আগামী জাতীয় নির্বাচনে কোনো ঋণ খেলাপিকে মনোনয়ন না দেওয়ার বিষয়ে বিএনপি সতর্ক থাকবে বলে অঙ্গীকার করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

‘‘আমরা জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, খেলাপিরা মনোনয়ন যেন না পান তা নিশ্চিত করতে আমরা সচেষ্ট থাকব। এ বিষয়ে অত্যন্ত সতর্ক থাকব’’, বলেন তিনি।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত ‘শ্বেতপত্র ও অতঃপর: অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, সংস্কার ও জাতীয় বাজেট’ শীর্ষক সিম্পোজিয়ামে তিনি বক্তব্য রাখেন।

আরো পড়ুন:

তরুণ প্রজন্মকে পড়ালেখায় বেশি গুরুত্ব দিতে হবে: মির্জা ফখরুল 

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ‘অনেকটা বেটার’: ফখরুল

প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহানের এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল এই অঙ্গীকার করেন। রেহমান সোবহান জানতে চান, ঋণ খেলাপিদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে বিরত রাখা এবং অর্থ ও পেশীশক্তির প্রভাব কমানোর প্রস্তাব বিএনপি সমর্থন করবে কি না।

ফখরুল বলেন, ‘‘অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে দল ভবিষ্যতের জন্য কর্মপন্থা নির্ধারণ করছে।’’ তবে তিনি স্বীকার করেন, রাতারাতি সবকিছু পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।

তিনি দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা প্রাতিষ্ঠানিক মীমাংসায় বিশ্বাস করি। এখন আমাদের প্রয়োজন প্রতিষ্ঠানগুলোকে সঠিকভাবে পুনর্গঠন করা। যথেষ্ট হয়েছে। আসুন আমরা সত্যিকার অর্থে আমাদের স্বপ্ন ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী বাংলাদেশকে গড়ে তুলি।’’

‘ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দল’ আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হবে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘‘এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে দেশের জনগণ। একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে রাজি নই।’’

বিএনপি কেন দ্রুত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবি জানাচ্ছে, এমন প্রশ্নে ফখরুল বলেন, ‘‘আমাদের বিশ্বাস, কেবল একটি নির্বাচিত সরকারই দেশের সমস্যাগুলোর কার্যকর সমাধান দিতে পারে। যেহেতু নির্বাচিত সরকার জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসে, তাই জনগণের সমস্যা সমাধানে তাদের সক্ষমতা থাকে।’’

রোহিঙ্গা সংকট প্রসঙ্গে ফখরুল অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকার সংকট সমাধানে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়নি। তিনি বলেন, ‘‘চীন ও ভারতের সঙ্গে আলোচনাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া তাদের (আওয়ামী লীগ) অগ্রাধিকারে ছিল না।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘বিএনপি যদি ক্ষমতায় ফেরে, তবে অতীতের মত রোহিঙ্গা সংকটের যথাযথ সমাধান খুঁজে বের করতে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে।’’

ঢাকা/নাজমুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ব এনপ জনগণ র সরক র ব এনপ ফখর ল

এছাড়াও পড়ুন:

ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন সম্ভব, দেরি হলে সংকট বাড়বে

অনির্বাচিত সরকারের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত হলে সংকট আরও ঘনীভূত হবে বলে সতর্ক করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতারা। আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে এক বৈঠক শেষে তাঁরা এই সতর্কবার্তা দেন।

বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ (টুকু) ও বরকতউল্লা বুলু উপস্থিত ছিলেন। অপর দিকে সিপিবির সভাপতি শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন (প্রিন্স), সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ ও সহসাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে দ্রুত ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন সম্ভব বলে নেতারা অভিমত দেন। সংস্কার নিয়ে আলোচনায় উভয় পক্ষের নেতারা বলেছেন, যেসব বিষয়ে দলগুলোর ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, সেসব বিষয়ে সংস্কার করে ফেলা যায়। কারণ, সংস্কার চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়; এটা জনগণের সিদ্ধান্তের বিষয়। সরকার নির্বাচন নিয়ে অহেতুক কালক্ষেপণ করলে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতাদের মধ্যে বৈঠক করে প্রয়োজনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করা যেতে পারে বলে মনে করছেন এই জোটের নেতারা।

বৈঠক শেষে সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমরা ও আমাদের জোট বহু আগে থেকেই বলছি যে বাংলাদেশে জরুরিভাবে একটা নির্বাচিত সরকার দরকার। গণ-অভ্যুত্থানের পর ওই দিনই আমরা বিবৃতিতে বলেছি, পূর্ণ গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই অব্যাহত রাখতে হবে। এরপর অনেক দিন ধরে আমরা বলে আসছি যে ডিসেম্বরের আগেই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা সংস্কার করা দরকার, তা করে নির্বাচন করা সম্ভব। সুতরাং এর জন্য নতুন করে আজকে কোনো অজুহাতের দরকার নেই।’

ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের বিএনপির দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে রুহিন হোসেন আরও বলেন, ‘আমরাও মনে করি, বাংলাদেশে ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন দেওয়া সম্ভব। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত হবে তারা নির্বাচন কমিশনকে বলে দিক তারা অক্টোবর, নভেম্বর বা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে যেন নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে পারে। তারা যেহেতু স্বাধীন কমিশন, তারাই ঘোষণা করবে এবং এর মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক যাত্রা শুরু করতে পারব।’

বিএনপি নেতাদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়েছে জানিয়ে রুহিন হোসেন বলেন, ‘যখন আনুষ্ঠানিকভাবে বৈঠক করব, তখন আমাদের একটা জোট আছে, জোটে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে ওই বৈঠক করব, সেখানে জোটের অন্য নেতারাও থাকবেন। আজকে এখানে এক-দুজন নেতৃবৃন্দ, তাঁদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়, তাঁদের আমন্ত্রণে আমরা এখানে অনানুষ্ঠানিকভাবে চা খেতে এসেছি।’

বৈঠক শেষে সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম সাংবাদিকদের বলেন, যারা নির্বাচন করে সংস্কার করবে, তারাই আসল সংস্কারের পক্ষে আর যারা নির্বাচন ছাড়া সংস্কার চায় একটা ডিক্রি জারি করে, সেটা বালুতে গাঁথুনি। শক্ত ভিত্তির ওপর করতে হলে জনগণের অংশগ্রহণ লাগবে, জনগণের সমর্থন লাগবে এবং সেটা করতে হলে একটা ইলেকশন অপরিহার্য। তবে নির্বাচনের নামে প্রহসন তাঁরা মেনে নেবেন না।

এ ছাড়া দেশে উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে বলে বৈঠকে উদ্বেগ জানান নেতারা। এই সংকট মোকাবিলার উপায় নিয়ে সেখানে আলোচনা হয়। বৈঠকে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বশীল আচরণ, এক দলের সঙ্গে অপর দলের আলোচনা, বিভিন্ন বিষয় পরস্পরের আলোচনা এবং দেখা–সাক্ষাতের মধ্য দিয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এগিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয় বলে সংশ্লিষ্ট নেতারা জানিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কাতারে ড. ইউনূস: পৃথিবীর জন্য আশার বাতিঘর হতে চায় বাংলাদেশ
  • পৃথিবীর জন্য আশার বাতিঘর হতে চায় বাংলাদেশ: প্রধান উপদেষ্টা
  • ২ কিলোমিটার সড়ক, ২০ হাজার শ্রমিকের দুর্ভোগ 
  • আমরা পৃথিবীর জন্য আশার এক বাতিঘর হিসেবে দাঁড়াতে চাই: ড. ইউনূস
  • শেষ ভাষণে ফিলিস্তিনিদের নিয়ে যা বলেছিলেন পোপ ফ্রান্সিস
  • রন হক সিকদারের ১০০ একর জমি জব্দের আদেশ 
  • রন হক সিকদারের নামে থাকা ১০০ একর জমি জব্দের আদেশ
  • আমরা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী: ধর্ম উপদেষ্টা
  • মিয়ানমারে যে কারণে চীনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ বাড়ছে
  • ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন সম্ভব, দেরি হলে সংকট বাড়বে