মুলতান টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় আছে পাকিস্তান। ‘স্লো এন্ড লো’ উইকেটে দ্বিতীয় দিন শেষেই ২০২ রানের লিড নিয়েছে স্বাগতিকরা। তবে এই খবর ছাপিয়ে মুলতান টেস্ট এখন আলোচনায় পাকিস্তানের মাটিতে একদিনে সবচেয়ে বেশি উইকেট (১৯টি) পতনের রেকর্ডে। আর তাতেই ফিরে আসছে ২২ বছরের পুরোনো এক স্মৃতি। যেখানে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নামটি!

পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০০৩ সালে অনুষ্ঠিত মুলতান টেস্টটি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অত্যন্ত দুঃখের একটা দিন। সেই ম্যাচে স্বাগতিকরা ২৬১ রানের লক্ষ্যে চতুর্থ ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ১৬৪ রানে হারিয়ে ফেলেছিল ৭টি উইকেট । এরপরও মাস্টার ব্যাটসম্যান ইনজামাম-উল-হকের হার না মানা ১৩৮ রানের উপর ভর করে নাটকীয়ভাবে ১ উইকেটে ম্যাচটা জিতে যায়। 

সেই ম্যাচেই একদিনে ১৮ উইকেটের পতন হয়েছিল। যেটি ছিল পাকিস্তানের মাটিতে কোন টেস্টের একদিনে সবচেয়ে বেশি উইকেট পতনের রেকর্ড, যা অক্ষত ছিল ২২ বছর। শনিবার (১৮ জানুয়ারি, ২০২৫) তাতে ছেদ পড়লো। একদিনেই ১৯ উইকেটের পতন হলো। যার মাঝে ৯টি পাকিস্তানের এবং ১০টি ওয়েস্ট ইন্ডিজের।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশ সফরে আসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ, বিজয় দেখলো বিশ্ব

শনিবার ৪ উইকেটে ১৪৩ রান নিয়ে দিন শুরু করা পাকিস্তান অলআউট হয় ২৩০ রানে। ৫১ রান নিয়ে খেলা শুরু করা রিজওয়ান ইনিংস টেনে নেন ৭১ পর্যন্ত। ৫৪ রানে দিন শুরু করা আরেক ব্যাটসম্যান সাউদ শাকিল খেলেন ৮৪ রানের ইনিংস। সফরকারীদের পক্ষে জেডেন সিলস আর জোমেল ওয়ারিকেন নেন ৩টি করে উইকেট।

ব্যাট করতে নেমে ৫১ রানে ৭ উইকেট হারানো ক্যারিবিয়ানরা শেষ চার ব্যাটসম্যানের  কল্যাণে স্কোরবোর্ডে ১৩৭ রান জড়ো করে। দশে নামা ওয়ারিকেন অপরাজিত ছিলেন ৩১ রানে আর সিলসের ব্যাট থেকে আসে ২২ রান। নোমান আলি নেন ৫টি উইকেট, অন্যদিকে আরেক স্পিনার সাজিদ খানের শিকার ৪ উইকেট।

সফরকারীদের ব্যাটিং ব্যার্থতায় ছোট পুঁজি নিয়েও ৯৩ রানের বড় লিড পেয়ে যায় পাকিস্তান। শান মাসুদের দল দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দিন শেষ করে ৩ উইকেটের বিনিময়ে ১০৯ রান করে।  

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট একদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

সরস্বতি পূজা উপলক্ষে গোপালগঞ্জে জমজমাট প্রতিমার হাট

আগামী ২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা। এ উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলার বিভিন্নস্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এখন চলছে প্রতিমার বেচাকেনা। এবার প্রতিমার দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রীয়া থাকলেও কারিগররা বলছেন, জিনিস পত্রের দাম বাড়ায় প্রতিমার দামও কিছুটা বাড়তি।

পঞ্জিকা মতে মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে আশীর্বাদ লাভের আশায় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজা করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। শুধু বাড়িতেই নয় বিদ্যার দেবী সরস্বতী পূজার আয়োজন করা হবে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। দেবীর পায়ে অঞ্জলী দিয়ে অনেক শিশুর শিক্ষাজীবন শুরু হবে।

এ পূজার প্রধান অনুসঙ্গ হলো প্রতিমা। ফলে জেলা শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ী, সদর উপজেলার সাতপাড়, বৌলতলী, কোটালীপাড়া উপজেলার রাধাগঞ্জ, ভাঙ্গারহাট, ঘাঘর বাজারসহ অনেক স্থানে বসেছে প্রতিমার হাট। এসব হাটে আনা এক একটি প্রতিমা প্রকার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে। 

আরো পড়ুন:

লক্ষ্মীপুরে রাসপূর্ণিমা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু

পুটিয়ার কৃষ্ণপুরে চলছে কাত্যায়নী পূজা

এ বছর ক্রেতাদের মধ্যে প্রতিমার দাম নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। ক্রেতাদের অনেকেই বলছেন, দাম সাধ্যের মধ্যে আবার কেউবা বলছেন দাম আগের চেয়ে বেশি নিচ্ছেন বিক্রেতারা। তবে, এর মধ্যেও বিভিন্ন বয়সের মানুষ এসব হাট থেকে কিনে নিচ্ছেন পছন্দমতো প্রতিমা। হাটে শুধু প্রতিমাই নয় বিক্রি হচ্ছে ফুল, মালা, মিষ্টিসহ পূজার অন্যান্য উপকরণও। 

রীতি অনুযায়ী বিদ্যার দেবী সরস্বতি পূজার পাশাপশি বসন্ত পঞ্চমীতে গণেশ, লক্ষ্মী, নবগ্রহ, বই, খাতা, কলম ও বাদ্যযন্ত্রের পূজা করার রীতি প্রচলিত রয়েছে। এর মধ্য দিয়ে শীত ঋতুর অবসান হয়ে বসন্ত ঋতুর আগমন বার্তা ঘটবে।

প্রতিমা কিনতে আসা উত্তম সাহা বলেন, “শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীতে সরস্বতী প্রতিমার হাট বসেছে। এবার বাড়িতে পূজা করাব। ছেলেকে নিয়ে হাটে প্রতিমা কিনতে এসেছি। ঘুরে ফিরে পছন্দমত প্রতিমা কিনেছি। আমি মনে করি, পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে।”

অপর ক্রেতা নারু গোপাল বলেন, “প্রতিবছর এখানে প্রতিমার হাট বসে। এবে এবার প্রতিমার আমদানি একটু কম। তারপরেও দেখে বুঝে দরদাম করে একটি প্রতিমা কিনেছি। এবার আমাদের বাড়িতে সরস্বতী পূজা হবে।”

অপর ক্রেতা পরিমল চন্দ্র ঢালী বলেন, “এক একটি প্রতিমা ২০০ তেকে ১০ হাজার টাকা পযর্ন্ত বিক্রি হচ্ছে। হাটে এসে প্রতিমা দেখছি। পছন্দ হলে কিনে নিয়ে যাব। গত বছরের তুলনায় এবার প্রতিমার দাম একটু বেশি।”

গোপালগঞ্জ শহরের গোহাট সার্বজনীন কালীবাড়ীর হাটে প্রতিমা বিক্রি করতে আসা উত্তম পাল বলেন, “এবার ২০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি। ইতোমধ্যে ১০টি বিক্রি করা হয়েছে। তবে এবার ক্রেতার সংখ্যা একটু কম। আশা করি, বাকি দুই দিনও বেচাকেনা হবে।”

কার্ত্তিক পাল বলেন, “কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ গ্রাম থেকে ৩০টি প্রতিমা নিয়ে এসেছি বিক্রির জন্য। চার থেকে পাঁচটি প্রতিমা বিক্রি করেছি। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, তাতে প্রতিমা বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ প্রতিমা তৈরির অনুসঙ্গের যে দাম তাতে খরচও উঠছে না।”

স্বপন পাল নামে এক বিক্রেতা বলেন, “প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহৃত ছোন, রংসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের দাম প্রতিবছর বেড়েই চলছে। ক্রেতারা যে দাম বলছেন, সেই দামে বিক্রি করলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে। তারপরেও বাব-দাদার পেশা আমরা ধরে রেখেছি।”

ঢাকা/বাদল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ