জাবি ছাত্রদলের সদস্য সচিবকে পদবঞ্চিতদের ধাওয়া
Published: 18th, January 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে কেন্দ্র করে আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিককে ধাওয়া দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটিতে পদবঞ্চিতরা এ ধাওয়া দেন বলে জানা গেছে।
তবে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিককের দাবি, ধাওয়াকারীরা হলেন নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীনের নেতাকর্মী।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাত পৌনে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন গেরুয়া এলাকায় একটি খাবার হোটেলের পাশে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ওয়াসিম আহমেদ একটি মতবিনিময় সভা থেকে ফিরছিলেন।
ছাত্রদল নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাথালিয়া ইউনিয়নে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরার পথে গেরুয়া এলাকার একটি হোটেলে খাবার খাচ্ছিলেন নবগঠিত কমিটির সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিক। এ সময় তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যায় ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা। এ সময় তারা কয়েক নেতাকর্মীকে বহিষ্কারের কারণ জানতে চাইলে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়।
পরবর্তীতে অনিক তার কর্মীদের নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক-জব্বার হল সংলগ্ন মোড়ে এসে জড়ো হন অনিকের সমর্থকরা। তারা মওলানা ভাসানী হল সংলগ্ন সড়কে আসলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকায় থমথমে পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
পরে শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিকের নেতৃত্বে বিক্ষোভ-মিছিল করে ছাত্রদলের একাংশের নেতাকর্মীরা। মিছিলটি আ ফ ম কামাল উদ্দিন হলের সামনে থেকে শুরু করে ট্রান্সপোর্ট চত্ত্বর হয়ে পুনরায় হলের সামনে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
তবে ধাওয়ার ঘটনাকে ছাত্রদলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল নয়, বরং ছাত্রলীগের হামলা বলে উল্লেখ করেন শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিক। তিনি বলেন, “আমরা একটি মতবিনিময় সভা শেষে গেরুয়ার একটি হোটেলে বসে খাওয়া-দাওয়া করছিলাম। এ সময় মুখোশধারী কয়েক ছাত্রলীগ নেতা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে আমরা ক্যাম্পাসে মিছিল করি। আজকের ঘটনার সঙ্গে বহিষ্কারের কোন সম্পর্ক নেই।”
পদবঞ্চিতদের একজন নাম না প্রকাশ করার শর্তে বলেন, “আমরা হাসিনাবিরোধী দীর্ঘ লড়াই সংগ্রামে সবসময় সক্রিয় ছিলাম। তখন আমরা মিছিল মিটিংয়ে লোক ছিলাম মাত্র ১৫-২০ জন। অথচ যখন কমিটি দেওয়া হলো- ত্যাগীদের মূল্যায়নের নাম করে ১৭৭ জন রাখা হলো। এ কমিটি কী করে ত্যাগীদের মূল্যায়ন হয়? বরং ত্যাগীদের বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যেই এ কমিটি করা হয়েছে। আমরা ত্যাগীদের প্রকৃত মূল্যায়ন চাই।”
ধাওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা তার সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলাম। কিন্তু উল্টো অনিক আমাদের হুমকি-ধামকি দেন। আমাদের বহিষ্কার ও দেখে নেওয়ার কথা বলেন। এ রকম হলে আমরা বসে থাকবো?”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি কোন অরাজকতা সৃষ্টি হয়, তাহলে প্রশাসন সে বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এ ধরনের পরিস্থিতি কোনোভাবেই কাম্য নয়। অছাত্ররা ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা করলে রাষ্ট্রীয় আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল র পদবঞ চ ত ন ত কর ম এ সময়
এছাড়াও পড়ুন:
ইবিতে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ২ নেতা আটক
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিতে এসে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের দুই নেতাকে আটক করা হয়েছে।
রবিবার (২ মার্চ) দুপুরে ইবির সমাজকল্যাণ বিভাগ থেকে তাদের আটক করা হয়েছে। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা তাদের মারধর করে ইবি থানা পুলিশে সোপর্দ করেন।
আটকরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আপ্যায়নবিষয়ক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম নাঈম ও সাদ্দাম হোসেন হল ছাত্রলীগের নেতা মারুফ আহমেদ।
জানা গেছে, সমাজকল্যাণ বিভাগের সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা চলছিল। এ পরীক্ষায় ওই দুই নেতা অংশগ্রহণ করতে আসেন। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই অন্য শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে প্রতিবাদ শুরু করেন। পরবর্তী সময়ে বিষয়টি ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা অনুষদ ভবনে জড়ো হন।
খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিষদের নেতারা সেখানে উপস্থিত হন। ওই ছাত্রলীগ নেতাদের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের হাত থেকে রক্ষা করে থানায় সোপর্দ করেন তারা।
শিক্ষার্থীরা বলেন, “আন্দোলন চলাকালীন সময়ে আটক নাঈম ও মারুফ বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের হুমকি-ধামকি দেন। তারও আগে শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। আন্দোলনে যাওয়া শিক্ষার্থীদের পরবর্তী সময়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তারা। ইচ্ছাকৃতভাবে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার জন্য আজ তারা পরীক্ষা দিতে এসেছেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, “বিভাগের শিক্ষকরা প্রক্টরিয়াল বডির সহায়তায় আটক দুইজনকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। ওখানে একটা মব তৈরি হয়েছিল, প্রায় ৭০-৮০ জন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী সেখানে সমবেত হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “যেহেতু তারা নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য, তাই আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যেই কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জমা আছে কি না, সেটাও খতিয়ে দেখা হবে।”
ইবি থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, “নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের দুইজনকে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। ইতোপূর্বে নিষিদ্ধ সংগঠন সংক্রান্ত একটি মামলা থানায় রয়েছে। সেই মামলাতেই তাদের চালান করা হবে।”
ঢাকা/তানিম/মেহেদী