পঞ্চগড়ে কাদিয়ানিদের সকল প্রকার ‘ষড়যন্ত্রমূলক কার্যক্রম’ বন্ধ ও ‘হয়রানিমূলক’ সব মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে গণসমাবেশ করেছে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদ। 

শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা শহরের শের-ই বাংলা পার্কের মুক্তমঞ্চে এ সমাবেশ করে সংগঠনটি। সমাবেশ শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন সংগঠনের নেতারা।

সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদ পঞ্চগড়ের সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আব্দুল হান্নানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন আন্তর্জাতিক মসলিশে তাহফুজে খতমে নবুওয়তের যুগ্ম মহাসচিব এনামুল হক, উপদেষ্টা কমিটির সদস্য মাওলানা মাহমুদুল আলম, মাওলানা মুফতি আ.

ন.ম আব্দুল করিম, মাওলানা তছলিম উদ্দিন প্রমুখ। 

সমাবেশে বক্তারা কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার দাবি জানিয়ে বলেন, ‘‘কাদিয়ানিরা প্রশাসনের সহযোগিতা নিয়ে ২০২৩ সালে সালানা জলসা (সমাবেশ) করেছিল। সেই জলসা বন্ধের দাবিতে মুসলমানরা আন্দোলন করায় প্রশাসন কাদিয়ানিদের পক্ষ নিয়ে একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরীহ মানুষদের হয়রানি করে। সেই মামলায় তাদের নির্বিচারে আটক করা হয়। আগের মতো এবারও যদি প্রশাসন তাদের সালানা জলসা করার অনুমতি দেয়, তাহলে পঞ্চগড়ের সাধারণ মানুষ ঘরে বসে থাকবে না।’’

তারা বলেন, ‘‘আমরা জেনেছি, কাদিয়ানিরা এবারও তাদের সালানা জলসার সমাবেশ করার চেষ্টা করছে। আহমদীয়া মুসলিম জামাত নামধারী কাদিয়ানি সম্প্রদায় মুসলমানদের পরিচয় বহন করে তারা কুফরি মতবাদ প্রচার করে, মুসলমাদের ঈমান ধ্বংস করছে। আশা করছি, প্রশাসন এবার তাদের সমাবেশ করার অনুমতি দেবে না।’’
পঞ্চগড় জেলা শহরের উপকণ্ঠে আহমদনগর এলাকায় প্রতি বছর বার্ষিক সালানা জলসার আয়োজন করে আহমদিয়া (কাদিয়ানী) সম্প্রদায়। এই জলসা বন্ধের দাবিতে খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠন প্রতিবছরই বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। 

২০২৩ সালের ৩ মার্চ সালানা জলসা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হলে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে বিক্ষুব্ধরা। এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে মুসল্লিদের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ সাধারণ মুসল্লিদের উপর গুলি করে। ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও ঘটে। পরবর্তীতে এসব ঘটনায় পুলিশ ও আহমদিয়াদের পক্ষ থেকে অন্তত ৩৫টি মামলা করা হয়। যেগুলোতে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের আসামি করা হয়।

ঢাকা/নাঈম/বকুল 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী লীগের ভোট পেতে একটি দল তাদের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করে না: সালাহউদ্দিন আহমদ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘একটি দল আওয়ামী লীগের ভোট প্রাপ্তির জন্য আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করে না।’

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সালাহউদ্দিন আহমদ এসব কথা বলেন। বিজয়ের মাস উপলক্ষে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক এই অনুষ্ঠানে ছাত্রদলের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, মিরপুর বাঙলা কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, তিতুমীর কলেজ, ঢাকার বিভিন্ন ইউনিটের নারীনেত্রী এবং ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক ও বর্তমান নেতারা অংশ নেন।

একটি দলকে ইঙ্গিত করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ইনিয়ে-বিনিয়ে বলছে যে তারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ছিল। আমরা মাঝেমধ্যে জিজ্ঞাসা করি, সেই মুক্তিযুদ্ধ কি পাকিস্তানের পক্ষে ছিল? জনগণের সামনে কিছুদিন পরে তারা হয়তো বলবে যে তারাই একমাত্র মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, আমরা করিনি। এ রকম অনেক বক্তব্য আপনারা ভোটের ময়দানে শুনতে পাবেন। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ অনেক সচেতন। এখন আর ধর্মের বিড়ি বিক্রি করে বাংলাদেশের জনগণের সামনে ভোট চাওয়া যাবে না। তারপরও আমাদের মাঠে–ময়দানে পরিকল্পনা নিয়ে যেতে হবে।’

আওয়ামী লীগের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘যারা নিজের দেশের নাগরিককে হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে হত্যা করেছে, নারী–শিশুনির্বিশেষে শতসহস্র মানুষকে হত্যা করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে, এই ইতিহাস যেন আমরা ভুলে না যাই।’

বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত ‘শ্বেতপত্র’–এর কথা উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, আওয়ামী লীগ যে পরিমাণ টাকা তছরুপ করেছে, সেটা দিয়ে বাংলাদেশের দুটি শিক্ষা বাজেট করা যায়। তিনটি স্বাস্থ্য বাজেট করা যায়। ব্যাংকিং ও নন–ব্যাংকিং ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর থেকে যে লুটপাট হয়েছে, রাজনৈতিক বিবেচনায় যে ঋণ দেওয়া হয়েছে, যেটি তছরুপ হয়েছে, সেটা দিয়ে ২৪টি পদ্মা সেতু নির্মাণ করা যেত। ১৪টি মেট্রো সিস্টেম নির্মাণ করা যেত। বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে ব্যাংকিং লুটপাটের মধ্য দিয়ে, সেটা বিলিয়ন ডলারে না বলে অঙ্কে বোধ হয় ২৯ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা প্রসঙ্গেও অনুষ্ঠানে কথা বলেন বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘গণতান্ত্রিক যাত্রাকে বিভিন্নভাবে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে শক্তিশালী করার জন্য গণতন্ত্রের উত্তরণ হতে হবে। সেই গণতান্ত্রিক উত্তরণের একটি সফল ঘোষণা গতকাল হয়েছে, যেটাকে আমরা তফসিল বলছি, নির্বাচনী তফসিল।’

কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘কেউ কেউ বলেছে নো পিআর, নো ইলেকশন। কেউ কেউ বলেছে আগে স্থানীয় সরকার ইলেকশন, না হলে নো ইলেকশন। আর কেউ কেউ বলেছে একই দিনে গণভোট আর নির্বাচন হলে আমরা মানি না। আমি কারও নাম নিতে চাই না। তারা গণতন্ত্রের বিপক্ষের শিবির। তারা নিজেদের মতো করে গণতন্ত্র চায়। তাদের গণতন্ত্রের সংজ্ঞা আলাদা।’

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা
  • হাদির ওপর হামলা নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র: সালাহউদ্দিন 
  • নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ায় জামায়াতের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিগুলো স্থগিত
  • আওয়ামী লীগের ভোট পেতে একটি দল তাদের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণ করে না: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • মর্গ্যান গার্লস স্কুলে পরীক্ষাকালীন সময়ে জামায়াত প্রার্থীর সভা,  ক্ষোভ