হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার দ্বিমুড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল আউয়াল ওলকপি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। পতিত ৩০ শতাংশ জমিতে তিনি আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নন ক্রিপার প্রদর্শনীর মাধ্যমে রোপণ করেন উন্নতজাতের ওলকপির চারা। এ জন্য তাকে ব্যয় করতে হয়েছে আট হাজার টাকা। এই কৃষক আশা করছেন, ৬৫ হাজার টাকার ওলকপি বাজারে বিক্রি করতে পারবেন।

জানা গেছে, আব্দুল আউয়াল নভেম্বর মাসের শেষের দিকে পতিত জমিতে প্রায় ৪ হাজার ওলকপির চারা রোপণ করেন। এর প্রায় ৪৫ দিনের মধ্যে ওলকপি পরিপক্ক হয়। বর্তমানে তিনি এই সবজি বিক্রি করতে শুরু করেছেন। তার আশা, ওলকপি বিক্রি করে ৬৫ হাজার টাকা পাবেন। জমি চাষাবাদে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৮ হাজার টাকা। 

কৃষক আব্দুল আউয়াল জানান, তিনি পতিত জমি আবাদ করেন। আবাদকৃত জমিতে আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় নন ক্রিপার  প্রদর্শনীর মাধ্যমে রোপণ করেন উন্নতজাতের ওলকপির চারা। চাষাবাদে তার প্রায় ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এখন তিনি ওলকপি বিক্রি করতে শুরু করেছেন। ক্রেতারা আগ্রহের সঙ্গে জমি থেকে সবজিটি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। 

আরো পড়ুন:

ঠাকুরগাঁওয়ে ফুলকপির কেজি ২ টাকা 

কচু লতিতে ভাগ্য ফিরলো বরুড়াবাসীর

তিনি আরো জানান, শীতকালীন সবজি হিসেবে ওলকপি চাষ করেছেন। বাঁধাকপি ও ফুলকপি চাষে পাতামরা রোগ ও পোকার আক্রমণের ঝুঁকি থাকলেও ওলকপি চাষে ঝুঁকি কম। ৪০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে ওলকপি বাজারজাত করা সম্ভব হচ্ছে। হালকা দো-আঁশ মাটি ওলকপি চাষের জন্য বেশি উপযোগী। অধিক বৃষ্টিপাত এই সবজি চাষের জন্য ক্ষতিকর। গাছের দ্রুত বেড়ে ওঠার জন্য আলোর প্রয়োজন হয়।

দ্বিমুড়া কৃষি ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামীমুল হক শামীম বলেন, ‍“ওলকপি চাষ করতে কৃষক আব্দুল আউয়ালকে পরামর্শ দিয়েছিলাম। তিনি এই সবজিটি চাষ করে সফল হয়েছেন। তার সফলতা দেখে অন্যান্য কৃষকরাও ওলকপি চাষে উৎসাহিত হয়েছেন। আশা করছি, আগামী মৌসুমে ওলকপির চাষ বাড়বে।”

তিনি আরো বলেন, “খরচ কম ও লাভ বেশি হওয়ায় ওলকপি চাষ বৃদ্ধিতে কৃষকদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। মূলত এটি (ওলকপি) একটি শীতকালীন সবজি। এ সবজির পুষ্টিগুণ প্রচুর। কৃষকরা বেশিরভাগ সময়ে চারা রোপণ করে ওলকপির চাষ করে থাকেন। তবে, চারা রোপণ না করাই ভালো। কারণ এতে কোনোভাবে রোপণের সময় প্রধান শিকড় ভেঙ্গে যেতে পারে। কৃষি বিভাগের মতে, সারিতে বীজ বুনলে সারি থেকে সারির দূরত্ব ৩০ সেন্টিমিটার বা ১ ফুট রাখতে হয়। আর চারা রোপণ করলে চারা থেকে চারা ২০ সেন্টিমিটার বা ৮ ইঞ্চি দূরত্বে রোপণ করতে হবে।”

 

ঢাকা/মামুন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফসল চ ষ কর

এছাড়াও পড়ুন:

পরিশ্রম আর শৃঙ্খল জীবনে নাঈম পাচ্ছেন সফলতার সুবাস 

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন মেপে। ঠান্ডা মাথায় উত্তর দিচ্ছিলেন বুঝেশুনে। পালটা প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে ‘কঠিন প্রশ্ন’ বলে হেসে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন দারুণভাবে। সেঞ্চুরিয়ান নাঈম শেখের পরিবর্তন শুধু ব্যাট হাতে আসেনি, শরীরী ভাষায়ও দিচ্ছেন পরিপক্বতার পরিচয়। 

কদিন আগেই জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টিতে পেয়েছিলেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের স্পর্শ। এবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) প্রথমবারের মতো হাঁকান সেঞ্চুরি। তাও এমন এক মুহূর্তে, যখন হারলেই বাদ পড়বে দল তখন। 

ওপেনিংয়ে নেমে ৬২ বলে ১১১ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন ইনিংসের শেষে। তার দল খুলনা টাইগার্স পায় বড় পুঁজি। তাতে ভর করে ৪৬ রানের বয় জয়ে প্লে-অফের আশা বাঁচিয়ে রাখে খুলনা। শুধু কৌশল নয়, ব্যক্তিগত জীবনে শৃঙ্খলা এনে নাইম পাচ্ছেন সফলতার দেখা।

“সর্বশেষ যতগুলো টুর্নামেন্ট খেলেছি নিজের শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করেছি। মাঠে সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। ভেঙে বলতে গেলে অনেক লম্বা হয়ে যাবে। অফ সিজনে কাজ করেছি।”

“যদি সেভাবে বলতে চাই, ঘরোয়া ক্রিকেটের সব কোচের কথা বলতে হবে। বাবুল স্যার, সোহেল স্যারের সাথে কাজ করেছি। আনোয়ার ভাই নামে একজন আছে। নির্দিষ্ট একজন বলতে গেলে মাইন্ড ট্রেনিং নিয়ে কাজ করেছি, ওটা অনেক ভূমিকা রাখছে। শৃঙ্খলাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই আমার পরিবার”, নিজের পরিবর্তনের গল্প এভাবেই বলছিলেন নাঈম। 

লাল সবুজের জার্সিতে নাঈমের আগমন ছিল দুর্দান্ত। ভারতের বিপক্ষে নাগপুরের তৃতীয় ম্যাচেই খেলছিলেন ৮১ রানের দারুণ এক ইনিংস। সম্ভাবনা দেখিয়ে জাতীয় দলে এলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। অন্য অনেকের মতো তাকে ধরা হচ্ছিল ‘খসে পড়া তারা’ হিসেবে। তবে না, নাইম আড়ালে গিয়ে আসল কাজটাই করছেন নীরবে-নিভৃতে। 

খেলার ধরন নিয়েও ছিল প্রশ্ন। ইনিংসজুড়ে ডট বলার সমাহার। অবশ্য এতে তৎকালীন কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোর প্রভাব। গুরুর ‘ধরে খেলার’ শিক্ষায় নাঈম যেন আরো দিশেহারা হয়ে যান। নাঈমে শেখে এমন পারফরম্যান্সে ওপেনার খরায় ভুগতে থাকা বাংলাদেশ যেন আরো সংকটে পড়ে। 

নাঈমের জায়গা নিয়ে নেন তরুণ তানজীদ হাসান তামিমরা। ফর্মে ফিরে দলে আসা সৌম্য সরকারও আছেন তালিকায়। সবশেষ তাকে ওয়ানডেতে দেখা গেছে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে। আর টি-টোয়েন্টি খেলেন ২০২২ সালের আগস্টে!  

নিজের সঙ্গে নিজে চ্যালেঞ্জ নিয়ে নাঈম পেয়েছেন সফলতা, “সত্যি বলতে কোনো প্রত্যাশা ছিল না। বেসিক ঠিক রেখে প্রসেস মেনে চলতে চাই। কোনো প্রত্যাশা রেখে শুরু করিনি। কোনো লক্ষ্য নেই, উন্নতি করতে পারছি কি না… নিজের সাথে নিজের চ্যালেঞ্জ। উন্নতি করতে চেয়েছি, হয়েছে কি না। এনসিএলেও কোনো লক্ষ্য ছিল না যেমন সর্বোচ্চ রানের মালিক হতে হবে বা ভালো করতে হবে। এমন কোনো ভাবনা ছিল না। নিজের সাথে নিজের চ্যালেঞ্জ যত বেশি বড় করা যায়।” 

“মানসিকতায় পরিবর্তন অবশ্যই জরুরি। এটা না এলে লম্বা ইনিংস খেলা খুব কঠিন ওপেনার হিসেবে। আগে অফ স্পিনে অনেক সংগ্রাম করছিলাম। ঐ জায়গা থেকে বের হয়ে আসছি, কীভাবে ডট না করে স্ট্রাইক রোটেট করা যায়। আর রেঞ্জ হিটিং। তিন বছর আগে মুশফিক ভাই বলেছিল, রিভার্স সুইপ নিয়ে কাজ করা গেলে আমার জন্য সহজ হয়ে যাবে। এখন অফ স্পিনে সুইপ-রিভার্স সুইপ অনেক সহজ হয়েছে। স্লগ সুইপে আগে ভালো ছিলাম, মাঝখানে সংগ্রাম করছিলাম। বলতে গেলে লম্বা হয়ে যাবে। অবশ্যই কিছু জিনিস পরিবর্তন এনেছি তাই সাফল্য আসছে”— বলছিলেন নাঈম। 

ঢাকা/রিয়াদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পরিশ্রম আর শৃঙ্খল জীবনে নাঈম পাচ্ছেন সফলতার সুবাস