‘লাল সন্ত্রাস’ ঘোষণার প্রতিবাদে ইবিতে বিক্ষোভ
Published: 18th, January 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসুর ‘লাল সন্ত্রাস’ ঘোষণার প্রতিবাদ এবং তার গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন তারা। পরে মিছিলটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকের সামনে সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘লাল সন্ত্রাসের ঠিকানা, বাংলাদেশে হবে না’, ‘সন্ত্রাসীদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘লাল সন্ত্রাসকে গ্রেফতার করো, করতে হবে করতে হবে’, ‘২৪ এর হাতিয়ার, গর্জে উঠো আরেকবার’, ‘২৪ এর রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘শাহবাগীদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘শাহবাগীদের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, মেঘমল্লার বসু ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য নাকি লাল সন্ত্রাসের প্রয়োজন হয়। অথচ এ লাল সন্ত্রাসরা জুলাই আন্দোলনে ছাত্রলীগের সঙ্গে অনুপ্রবেশ করে গণহত্যা চালিয়েছিল। এটা তার কথার মাধ্যমে প্রমাণিত হয়। তার কথার মধ্য দিয়ে প্রকাশ পায়, ৫ আগস্টের পর দেশে যে কয়টা মব সংগঠিত হয়েছে, আমাদের উকিল ভাইকে চট্টগ্রামে হত্যা করা হয়েছে, এসবের পিছনে লাল সন্ত্রাসের হাত রয়েছে।
তারা আরো বলেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতি-ধর্মের মানুষ বসবাস করে। আমরা ধর্মের ভিত্তিতে কখনোই কাওকে আলাদা করতে চাই না। এ দেশে আমাদের সবার প্রথম পরিচয় আমরা মানুষ, তারপর দ্বিতীয় পরিচয় আমরা বাংলাদেশী। আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামকে আলাদা করে আমাদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিতে চায়। আমাদের আদিবাসী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী বা ক্ষুদ্র জাতিসত্তা বলতে কিছু নেই। আমরা সবাই এ দেশের মানুষ।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ছাত্র ইউনিয়নকে আমরা শাহবাগী বলে চিনি। এই সংগঠনের সভাপতি মেঘমল্লার সরাসরি ‘রেড টেরর’ বা লাল সন্ত্রাসের উল্লেখ করেছেন। এর মানে হলো গোপনে দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হত্যা করা। তার এই কথায় প্রমাণিত হয়, ২০১২ সালের ৪ জানুয়ারি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই মেধাবী শিক্ষার্থী গুম হওয়ার পিছনে তাদের হাত রয়েছে।
শুধু তাই নয়, ২০০৯ সাল থেকে বিরোধীদলীয় নেতারা যত হত্যা এবং গুমের শিকার হয়েছে, তার দায়ভার এ ছাত্র ইউনিয়নকে নিতে হবে। তাদের বলতে চাই ২৪ আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটিয়ে বাংলাদেশের সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ একসঙ্গে বাঁচতে চাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই মেঘমল্লার বসুর বিরুদ্ধে সরকারের কাছে যে দাবি জানিয়েছে আমরা তার সঙ্গে একমত। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করতে হবে।
‘লাল সন্ত্রাসই একমাত্র পথ বা উপায়’ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মেঘমল্লার বসু। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে এক ইংরেজি বার্তায় তিনি এ ঘোষণা দেন।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত র ইউন
এছাড়াও পড়ুন:
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপের ইচ্ছার কথা জানালেন জেলেনস্কি
ইউক্রেনের সুমি ও রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে নতুন সাফল্যের কথা জানিয়েছে মস্কো। অপরদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে সৌদি আরবে আলোচনায় বসার আগে মার্কিন প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি গঠনমূলক সংলাপ করতে সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মঙ্গলবার লোহিত সাগরের তীরবর্তী শহর জেদ্দায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদল বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। এই বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যুদ্ধবিরতি এবং শান্তি চুক্তির জন্য একটি ‘কাঠামো’ নিশ্চিত করার জন্য জোর চেষ্টা চালাবেন।
আসন্ন আলোচনা সত্ত্বেও রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক ব্রিফিংয়ে জানিয়েছে, কুরস্ক সীমান্তের কাছে সুমি এলাকায় ছোট গ্রাম নোভেনকে ‘মুক্ত’ করেছে তাদের বাহিনী। এছাড়া কুরস্কের লেবেদেভকা, মালায়া লোকনিয়া, চেরকাসকোয়ে পোরেচনয়ে এবং কোসিৎসা গ্রাম পুনরুদ্ধারের ঘোষণাও দিয়েছে মস্কো।
২০২২ সালে সর্বাত্মক আক্রমণের প্রথম দিকে ইউক্রেনের সুমি অঞ্চলের কিছু অংশ দখল করে নেয় রাশিয়া। কিন্তু এরপর থেকে সেখানে আর কোনো অঞ্চল দখল করেনি রুশ সেনারা।
রাশিয়ার নোভেনকে দখলের দাবির বিষয়ে কিয়েভ এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। বিশ্লেষকদের মতে, গ্রামটি রুশ সেনাদের ইউক্রেনের প্রধান সরবরাহ পথ বন্ধ করতে সহায়তা করতে পারে।
গত রোবার এক ব্রিফিংয়ে জেলেনস্কি বলেছেন, ‘কেবল শক্তিশালী ফ্রন্ট-লাইনের ওপর ভিত্তি করে কূটনীতি শক্তিশালী হবে। আর আমরা ইউক্রেনের ফ্রন্টলাইনের চাহিদা পূরণের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।"
কে কার সঙ্গে দেখা করছেযুদ্ধের অবসান ঘটাতে কিয়েভকে আলোচনায় বাধ্য করার চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এমন এক আলোচনায় জেলেনস্কির সঙ্গে হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রকাশ্য বিবাদ হয়। ফলশ্রুতিতে ইউক্রেনের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি, স্যাটেলাইটের তথ্যে প্রবেশাধিকার ও দেশটিতে সাহায্য বন্ধ করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের মতে, একটি খনিজ চুক্তি প্রত্যাখ্যান করে ট্রাম্পের ক্রোধের শিকার হয়েছেন তিনি। ওই চুক্তির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা থাকা উচিত বলে মনে করেন তিনি। তবে ট্রাম্প প্রশাসন তা মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। পরিবর্তে ইউরোপকে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির জন্য সাহায্য বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছে।
ইউরোপীয় নেতারা রুশ হুমকির বিরুদ্ধে ইউক্রেনকে সমর্থন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এরই মধ্যে প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে সম্মত হয়েছেন। ওয়াশিংটন ইউক্রেনের ন্যাটো উচ্চাকাঙ্ক্ষার ওপরও ঠান্ডা পানি ঢেলে দিয়েছে।
গত শনিবার জেলেনস্কি নিশ্চিত করেছিলেন যে, তিনি সৌদি আরবে যাবেন এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠকের পর ইউক্রেনের কূটনৈতিক ও সামরিক প্রতিনিধিরা মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠক করবেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ১০ থেকে ১২ মার্চের মধ্যে ইউক্রেনীয় প্রতিপক্ষের সঙ্গে আলোচনার জন্য সৌদি আরব সফর করবেন।