নবীন উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। শনিবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ১৫ জন নারী ও পুরুষ উদ্যোক্তা অংশ নেন।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে উদ্যোক্তারা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার সংগ্রামের গল্প বলেন। তারা প্রধান উপদেষ্টার কাছে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ চান।

সামাজিক ব্যবসা প্রসারে ২০১০ সালে গঠিত গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্ট থেকে পাওয়া বিনিয়োগ কীভাবে উদ্যোক্তাদের শূন্য থেকে আর্থিক স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে সহযোগিতা করেছে সেসবের বর্ণনা দেন উদ্যোক্তারা। এজন্য প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান তারা।

বৈঠকে অংশ নেওয়া উদ্যোক্তাদের অধিকাংশই গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্ট ও গ্রামীণ ট্রাস্ট থেকে বিনিয়োগ নিয়ে ব্যবসা করছেন। কেউ কেউ ষষ্ঠ ও পঞ্চমবারের মতোও বিনিয়োগ পেয়েছেন।

উদ্যোক্তাদের সংগ্রামের গল্প শুনে উচ্ছ্বসিত হন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি তাদের কাছে উদ্যোক্তাদের জন্য আরও কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে তা জানতে চান।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের জীবনের গল্পগুলো ভীষণ অনুপ্রেরণাদায়ক। আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে পেরে আমি খুব খুশি হলাম। আপনারা অনেক ভালো ভালো কথা বলেছেন, সুনাম করেছেন। আমাদেরকে পরামর্শও দিন। আরও কী কী হলে উদ্যোক্তাদের জন্য ভালো হয় তা আমাদের বলুন।’

বৈঠকে উদ্যোক্তারা গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্ট ও গ্রামীণ ট্রাস্টের সামাজিক ব্যবসা প্রসারে নবীন উদ্যোক্তাদের জন্য গৃহীত কর্মসূচির প্রচার-প্রচারণা বাড়ানোর পরামর্শ দেন। তারা বলেন, ‘বেশিরভাগ লোকই এই উদ্যোগগুলো সম্পর্কে জানে না। প্রচার-প্রচারণা বাড়ালে অনেক দরিদ্র লোক উপকৃত হবেন।’

উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগের পাশাপাশি উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্যও প্রধান উপদেষ্টার প্রতি তারা আহ্বান জানান।

উদ্যোক্তারা বলেন, ‘দক্ষতার অভাবে অনেকেই তাদের ব্যবসা বড় করতে পারেন না। যদি উপযুক্ত কর্মশালার আয়োজন করা যায় তাহলে জেলায় জেলায় আরও দক্ষ ও সফল উদ্যোক্তা গড়ে উঠবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের আলোচনা ও পরামর্শ থেকে আজ অনেক কিছু জানতে পারলাম। আমরা দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাই। নবীন উদ্যোক্তারা যেন বিনিয়োগ নিয়ে বিপদে না পড়েন, নিরাপদে যেন কাজ করতে পারেন সেটা নিশ্চিত করতে চাই। আজকের আলোচনা থেকে ভবিষ্যৎ পথচলা কেমন হতে পারে সেসব আইডিয়া পেলাম। আপনারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখবেন।’

বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি–বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, গ্রামীণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসমিনা রহমান, গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল হাসান।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র ম ণ ট ল কম ট র স ট র ব যবস র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই ফাউন্ডেশনের অর্থ আত্মসাৎ, নাগরিক কমিটির নেত্রী কারাগারে

জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের পরিবার ও আহতদের সহায়তা করার লক্ষ্যে গঠন করা জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অর্থ আত্মসাতের মামলায় জাতীয় নাগরিক কমিটির ফতুল্লা থানা কমিটির সদস্য দিলশাদ আফরিন পিংকিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইসরাত জেনিফার জেরিনের আদালত শুনানি শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মোহাম্মদ কামরুল হোসেন তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

দিলশাদ আফরিন পিংকির পক্ষে তার আইনজীবী ঢাকা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হোসেন আলী খান হাসান জামিন চেয়ে আবেদন করেন।

শুনানিতে তিনি বলেন, আসামি সম্পূর্ণ নির্দোষ। মামলার ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানেন না। তাকে হয়রানি করার জন্য আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের যে কথা বলা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। তার জামিন প্রার্থনা করছি।

শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন রমনা মডেল থানার আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের উপ-পরিদর্শক জিন্নাত হোসেন।

দিলশাদ আফরিন পিংকিকে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাতে রমনা থানাধীন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

প্রতারণা করে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ফাউন্ডেশনের লিগ্যার অফিসার ফাতেমা আফরিন পায়েল রমনা মডেল থানায় মামলা করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জুলাই বিপ্লবে আহত হিসেবে ক্ষতিপূরণ পেতে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে আবেদন করেন বুলবুল সিকদার ও রকিবুল সিকদার। তাদের কাগজপত্র দেখে সন্দেহ হওয়ায় জুলাই ফাউন্ডেশনে তথ্য দেওয়ার জন্য আসতে বলা হয়। ২১ মার্চ তারা ফাউন্ডেশনে উপস্থিত হলে জিজ্ঞাসাবাদে জানান, তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত না হওয়া সত্ত্বেও দিলশাদ আফরিন ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র সত্যায়ন করার ব্যবস্থা করেন। পরবর্তী সময়ে গুরুতর আহতদের তালিকায় রকিবুলের নাম দিতে ৫০ হাজার এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে আরো ৩০ হাজার টাকা নেন। জুলাই বিপ্লবে শহীদ আহসান কবির শরিফের স্ত্রী হাদিসা আক্তার হ্যাপিকে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে আড়াই লাখ টাকা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ৫০ হাজার টাকা নিয়েও আত্মসাৎ করেন। এছাড়া, আরো কয়েক জনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করে।

গত ৮ এপ্রিল জাতীয় নাগরিক কমিটির ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব আখতার হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে দিলশাদ আফরিন পিংকিকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়।

ঢাকা/মামুন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ