত্বাধীন দলটি। 

বরিশাল গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে শনিবার চট্টগ্রাম কিংসের মুখোমুখি হবে। ওই ম্যাচে চট্টগ্রাম জিতলে দুই দল প্রথম কোয়ালিফায়ারে আবারো মুখোমুখি হবে। চট্টগ্রাম হারলে কোয়ালিফায়ার খেলবে রংপুর ও বরিশাল।     

সম্পর্কিত নিবন্ধ