লাল সন্ত্রাসের ডাক দেওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসুর গ্রেপ্তার দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এ গ্রেপ্তারের দাবিতে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাবির ২০২১-২২  সেশনের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের। তিনি বলেন, “ঢাবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেঘমল্লার বসুর গতকালের ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বিরোধী মত দমনে লাল সন্ত্রাসী ও সহিংসতার হুমকি দেওয়া হয়। উক্ত পোস্টে তিনি সাল সন্তান ও রাজনৈতিক সহিংসতার প্রবর্তনের কথা বলেছেন, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।”

তিনি আরো বলেন, “এ পোস্টের প্রতিবাদে এবং মেঘমল্লার বসুর গ্রেপ্তারের দাবিতে গতরাতেই ঢাবি শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। আমরা আশঙ্কা করছি, ডাকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্যাম্পাসে সংঘাত সৃষ্টি করে নির্বাচন প্রক্রিয়া বানচান করার একটি চক্রান্ত করা হচ্ছে, যা মেঘমল্লার বসুর পোস্টে সুষ্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়। যেসব শিক্ষার্থী গণতান্ত্রিক উপায়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে, তারা শঙ্কা অনুভব করছে। তাদের দমন করতে অতীতের ন্যায় পুনরায় এ সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী লাল সন্ত্রাসের আশ্রয় নিতে যাচ্ছে বলে ধারণা করছে।”

এ বি জুবায়ের বলেন, “আমরা ইতিহাস থেকে জেনেছি, এই লাল সন্ত্রাসীরা কীভাবে ভিন্নমতের মানুষকে বীভৎসভাবে খুন করেছে। প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি, শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে অনতিবিলম্বে লাল সন্ত্রাসের উস্কানিদাতা ও পর্দার আড়ালের কুশীলবদের অনতিবিলম্বে আইনের আওতায় নিয়ে আসুন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জীবন এবং নিরাপত্তার স্বার্থে এই ধয়ানর সহিংসতার হুমকিদাতা মেঘমল্লার বসুকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হোক এবং আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

এ বি জুবায়ের আরো বলেন, “তাদের মূল উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকারকে ভুলণ্ঠিত করা। কারণ তারা জানে শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক প্লাটফর্ম ডাকসু নির্বাচন হলে তাদের পূর্বের ন্যায় অপতৎপরতা চালানোর সুযোগ কমে যাবে। সেজন্য তারা ডাকসু নির্বাচনকেও বানচাল করে দিতে চায়। অতীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়া হলেই সন্ত্রাসবাদী দিয়ে সাংগঠনগুলোর হলে হলে দখলদারিত্ব ও ক্যাম্পাস জুড়ে সন্ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি হতো। এজনা মেঘমল্লারের রেড টেররের যোষণাকে আমরা বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে না দেখে তাদের নীলনকশা বাস্তবায়নের একটা প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবেই বিবেচনা করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে জোবায়ের কমিউনিস্ট রাজনীতির অন্যতম আলোচিত মাওবাদী নেতা সিরাজ সিকদারের গ্রাফিতি মুছে দেওয়ার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি সশস্ত্র সংগ্রামে বিশ্বাসী একটি মাওবাদী পার্টি। রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলের পথ হিসেবে পার্লামেন্টারি পথ বর্জন করে গ্রাম ভিত্তিক দীর্ঘস্থায়ী গণযুদ্ধের রাজনীতি গ্রহণ ও গোপন পার্টি গঠন করেন। বাংলাদেশের মধ্যে এ পথটা পরিভ্যাজ্য। গোপন ও সশস্ত্র বিদ্রোহ করে গুটি কয়েক মানুষের মাওবাদী মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা করলে সাধারণ জনগণের সঙ্গে বেঈমানী হবে। লাইব্রেরির দেয়ালে সিরাজ শিকদারের গ্রাফিতি একই রকম চেতনার অবতারণা করতে পারে এবং কালকের মেঘমল্লারের লাল সন্ত্রাসের ভ্যালিডিটি সিরাজ শিকদারকে কেন্দ্র করেই আবির্ভূত হতে পারে; এ ধারণায় প্রতিবাদী ছাত্রজনতা তার গ্রাফিতি মুছে দেন।”

সংবাদ সম্মেলন শেষে শাহবাগ থানায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তারা লাল সন্ত্রাসের হুমকিদাতা মেঘমল্লার বসুর বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার ঘোষণা দেওয়া হয়।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, ২০২৩-২৪ সেশনের ফারহান আহমদ তাওসীফ, ২০২২-২৩ সেশনের শিবলী নোমান ও মইনুল মুরসালিন, ২০২১-২২ সেশনের আবিদ হাসান রাফি ও আবদুর রহমান আল ফাহাদ প্রমুখ।
 

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নকল করায় নোবিপ্রবির ৪ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

সেমিস্টার পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) চার শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে।

সোমবার (৩ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন, ফার্মেসি  বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শ্রাবণ দাস, ফার্মেসি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মাহমুদুল হাসান রিয়াদ, বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি (বিএমবি) বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের গোলাম সারওয়ার এবং কৃষি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মো. আশিক ইকবাল আদর।

রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ তামজিদ হোসাইন চৌধুরী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে গত বছর ১৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃংখলা বোর্ডের সভার সিদ্ধান্তক্রমে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিভিন্ন শিক্ষাবর্ষের টার্ম পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় চার শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, ফার্মেসি  বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শ্রাবণ দাসকে নকলের উপাদান সঙ্গে রাখা ও তা থেকে দেখে লেখার কারণে সংশ্লিষ্ট ওই পত্রের পরীক্ষা বাতিলসহ ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। একই বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মাহমুদুল হাসান রিয়াদকে একই অপরাধে সেমিস্টারের ওই পরীক্ষা বাতিলসহ ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

এছাড়া কোর্সের পরীক্ষা চলাকালে মোবাইল ফোন ও নকলের উপাদান সঙ্গে রাখা এবং তা থেকে দেখে লেখায় বিএমবি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের গোলাম সারওয়ারকে সংশ্লিষ্ট সেমিস্টারের ওই পত্রের পরীক্ষা বাতিলসহ এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। একই অপরাদে কৃষি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মো, আশিক ইকবাল আদরকে ওই পত্রের পরীক্ষা বাতিলসহ ছয় মাসের জন্য বহিস্কার করা হয়েছে।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নকল করায় নোবিপ্রবির ৪ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
  • অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেটের ব্রাজিল হলে ভারত কী? 
  • মাদক মামলায় খালাস পেলেন ডা. ঈশিতা
  • ঘুরেফিরে তারাই খেলে সেমিতে