ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসুর ‘লাল সন্ত্রাস’ ঘোষণার প্রতিবাদ এবং তার গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। পরে মিছিলটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকের সামনে সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।

মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘লাল সন্ত্রাসের ঠিকানা, বাংলাদেশে হবে না’, ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘লাল সন্ত্রাসকে গ্রেফতার করো, করতে হবে করতে হবে’, ‘২৪ এর হাতিয়ার, গর্জে উঠো আরেকবার’, ‘২৪ এর রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘শাহবাগীদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘শাহবাগীদের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, মেঘমল্লার বসু ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য নাকি লাল সন্ত্রাসের প্রয়োজন হয়। অথচ এ লাল সন্ত্রাসরা জুলাই আন্দোলনে ছাত্রলীগের সঙ্গে অনুপ্রবেশ করে গণহত্যা চালিয়েছিল। এটা তার কথার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়। তার কথার মধ্য দিয়ে প্রকাশ পায়, ৫ আগস্টের পর দেশে যে কয়টা মব সংগঠিত হয়েছে, আমাদের উকিল ভাইকে চট্টগ্রামে হত্যা করা হয়েছে, এসবের পিছনে লাল সন্ত্রাসের হাত রয়েছে।

তারা আরো বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতি-ধর্মের মানুষ বসবাস করে। আমরা ধর্মের ভিত্তিতে কখনোই কাওকে আলাদা করতে চাই না। এ দেশে আমাদের সবার প্রথম পরিচয় আমরা মানুষ, তারপর দ্বিতীয় পরিচয় আমরা বাংলাদেশী। আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামকে আলাদা করে আমাদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিতে চায়। আমাদের আদিবাসী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বা ক্ষুদ্র জাতিসত্তা বলতে কিছু নেই। আমরা সবাই এ দেশের মানুষ।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ছাত্র ইউনিয়নকে আমরা শাহবাগী বলে চিনি। এই সংগঠনের সভাপতি মেঘমল্লার সরাসরি ‘রেড টেরর’ বা লাল সন্ত্রাসের উল্লেখ করেছেন। এর মানে হলো গোপনে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হত্যা করা। তার এই কথায় প্রমাণিত হয়, ২০১২ সালের ৪ জানুয়ারি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই মেধাবী শিক্ষার্থী গুম হওয়ার পিছনে তাদের হাত রয়েছে।

শুধু তাই নয়, ২০০৯ সাল থেকে বিরোধীদলীয় নেতারা যত হত্যা এবং গুমের শিকার হয়েছে, তার দায়ভার এ ছাত্র ইউনিয়নকে নিতে হবে। তাদের বলতে চাই ২৪ আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে বাংলাদেশের সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ একসঙ্গে বাঁচতে চাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই মেঘমল্লার বসুর বিরুদ্ধে সরকারের কাছে যে দাবি জানিয়েছে আমরা তার সঙ্গে একমত। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করতে হবে।

‘লাল সন্ত্রাসই একমাত্র পথ বা উপায়’ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মেঘমল্লার বসু। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে এক ইংরেজি বার্তায় তিনি এ ঘোষণা দেন।

ঢাকা/তানিম/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত র ইউন

এছাড়াও পড়ুন:

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ সমাবেশে ঘোষণাপত্র পাঠ

ফিলিস্তিনে চলমান ইসরায়েলি বর্বরতা ও গণহত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচির আওতায় সংহতি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেল সোয়া ৩টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। এটি বিকেল ৪টার দিকে দোয়া মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয়।

সমাবেশে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান একটি ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।

আরো পড়ুন:

লাল-সবুজের জার্সিতে খেলবেন সামিত, জানিয়ে দিলেন আনুষ্ঠানিক সম্মতি

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল: বেনাপোল বন্দর থেকে ফেরত গেছে ৪ ট্রাক

বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা আবদুল মালেক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্বে সমাবেশে বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, হেফাজতে ইসলাম, আহলে হাদীস, হাইয়াতুল উলইয়া, বেফাকুল মাদারিস, দারুন্নাজাত মাদরাসা, খেলাফত মজলিশ, খেলাফত আন্দোলনের নেতারা অংশ নেন। 

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মিজানুর রহমান আজহারী, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম-ওলামারা।

ফিলিস্তিনে চলমান ইসরায়েলি বর্বরতা ও গণহত্যার প্রতিবাদে শনিবার (১২ এপ্রিল) ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে লাখ লাখ মানুষ। ফিলিস্তিনের পতাকা ও ফিলিস্তিনের মুক্তির স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছে গোটা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। এ যেন এক টুকরো ফিলিস্তিন! নারী-পুরুষ-শিশুদের পদচারণায় সোহরাওয়াদী উদ্যানসহ এর আশপাশের এলাকায় তিল পরিমাণ ঠাঁই নেই। 

সকাল থেকে রাজধানীর শনিরআখড়া-যাত্রবাড়ী রুট, টঙ্গী, উত্তরা, কেরাণীগঞ্জ, গাবতলী, শ্যামলী দিয়ে বাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে এবং মাইলের পর মাইল পায়ে হেঁটে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় আসতে শুরু করেন লাখো মানুষ। দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর মোড় থেকে নারী-পুরুষের স্রোত যাচ্ছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে।

মিছিলের সম্মুখে কাপড়ে মোড়ানো কয়েকটি লাশের প্রতিকৃতি নিয়ে তারা সোহরাওয়ার্দীর অভিমুখে যাচ্ছিলেন। সে সময় তাদের ‘তুমি কে আমি কে, ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন; ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’ স্লোগান দিতে দেখা গেছে।

এছাড়া ইসরায়েলের পণ্য, বয়কট বয়কট; ট্রাম্পের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে; ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও, ইসরাইলের আস্তানা; নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবরসহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে। রাজধানীর শাহবাগে যেন জনসমুদ্র। স্লোগানে স্লোগানে প্রকম্পিত গোটা শাহবাগ।

ঢাকা/রায়হান/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ