আমাদের একটা লাশ পড়লে ওপারের দুইটা লাশ ফেলতে হবে: নুর
Published: 18th, January 2025 GMT
বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ এক ইঞ্চি জমিও ভারতকে দখল করতে দেবে না বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। তিনি বলেছেন, আজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে ভারতীয় বিএসএফের সঙ্গে গোলাগুলি হয়েছে। আমাদের বিভিন্ন সীমান্তে তারা কাটাতাঁরের বেড়া দিয়ে কিছু জমি দখলের পাঁয়তারা করছে। কারণ শেখ হাসিনা সরকার অনেক ক্ষেত্রে তাদের সুযোগ করে দিয়েছিল। কিন্তু আমাদের পরিষ্কার বার্তা, আমরা বেঁচে থাকতে সেই সুযোগ তারা পাবে না।
শনিবার দুপুরে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের স্মরণে এবং বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে রংপুরের গঙ্গাচড়ায় মাল্টিপারপাস হলরুমে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
নুর বলেন, ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে বলে দিতে চাই, আপনারা শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর যে খেলা শুরু করেছেন, সেটা বন্ধ করুন। অন্যথায় আপনাদের জন্য সেটা শুভ হবে না। সরকারকে অনুরোধ জানাবো, সীমান্তবর্তী মানুষকে সামরিক ট্রেনিং দিলে প্রয়োজনে বিজিবির সঙ্গে তারাও কাজ করবে। তবুও ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের দেশের একটা লাশ পড়লে ওপারের দুইটা লাশ ফেলতে হবে।
মতবিনিময় সভায় নুরুল হক বলেন, সরকার শতাধিক পণ্যে কর এবং শুল্ক বাড়িয়েছে। টিস্যু, ওষুধ, রেস্টুরেন্ট এমনকি মোবাইলের কথা বলাতেও ভ্যাট ট্যাক্স বাড়িয়ে দিয়েছে। শুল্ক ও কর বাড়ার এই গণবিরোধী সিদ্ধান্ত মানুষের আরও ভোগান্তি বাড়াবে।
আওয়ামী লীগ সম্পর্কে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এখন একটা মরা লাশ। তাকে টানাটানি করে সান্ত্বনা ছাড়া আর কিছুই মিলবে না। কোনোভাবেই এই আওয়ামী লীগকে আর রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া যাবে না। কারণ তারা আবার কোনোভাবে ফিরে আসলে বিগত সময়ের চেয়েও ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগবিরোধী দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য ছিল, তাতে ফাটল ধরেছে। দলগুলোর মধ্যে যত ফাটল ধরবে ফ্যাসিবাদ তত তাড়াতাড়ি ফিরে আসার সুযোগ পাবে।
নির্বাচন নিয়ে নুর বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে যদি স্থানীয় নির্বাচন দেওয়া হয় তাহলে মানুষের মাঝে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি হবে। মানুষের রাজনৈতিক সম্পর্কে একটা ইতিবাচক ধারণা তৈরি হবে। কিন্তু জাতীয় নির্বাচন আগে হলে নির্বাচিত রাজনৈতিক দল এককভাবে সরকার গঠন করতে পারলে তারা স্থানীয় নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করবে।
এসময় গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ফারুক হাসান গণঅধিকার কেন্দ্রীয় কমিটির উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সমন্বয়ক হানিফ খান সজিবকে রংপুর-১ আসনে আগামী নির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা করেন।
হানিফ খান সজিবের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদ রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ রানা মোন্নাফ, রংপুর বিভাগীয় সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-দপ্তর সম্পাদক ইব্রাহিম খোকন, কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সদস্য হাজী মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র ল হক ন র ক ন দ র য় কম ট র গণঅধ ক র গঠন ক আওয় ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির মামলা বাণিজ্য শুরু করেছে: ইব্রাহীম মোল্লা
কেন্দ্রীয় সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী উদ্দেশে গোপালগঞ্জ যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. ইব্রাহীম মোল্লা বলেছেন, “বর্তমানে বিএনপির নেতাকর্মীরা মামলা বাণিজ্য শুরু করেছে। ফলে নিরীহ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছে। আমরা আপনাকে স্বচ্ছ রাজনীতিবিদ হিসেবে জানতাম। আপনার নেতাকর্মীরা গণঅধিকার পরিষদের নেতার ওপর হামলা করেছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুরাহা না করলে ধরে নেব, আপনার নেতৃত্বে এ হামলা হয়েছে।”
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে গোপালগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল কর্তৃক টুঙ্গিপাড়া পৌরসভা গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর হমলার প্রতিবাদে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
ইব্রাহীম মোল্লা বলেন, “আওয়ামী লীগের শাসন আমলে আপনার (বিএনপি) ইঁদুরের মতো গর্তে লুকিয়ে ছিলেন। গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করিয়েছিল। আপনারা এখন হামলা-মামলা করছেন। অর্থ বাণিজ্যের জন্য মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছেন। আপনার এখনো ক্ষমতায় যাননি এতে এত কিছু, ক্ষমতায় গেলে কি করবেন তা মানুষের বোঝা হয়ে গেছে।”
আরো পড়ুন:
নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার খুব কাছাকাছি রয়েছি আমরা: দুদু
সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ‘জামায়াতীকরণ’ করা হয়েছে: রিজভী
কেন্দ্রীয় ছাত্র অধিকার পরিষদের দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আলি তোহা বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীরা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের মতো আচরণ শুরু করেছে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালী যেভাবে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, লুট, খুন দখল বানিজ্য করেছিলো নতুন করে তারা আবার স্বরূপে ফিরে গেছে। ছাত্র-জনতা আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিদায়ের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। এখানে কোনো জুলুম-নির্যাতন চলবে না।”
মানববন্ধনে যুব অধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মোনায়েম, গোপালগঞ্জ জেলা গণঅধিকার পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক রুম্মান হোসেন, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি রাইসুল ইসলাম, সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের সাবেক আহ্বায়ক মোহাম্মাদ ইসমাইল মোল্লা বক্তব্য রাখেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানীর ভাই ও টুঙ্গিপাড়া পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক গোলাম কিবরিয়া সাগর বলেন, “আমি জানতে পেরেছি, স্থানীয় জনতা সাকিবকে মারধর করেছে। আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। সাকিব এলাকায় চুরি, মাদক সেবন ও কারবারের সঙ্গে জড়িত। গতাকল সোমবার মাদক সেবন করে স্থানীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন তিনি। তাই স্থানীয়রা অতিষ্ঠ হয়ে তাকে চড় থাপ্পড় মারে।”
টুঙ্গিপাড়া থানার ওসি মো. খোরশেদ আলম বলেন, “গতকাল সাকিবের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। তবে কারা এ হামলা করেছে তা এখনো জানতে পারিনি। এবিষয়ে এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পৌর গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক সাকিব শেখ গতকাল সোমবার বিকেলে বাজারে যাচ্ছিলেন। ইসলামি ব্যাংকের সামনে ৩০-৪০ জন লোক তার ওপর হামলা চালায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। আহতের পরিবারের দাবি, কেন্দ্রীয় সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানীর ভাই গোলাম কিবরিয়া সাগর ও পৌর যুবদলের সভাপতি তাইজুল শেখের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী সাকিবের ওপর হামলা চালায়।
ঢাকা/বাদল/মাসুদ