সম্প্রতি একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ওই ছবির বিষয়ে জানা গেছে, ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর রামপুরার ডেলটা হেলথকেয়ার হাসপাতালের সামনের সিঁড়িতে পড়ে ছিলেন পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হওয়া রিকশাচালক মো. ইসমাইল। জীবন বাঁচানোর জন্য সাহায্য চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীরা দরজা খোলেননি। চিকিৎসাও দেওয়া হয়নি। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সিঁড়ির ওপরেই প্রাণ হারান ইসমাইল।

অনেকে সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে সমালোচনা করেছেন। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের নজরে আসার পর গতকাল শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে ডেল্টা হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে সেই সময় দায়িত্ব পালন করা এক চিকিৎসকসহ পাঁচ জনকে আটক করেছে হাতিরঝিল থানা পুলিশ। 

এ ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় শনিবার (১৮ জানুয়ারি) তদন্ত কর্মকর্তা হাতিরঝিল থানার উপ-পরিদর্শক হিরণ মোল্লা ওই পাঁচ জনকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানান।

আবেদনে বলা হয়, ভিকটিম ইসমাইল (৪৬) গত ১৯ জুলাই বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে রামপুরার ডেলটা হেলথকেয়ার হাসপাতালের প্রবেশপথের সিঁড়িতে পড়ে ছিলেন। হাসপাতালে নিয়ে গেলেও তাকে কোনো প্রকার চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়নি। তিনি বিনাচিকিৎসায় সেখানে মৃত্যুবরণ করে। অভিযান চালিয়ে এই পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করি। জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা ঘটনার সময় ডেলটা হেলথকেয়ারে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু, তারা ইসমাইলকে প্রাথমিক চিকিৎসাও দেননি। প্রাথমিক তদন্তে ভিকটিমের মৃত্যুর জন্য তাদের অবহেলা পরিলক্ষিত হয়েছে।

আসামিদের পক্ষে আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুমা রহমান তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন—ডেলটা হেলথকেয়ার হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা.

সাদি বিন শামস, মার্কেটিং অফিসার হাসান মিয়া, মেইনটেন্যান্স কর্মকর্তা বোরহান উদ্দিন, সিকিউরিটি গার্ড ইসমাঈল ও নাজিম উদ্দিন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে মো. ইসমাইল গুলিবিদ্ধ হন। অস্ত্রের মহড়ার কারণে তিনি চিকিৎসা নিতে পারেননি। হুমকির কারণে লাশের ময়নাতদন্তও করা যায়নি।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মো. ইসমাইলের স্ত্রী লাকি বেগম হাতিরঝিল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ঢাকা/মামুন/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

কিছু মানুষ ভয়ংকর আক্রমণাত্মক হয়ে আছে: স্বস্তিকা

পশুপাখি নিয়ে কাজ করেন টালিউড অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি। সম্প্রতি পশুপ্রেম এবং তাদের নিয়ে কাজ করার জন্য সম্মানিতও হয়েছেন তিনি। এর ঠিক পর শেয়ার করেন একটি ইঙ্গিত পূর্ণ পোস্ট, যা নিয়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা।

অভিনেত্রী লেখেন, ‘কিছু কিছু মানুষ ভয়ংকর আক্রমণাত্মক হয়েই আছে। ধর্ষণ করছে, খুন করছে। আমাদের মেয়েদের ভয় লেগেই আছে বাস, ট্রেন, অফিস-বন্দর, বাড়ি কি স্কুল-কলেজে। কি করছেন সেটার ব্যাপারে যদি একটু আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেন প্লিজ!’

অনেকেই এদিন অভিনেত্রীর পোস্টে মন্তব্য করেছেন। কেউ তাকে সমর্থন করেছেন। কেউ আবার সমালোচনা করেছেন।

এক ব্যক্তি অভিনেত্রীর ভাবনার বিরোধিতা করে লেখেন, ‘রাস্তার কুকুর মাঝেমধ্যেই কামড়ায়। সেই কামড় খেলে যে ইঞ্জেকশন খেতে হয় বেশিরভাগ হাসপাতালে সেই ওষুধ পাওয়া যায় না। আমিও কুকুরপ্রেমী। কুকুর থেকে ভয় পাওয়ার সাথে খুন-ধর্ষণকে জুড়ে দেওয়ার ন্যাকামিটা হাস্যকর লাগলো। রাস্তার কুকুরের ভ্যাক্সিনেশন, স্টেরিলাইজেশন, হাসপাতালে ওষুধ মজুত রাখার জন্য জনগণ যাদের পয়সা দিয়ে পোষে, সেই সরকারী মন্ত্রী সান্ত্রীদের সঙ্গে যখন পরের বার ওঠবস করবেন, তখন তাদের এই লক্ষ্য করে প্রকাশ্যে এই বিষয়ে অনুরোধ জানানোর অনুরোধ জানিয়ে রাখলাম। আপনি সেলিব্রেটি। আপনার কথায় কাজ হতে পারে।’

তৃতীয় ব্যক্তি লেখেন, মানুষ অন্যায় করলে তো একটা পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে বিচার হয়। কুকুর ভুলভাবে নিরীহ মানুষকে কামড়ালে তার বিচার কোথায় হয়? আপনি তুল্যমূল্যটায় আনলেন তাই বললাম।' চতুর্থ ব্যক্তি লেখেন, 'প্রসঙ্গ যাই হোক না কেন এই মহিলার সব সময় রেপ ভিকটিম কার্ড খেলতেই হয়।

অনেকেই আবার স্বস্তিকাকে সমর্থন করেছেন। এক ব্যক্তি লেখেন, ‘একদম ঠিক কথা বলেছেন।’ দ্বিতীয় ব্যক্তি লেখেন, ‘সপাটে সত্যি কথা বলে দিলেন।

স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় এদিন একগুচ্ছ ছবি শেয়ার করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখানেই তিনি জানালেন নির্বাকদের কণ্ঠ হয়ে ওঠার জন্য এই সম্মান পেয়েছেন। স্বস্তিকা লেখেন, ‘এই পুরস্কারটা আমার জীবনের সাবিত্রী এবং ফুলকিদের জন্য।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ