আনোয়ারায় সরিষার বাম্পার ফলনে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। আমন ও বোরো চাষের মধ্যবর্তী মাত্র ৩ মাস সময়ে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষার চাষ করে দারুণ সাফল্য পেয়েছেন কৃষকরা। এবার উপজেলার প্রায় ৫০০ কৃষক ১৭০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করেছেন। প্রতি কানিতে (৪০ শতক) খরচ বাদে ১৫ হাজার টাকার বেশি আয় করার আশা কৃষকের। 
যেখানে ধান চাষে খরচ তোলাই দায়, সেখানে এক রকম বিনা খরচে সরিষা চাষ করে ধানের ক্ষতি পুষিয়ে নিচ্ছেন স্থানীয়রা। তবে সরিষা ভাঙানোর জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক ঘানি থাকলে কৃষকরা আরও বেশি লাভবান হতো বলে দাবি তাদের।
আমন ধান তোলার পর জমিতে মই দিয়ে ফেলা হয় সরিষা বীজ। সাধারণত সরিষা চাষে তেমন কোনো খরচ নেই। এবার আনোয়ারায় কৃষি অফিসের পাশাপাশি সরিষা চাষে সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে এনসিসি ব্যাংক। প্রতিজন কৃষককে দুই কেজি বীজের সঙ্গে এক বস্তা সার, স্প্রে মেশিন ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ দেওয়া হয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে। সেই বীজে ওঠা গাছে দুই মাসের মাথায় ফুল ফুটেছে। চলতি মাসের শেষের দিক থেকে ফসল তোলা শুরু হবে।  
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার পরৈকোড়া, চাতরী, হাইলধর, রায়পুর ইউনিয়নে এবার সর্বোচ্চ পরিমাণে সরিষা চাষ হয়েছে। সারা উপজেলায় প্রায় ৪২ হাজার শতক (১৭০ হেক্টর) জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। এখানে মূলত বারি-১৮ জাতের সরিষা চাষ হয়েছে বেশি। এ জাতটি উচ্চ ফলনশীল, এতে খরচও কম হয়। প্রতি শতক জমিতে ৬ কেজি সরিষা উৎপাদনের আশা করছেন চাষিরা। প্রতি কানি (৪০ শতক) জমিতে খরচ বাদে ১৫ হাজার টাকার বেশি লাভ থাকবে বলে আশা তাদের। সরিষা গাছে ফুল আসায় মাঠগুলো এখন হলুদের রাজ্যে পরিণত হয়েছে। প্রকৃতিকন্যা যেন সেজেছে হলুদ বরণে। 
বাড়তি লাভ হওয়ায় আমন ধান উত্তোলনের পর জমি ফেলে না রেখে সরিষা আবাদে ঝুঁকেছেন কৃষকরা। মাত্র তিন মাসের মধ্যে ফলন ঘরে তোলা যাচ্ছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি সরিষা ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 
হাইলধর এলাকার কৃষক সেকান্দর আলী বলেন, ‘উপজেলা কৃষি অফিস আমাদের সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করেছে। আর বীজ, সার, কৃষি উপকরণসহ সব ধরনের খরচ দিয়েছে এনসিসি ব্যাংক। আমরা এবার একরকম ফ্রিতে চাষাবাদ করেছি। ফলনও হয়েছে ভালো।’ 
এনসিসি ব্যাংক আনোয়ারা শাখা ব্যবস্থাপক এসএম মঈন উদ্দীন আজাদ বলেন, ‘সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচির আওতায় এনসিসি ব্যাংক এবার আনোয়ারায় ৩ শতাধিক কৃষকের মধ্যে সরিষা বীজ, সার ও কৃষি উপকরণ বিতরণ করে। উপজেলা কৃষি অফিস কৃষকদের সরিষা চাষাবাদ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করে। সব মিলিয়ে কৃষকরা মাঠে সোনা ফলিয়েছেন।’
আনোয়ারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী হায়দার জানান, উপজেলার কৃষকদের মধ্যে সরিষা চাষে আগ্রহ বাড়ছে। সামান্য পরিচর্যা আর অল্প খরচেই লাভ মিলছে ভালো। আমন ও বোরো ধান চাষের মাঝামাঝি সময়ে হচ্ছে সরিষার চাষ। এ সরিষা তুলেই চাষিরা রোপণ করবেন বোরো ধানের চারা। সরিষা বিক্রির টাকাতেই উঠে আসবে বোরো চাষের খরচ।
উপজেলার উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বাবলী রায় চৌধুরী বলেন, ‘সরকার সয়াবিন তেলের ওপর নির্ভরতা কমাতে এবং সরিষার চাষ বাড়াতে বিশেষ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ওই পরিকল্পনার আওতায় কৃষকদের সরিষা চাষে উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।’
উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সরওয়ার আলম বলেন, ‘সরিষা একটি বাড়তি ফসল। আমরা বোনাস ফসলও বলতে পারি। লাভ বেশি হওয়ায় প্রতিবছর সরিষার চাষ বাড়ছে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উপজ ল র এনস স

এছাড়াও পড়ুন:

শুক্র-শনিবার খোলা ডিএসসিসির আঞ্চলিক কার্যালয়

ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের প্রয়োজনে সরকারি ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) আঞ্চলিক ও ওয়ার্ড সচিবের কার্যালয় খোলা রাখা হয়েছে।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

ডিএসসিসি থেকে জানানো হয়েছে, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করার কার্যক্রম চলমান থাকায় নাগরিকত্ব সনদ এবং জন্ম-মৃত্যু সনদ সংক্রান্ত সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার ও শনিবার) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও ওয়ার্ড সচিবের কার্যালয় খোলা থাকবে। 

ঢাকা/এএএম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ