কোনও দুরাচারের সঙ্গে সমঝোতা-আপস করবো না: জামায়াত আমির
Published: 18th, January 2025 GMT
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আমরা কোনও অন্যায়ের কাছে মাথা নত করবো না এবং কোনও দুরাচারের সঙ্গে কোনও ধরনের সমঝোতা-আপস করবো না। আপসহীন আমাদের এই লড়াই চলতে থাকবে। যতক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশ একটি মানবিক বাংলাদেশ না হবে, একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ না হবে, দুবৃর্ত্তমুক্ত বাংলাদেশ না হবে, দুঃশাসনমুক্ত বাংলাদেশ না হবে, দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ না হবে, আমাদের লড়াই ততদিন চলবে ইনশাআল্লাহ।
শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নাটোরের বড়াইগ্রামের বনপাড়া বাজারে এক পথসভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, এই লড়াইয়ে বাংলাদেশের জনগণকে আমরা সঙ্গে চাই, পাশে চাই। গণঅভ্যুত্থানে যারা জীবন দিয়েছে, আহত হয়েছে, পঙ্গু হয়েছে তারা এমনই একটা দেশ চায়। আমরা তাদের কথা দিচ্ছি, তোমাদের স্বপ্নের সেই বাংলাদেশ, সেই স্বপ্নপূরণে আমরা আমাদের সর্বশক্তি নিয়োগ করবো ইনশাআল্লাহ।
এর আগে চুয়াডাঙ্গা থেকে রাজশাহী যাওয়ার পথে তিনি উপজেলার রাজাপুর, ধানাইদহ ও বনপাড়াতে সংক্ষিপ্ত পথসভা করেন। বনপাড়া বাজারে পথসভায় তিনি শুরুতেই উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নাটোরের কাঁচা গোল্লার মতোই মানুষগুলো মিষ্টি, আলহামদুলিল্লাহ।
তিনি অসাম্প্রদায়িক দেশ গঠনের লক্ষ্যে তার বক্তব্যে বলেন, দেশ হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবার। কাজেই সবার সহযোগিতা লাগবে একটি ভালো দেশ গঠন করার জন্য। আমরা চাই সব মানুষ দল-ধর্মের ঊর্ধ্বে ওঠে মানুষ হিসেবে এ দেশে সম্মানের সঙ্গে বসবাস করবে। চাঁদাবাজি, দখল বাণিজ্য, ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ করতে কুরআনের আইন লাগবে এবং কুরআনের আইন ছাড়া সম্ভব না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে পুরুষ আসামির সাক্ষাৎ
বগুড়ায় আলোচিত ১৭ মামলার আসামি তুফান সরকারকে আদালতের নারী হাজতখানায় পরিবারের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে আদালত পুলিশের ২ সদস্যকে প্রত্যাহার ও ৫ সাক্ষাত প্রার্থীকে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিকেলে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যাহার করা পুলিশের ২ সদস্য হলেন- সহকারী টাউন উপ-পরিদর্শক (এটিএসআই) জয়নাল আবেদিন ও নারী কনস্টেবল ইকসানা খাতুন।
জানা যায়, তুফান সরকার বগুড়া শহর যুব শ্রমিকলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি বগুড়া শহরের চকসুত্রাপুর এলাকার মজিবর সরকারের ছেলে। তিনি হত্যা, মাদক, ধর্ষণ, ছিনতাইসহ ১৭ মামলার আসামি।
জানা যায়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের দ্বিতীয় তলায় নারী হাজতখানার দরজা কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। ভেতরে তুফান সরকার, তার স্ত্রী, ছোট বোন, শাশুড়ি, স্ত্রীর বড় বোন এবং একজন আইনজীবীর সহকারী মিলে গল্প করছিলেন। পরে নারী হাজতখানায় পুরুষ আসামি ঢুকার বিষয়টি জানাজানি হলে আদালত চত্বরে হৈ চৈ পড়ে যায়। পরে দ্রুত তুফান সরকারকে প্রিজন ভ্যানে কারাগারে পাঠানো হয়।
এসময় তুফান সরকারের সঙ্গে দেখা করতে আসা নারী হাজত খানা থেকে ওই ৫ জন সরে যান। পরে তাদের আদালত চত্বর থেকে আটক করে ৫৪ ধারায় চালান দেওয়া হয়।
আটক ৫ জন হলেন, তুফানের শাশুড়ি তাসলিমা বেগম, তুফান সরকারের স্ত্রী আশা বেগম, শ্যালিকা ফেরদৌসি বেগম, শ্যালক নয়ন, তুফানের আইনজীবীর সহকারী হারুনুর রশিদ।
বগুড়া আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, সকালে তুফান সরকারকে বিদ্যুৎ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য কারাগার থেকে আনা হয়। কারাগার থেকে আনা অন্য সব হাজতিকে দুপুরের মধ্যেই প্রিজন ভ্যানে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাদ পড়ে তুফান সরকার। হাজতখানার চাবি এটিএসআই জয়নাল আবেদিনের কাছে থাকে। তুফান সরকারকে কারাগারে না পাঠিয়ে তাকে নারী হাজতখানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেয় জয়নাল আবেদিন। আদালতের সবার অগোচরে ঘটনাটি ঘটে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, পুরুষ আসামিকে নারী হাজত খানায় পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ করে দেওয়ার অভিযোগে এটিএসআই জয়নাল আবেদিন ও এক নারী কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশের আরও যাদের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এক কলেজ ছাত্রীকে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠে তুফান সরকারের বিরুদ্ধে। পরে শালিস ডেকে ভুক্তভোগী নারী ও তার মা'কে দোষী উল্লেখ করে মারধর করে এবং মা-মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয় তুফান সরকার। সেই ঘটনায় দেশ জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হলে তুফান সরকার গ্রেপ্তার হয়।