খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) সাত শিক্ষার্থীর উদ্যোগে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার বিরাট গ্রামের নারীদের জীবনধারা বদলে যাচ্ছে।

ওই সাত শিক্ষার্থী হলেন, নিশাত জাহান নাদিরা, সুমাইয়া আফরিন অর্থি, আরাফাত বিন সোহেল, মো. সৌরভ হোসেন, মশিউর রহমান, জারিন তাসনিম রিথি এবং আব্দুল খালেক সরকার।

জানা গেছে, এ সাত শিক্ষার্থীদের হাত ধরে যাত্রা শুরু করা ‘সমৃদ্ধি’ প্রকল্প পরিবেশবান্ধব পণ্য তৈরির পাশাপাশি নারীদের আর্থিক স্বাবলম্বিতার পথ প্রদর্শক হয়ে উঠেছে। এছাড়া শিশুদের সৃজনশীল বিকাশেও অনন্য ভূমিকা রাখছে।

প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো- পুরোনো কাপড় ও পাট ব্যবহার করে নতুন ও টেকসই পণ্য তৈরি করা। এরই অংশ হিসেবে পুরনো কাপড়কে ফেলে না দিয়ে তা দিয়ে তৈরি করা হয় বাজারের ব্যাগ, নকশীকাঁথা, পাপস, জায়নামাজ ও নকশা করা টুপি। এর পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে বহুমাত্রিক কাজে ব্যবহৃত ব্যাগ ও পরিবেশবান্ধব প্যাকেজিং ব্যাগ। স্থানীয় নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এ পণ্য তৈরিতে দক্ষ করে গড়ে তোলা হয়।

এলাকাবাসীর প্রত্যাশা, এ ধরনের উদ্যোগ সমাজে আরও ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে এবং অন্যদেরও অনুপ্রাণিত করবে। পুরোনো কাপড়ের নতুন গল্পে জীবনের নতুন অধ্যায় রচনা করে, প্রকল্প সমৃদ্ধি সত্যিকার অর্থেই আশার আলো ছড়াচ্ছে।

এ ‘সমৃদ্ধি’ প্রকল্প শুধু পরিবেশবান্ধব পণ্য তৈরিতেই থেমে নেই, এটি নারীদের জীবনমান উন্নয়নে সরাসরি প্রভাব রাখছে। এ গ্রামের শিমলা বেগম আগে দর্জির কাজ করতেন। এখন প্রকল্পের মাধ্যমে পুরোনো কাপড় দিয়ে নতুন পণ্য তৈরি করছেন।

শিমলা বলেন, “আমি আগে জানতাম না, পুরোনো কাপড় দিয়ে এত সুন্দর কিছু তৈরি করা সম্ভব। এখন এ কাজ করে আয় করছি এবং দুই সন্তানের পড়াশোনার খরচ চালাতে পারছি।”

 ‘ক্লাইমেট আইডল’ নামক কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সচেতনতার পাঠ দেওয়া হচ্ছে। গ্রুপ অনুশীলন, সৃজনশীল কার্যক্রম এবং সচেতনতামূলক সেশন শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে সহায়তা করছে।

প্রকল্পের কো-ফাউন্ডাররা বিশ্বাস করেন, এই উদ্যোগ শুধু নারীদের আয়ের পথ তৈরি করার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। ভবিষ্যতে তারা মেধাবী ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি প্রদান, স্কুলে একটি আধুনিক পাঠাগার স্থাপন, এবং শিক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ বিতরণের পরিকল্পনা করছে।

শুরুর গল্প সম্পর্কে কো-ফাউন্ডার নিশাত জাহান নাদিরা বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ছিল এমন কিছু করা, যা নারীদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করবে এবং পরিবেশ সংরক্ষণেও ভূমিকা রাখবে। প্রথমে নিজেদের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে শুরু করেছিলাম। এখন পণ্য বিক্রির লভ্যাংশ দিয়ে প্রকল্পটি পরিচালিত হচ্ছে।”

তিনি আরো বলেন, “আমরা চাই, আমাদের এ উদ্যোগটি অন্যদের জন্য একটি রোল মডেল হোক। শুধু পরিবেশবান্ধব পণ্য নয়, আমরা জীবনের গল্প তৈরি করতে চাই।”

ঢাকা/হাসিব/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রকল প পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

গরমে ত্বকে টোনার ব্যবহার কেন জরুরি ?

গরমের দিনে ঘাম,ধুলা, দূষণে ত্বকে নানা সমস্যা দেখা দেয়। এ সময় বাইরে বের হলে ত্বকে সানস্ক্রিন ব্যবহার খুবই জরুরি। এর পাশাপাশি এই মৌসুমে ত্বকের পরিচর্যায় স্কিন মিস্ট এবং স্কিন টোনার প্রয়োজন। ত্বকে আর্দ্র বজায় রাখতে সাহায্য করে এই দুই উপকরণ। এছাড়াও ত্বক সতেজ রাখতে সাহায্য করে এই দুই পদ্ধতি। বাড়িতেই খুব সহজে আপনি ফেস মিস্ট এবং স্কিন টোনার বানিয়ে নিতে পারবেন। তাহলে কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার করতে হবে না। এই দুই পদ্ধতি র‍্যাশ, চুলকানি, ইনফেকশন,ত্বক লালচে হয়ে যাওয়া, জ্বালাভাব দূর করতে সাহায্য করে। 

যেভাবে বানাবেন ফেস মিস্ট ও টোনার 

গোলাপজল: বাজারে অনেক কোম্পানিরই গোলাপজল কিনতে পাওয়া যায়। বাড়িতে পানির মধ্যে গোলাপের পাঁপড়ি দিয়ে হালকা আঁচে বেশ খানিকক্ষণ ফুটিয়ে নিন। তারপর ঠান্ডা করে পানি ছেঁকে নিয়ে একটি স্প্রে বোতলে ভরে রাখুন। মেকআপ করার আগে হোক, ফেসওয়াশ ব্যবহারের পর, বাড়ির বাইরে থাকলেও তুলোর মধ্যে অল্প করে এই তরল স্প্রে করে নিয়ে ভালভাবে মুখ মুছে নিন। এতে ত্বক থাকবে আর্দ্র, মোলায়েম। ত্বকে আসবে সজীবতা। 

শসা, পুদিনা পাতা: ছোট ছোট টুকরো করে শসা কেটে নিন। পানির মধ্যে পুদিনা পাতা আর এই শসার টুকরো দিয়ে রেখে দিন স্প্রে বোতলে। ফেস মিস্ট হিসেবে দারুণভাবে কাজ করবে এই উপকরণ। অনেকে  ডিটক্স ড্রিঙ্ক হিসেবেও এই পানীয় খেয়ে থাকেন নিয়মিত। গরমের সময় এই পানীয় খেতে পারলে শরীর ঠান্ডা থাকবে এবং শরীরের ভিতরে জমে থাকা যাবতীয় টক্সিন বা দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যাবে। যার ফলে শরীর ভেতর থেকে পরিষ্কার হবে।

গ্রিন টি এবং ক্যামোমাইল টি : এই দু'ধরনের চায়ের টি-ব্যাগ পানিতে ফুটিয়ে নিন। চাইলে গরম পানিতে টি-ব্যাগ ডুবিয়ে রাখতে পারেন। এরপর ওই মিশ্রণ ঠান্ডা করে ছেঁকে স্প্রে বোতলে ভরে নিন। গ্রিন টি এবং ক্যামোমাইল টি থেকে থেকে দুই ধরনের তরল আপনি টোনার এবং ফেস মিস্ট দু'ভাবেই ব্যবহার করতে পারবেন। এই উপকরণ ত্বকের ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করবে । নিয়মিত এই মিশ্রণ ব্যবহারে ত্বক হবে আর্দ্র, মোলায়েম এবং উজ্জ্বল। ত্বকে সজীবতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে এই মিশ্রণ। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ