‘লাল সন্ত্রাস’ চান ছাত্র ইউনিয়ন নেতা, গ্রেপ্তার দাবি শিক্ষার্থীদে
Published: 18th, January 2025 GMT
‘লাল সন্ত্রাসই একমাত্র উপায়’ বলে নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মেঘমল্লার বসু। একইসঙ্গে ইঙ্গিত দিয়েছেন সশস্ত্র যুদ্ধের। এরই প্রতিবাদের বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টায় এ বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। হল পাড়া থেকে মিছিল নিয়ে তারা রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সমাবেশ করেন। পরে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের দেয়ালে সর্বহারা পার্টির সিরাজ শিকদারের গ্রাফিতি মুছে দেন।
এ সময় ‘লাল সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন’, ‘উদ্দ্যানের গাঁজাখোর উদ্যানে ফিরে যা’, ‘সন্ত্রাসীদের ঠিকানা এই ক্যাম্পাসে হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন তারা।
সমাবেশে মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ বলেন, “এ দেশে যখনই অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়, খেয়াল করলে দেখবেন তার পেছনে এ লাল সন্ত্রাসীদের হাত রয়েছে। তারা যুগ যুগ ধরে লাল সন্ত্রাসের ঘোষণা দিয়েছে এবং দিবালোকে মানুষকে হত্যা করেছে। তারা সেই লাল সন্ত্রাসকে পুনরায় কায়েম করতে চায়। এখন ডাকসু হলে দুইটা ভোটও পাবে না। তাই তারা এমন সন্ত্রাস কায়েমের চেষ্টা করছে। তারা সেন্ট্রাল লাইব্রেরির পাশের দেয়ালে শিরাজ সিকদারের গ্রাফিতি এঁকেছে। কেউ যদি এমন সন্ত্রাসের চেষ্টা করে ঢাবি শিক্ষার্থীরা তাদের বিষদাঁত ভেঙে ফেলবে।”
এবি জুবায়ের বলেন, “আমরা আজকের এ প্রতিবাদ মিছিল ও বিক্ষোভ থেকে বলতে চাই এটি সার্বভৌমত্তের উপর আঘাত। তাদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে।”
আজিজুল হক নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “এ সংগঠন আওয়ামী লীগের বি-টিম হিসাবে কাজ করেছে। ছাত্রলীগ সব সংগঠনকে দমন করেছে, কিন্তু এদের জায়গা দিয়েছে। নতুন করে কাউকে ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে দেওয়া হবে না।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বলেন, “আমরা যখন ক্যাম্পাসে এসেছি সন্ত্রাসীরা এসব বামদের জায়গা করে দিয়েছে। জুলাইয়ের মতো একটি বিপ্লবের পর এখনো দেখছি তারা আওয়ামী ন্যারেটিভকে শক্তিশালী করতে চায়। আমরা দেখি উদ্যানের গেট বন্ধের পর কারা মব করেছে। কারা প্রক্টরের সঙ্গে বাজে ব্যাবহার করেছে। এদের অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এদের গ্রেফতার করতে হবে।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি মেঘমল্লার বসু নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে পোস্ট করা এক ইংরেজী বার্তায় তিনি বলেন, “একমাত্র বিকল্প লাল সন্ত্রাস। প্রান্তিক মানুষের স্বার্থে প্রতিরক্ষামূলক সহিংসতা। আমরা জাগরণ এবং মিছিল করি, যার সহিংস হওয়ার ক্ষমতা নেই। তা দ্বারা আপনি কখনই আপনার কমরেডদের রক্ষা করতে পারবেন না। মানুষ আপনাকে পছন্দ করবেন ঠিকই, কিন্তু কেউ অনুপ্রাণিত হবে না। কারোরই আর ‘মুক্তমনা’ পার্টির দরকার নেই। শহীদদের কেউ পরোয়া করে না। ফ্যাসীবাদ তখনই ভালো, যখন সে মৃত।”
তিনি ডানপন্থাকে ইঙ্গিত করে আরও বলেন, “এ ডানপন্থীদের পাগলামিতে আপনাকে সার্বভৌমত্বের নামে হত্যা করা হবে এবং আপনার চরিত্রকে হত্যা করা হবে। মুক্তমনা ও ‘কেন্দ্রবাদী’ যারা, তাদের হৃদয় তারা ডানপন্থার কাছে বিক্রি করেছে। তারা দাবি করবে, এটি একটি সাংস্কৃতিক যুদ্ধ এবং উভয় পক্ষই কতটা খারাপ। আপনাদের খুব কম বন্ধুই আছে। এমনকি একজনকেও হারানোর সামর্থ্য আপনাদের আর নাই। আর মানুষ ভেড়ার মত। আপনি কি আজীবন মেষপালক হতে ইচ্ছুক?”
গুপ্ত রাজনীতির দিকে ইঙ্গিত করে মেঘমল্লার বলেন, “প্রকাশ্যে বিক্ষোভ করা বন্ধ করুন। প্রকাশ্যে কমিটি দেওয়া বন্ধ করুন। আমরা সতর্ক না হলে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাব। দাঁত ও নখর বেরিয়ে আসছে। এভাবেই আপনার পথকে আপনি ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ থেকে বাঁচাতে পারবেন। আসুন এটিকে আমাদের গুপ্ত বন্ধুদের কাছে নিয়ে যাই। আমাদের সাথেই থাকুন।”
যদিও তিনি ওই পোস্ট ডিলেট দিয়েছেন। এরপরও তার স্ক্রিনশট ঘিরে চলছে তুমুল সমালোচনা। সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা ও নিরাপত্তার উপর আঘাত বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ (ফটো স্টােরি)
ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
আরো পড়ুন:
নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান শুরু
জাতীয় নাগরিক পার্টির শীর্ষ ১০ পদ চূড়ান্ত
এছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলা ও ঢাকার বিভিন্ন থানা থেকে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা দলে দলে জমায়েত হন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে।
মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের সড়কে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানের মঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে।
মঞ্চের সামনের সারিতে এক পাশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের বসার আসন রাখা হয়েছে।
আরেক পাশে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবারের সদস্যদের বসার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
দলের আহ্বায়ক হিসেবে নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব হিসেবে আখতার হোসেনের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে।
বিভিন্ন সূত্রে দলের শীর্ষস্থানীয় ১০ জনের নাম পাওয়া গেছে। নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারীকে প্রধান সমন্বয়কারী, হাসনাত আবদুল্লাহকে দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক এবং সারজিস আলমকে উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
ঢাকা/এসবি