নানা জটিলতায় আটকে থাকার পর অবশেষে মুক্তির মুখ দেখেছে কঙ্গনা রনৌতের ছবি ‘ইমার্জেন্সি’। তবে বক্স অফিসে সেভাবে বড় অঙ্ক ঘরে না তুললেও বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে কঙ্গনার সবচেয়ে বড় উদ্বোধনী আয়ের সিনেমা এটি।

বলিউড মুভি রিভিউজ ডটকম বলছে, মুক্তির প্রথম দিনে ভারতীয় বক্স অফিসে ছবিটি ২.২৫ কোটি রুপির ব্যবসা করেছে। যা গত পাঁচ বছরে কঙ্গনার একক মুক্তি পাওয়া ছবির তুলনায় বেশ ভালো ওপেনিং!

কঙ্গনার আগের ছবি ২০২৩ সালে মুক্তি প্রাপ্ত সর্বেশ মেওয়ারা পরিচালিত অ্যাকশন ফিল্ম ‘তেজস’ বক্স অফিসে উদ্বোধনী দিনে ১.

২৫ কোটি রুপি আয় করেছিল। এর আগে ২০২২ সালের অ্যাকশন ছবি ‘ধকড়’ বক্স অফিসে প্রথম দিনে ১.২০ কোটি রুপি, তামিলনাড়ুর প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী জে জয়ললিতার জীবন অবলম্বনে নির্মিত আরেকটি রাজনৈতিক বায়োপিক ‘থালাইভি’ (২০২১) প্রথম দিনে তামিল, তেলেগু এবং হিন্দি তিনটি ভাষায় মুক্তি পাওয়া সত্ত্বেও খাতা খুলেছিল ১.৪৬ কোটি রুপি দিয়ে। একই সঙ্গে করোনা লকডাউনের ঠিক আগে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে কঙ্গনার সবচেয়ে বড় উদ্বোধনটি ছিল স্পোর্টস ড্রামা ‘পাঙ্গা’। অশ্বিনী আইয়ার তিওয়ারির স্পোর্টস ড্রামাটি ২.৭০ কোটি রুপি আয় করেছিল।

সিনেমায় শুধু অভিনয়ই করেননি, এই চলচ্চিত্র পরিচালনা ও প্রযোজনার দায়িত্বও পালন করেছেন কঙ্গনা। এতে আরও অভিনয় করেছেন অনুপম খের, মিলিন্দ সোমন, মহিমা চৌধুরী, প্রয়াত অভিনেতা সতীশ কৌশিক ও শ্রেয়াস।

এর আগে কঙ্গনা সিনেমাটি সম্পর্কে বলেছিলেন, ‘ইমার্জেন্সি’ আমার কাছে সত্যিই ভীষণই স্পেশাল। এ ছবিটির জন্য সেরা ভারতীয় অভিনেতা এবং আন্তর্জাতিক প্রতিভাদেরও এক পর্দায় দেখা যাবে।

তার কথায়, ‘ইমার্জেন্সি আমাদের ইতিহাসের বিভিন্ন অধ্যায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং অন্ধকার অধ্যায়গুলোর মধ্যে একটি; যা তরুণ ভারতের জানা দরকার। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ গল্প এবং আমি প্রয়াত সতীশজি, অনুপমজি, শ্রেয়স, মহিমা এবং মিলিন্দের মতো সুপার-ট্যালেন্টেড অভিনেতাদের একসঙ্গে এই সৃজনশীল জার্নি রয়েছে। আমি ভারতের ইতিহাস থেকে এই অসাধারণ পর্বটিকে বড় পর্দায় নিয়ে আসতে পেরে সত্যিই আনন্দিত।

কঙ্গনা জানান, ‘ইমার্জেন্সি’ তাঁর গোটা জীবনের উপার্জন ও শিক্ষা দিয়ে তৈরি একটা সিনেমা। এই ছবিটাই প্রমাণ করবে শিল্পী হিসেবে তার মূল্য কতটা।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

জামায়াতে ইসলামীর ব্যানারে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন

হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘আপনারা প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জামায়াতে ইসলামীর ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নেবেন। জামায়াতের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নিলে আপনাদের স্বাগত জানানো হবে।’

বুধবার রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে ভিন্নধর্মাবলম্বীদের নিয়ে প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন শফিকুর রহমান। ভিন্নধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমরা আপনাদের ভালোবাসা চাই। অতীতে যাঁরা নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশ ছেড়েছেন, তাঁদেরকেও আমরা ফিরিয়ে আনতে চাই।’

ধর্ম ও পেশার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা পরিচয়কে বৈষম্য উল্লেখ করে জামায়াতের আমির বলেন, ‘এই সামাজিক পার্থক্যকে আমরা ঘৃণা করি। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে ভিন্নধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করাকে পবিত্র দায়িত্ব হিসেবে নেবে। আমরা ওই সংস্কৃতির বিকাশ চাই, যেখানে কোনো মন্দির, চার্চ ও মঠ পাহারা দিতে হবে না।’

যেকোনো ‘মবের’ বিরুদ্ধে জামায়াতের অবস্থান উল্লেখ করে দলটির আমির বলেন, ‘সম্প্রতি দেশে কিছু ভাঙচুরের ঘটনার বিরোধিতা করায় অনেকে আমার বিরুদ্ধে খেপে যান। কিন্তু আমি কোনো মবের পক্ষে নই। কেউ অপরাধী হলে তার জন্য আইন ও আদালত আছে। সেখানে তার বিচার হবে।’

প্রীতি সমাবেশে বিভিন্ন ধর্মের সদস্যরা নিজেদের দাবি তুলে ধরেন। জামায়াতের পক্ষ থেকে উত্থাপিত দাবি যাচাই–বাছাই করে বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন শফিকুর রহমান।

জামায়াতে ইসলামীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ শর্মা বলেন, ‘আমাদের প্রাণের আট দফা দাবি জামায়াতে ইসলামী তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে সংযোজন করবে, সেই প্রত্যাশা রাখছি। আমরা ৫৩ বছর ধরে বঞ্চিত। যত বঞ্চনা কিংবা নির্যাতন হয়েছে, আমরা কোনো ঘটনার বিচার পাইনি। আপনারা সেই বিচার নিশ্চিত করুন।’

হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমরা হিন্দুদের ওপর সংঘটিত সকল নির্যাতন ভুলে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা হয়নি। বাংলাদেশে হিন্দুরা ধর্মের দিক দিয়ে হলেও সংখ্যায় কম। ফলে আমরা শঙ্কায় থাকি।’

সংখ্যানুপাতিক হারে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক বলেন, ‘আওয়ামী লীগের কাছে সেই ১৯৫৪ সাল থেকে জিম্মি হয়েছিলাম। এবার আমরা সেই জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছি। তাই সংসদে আমরা নিজেরা নিজেদের কথা বলতে চাই।’

জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি আবদুল মান্নান। প্রীতি সমাবেশ সঞ্চালনা করেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য শফিকুল ইসলাম মাসুদ।

সমাবেশে অংশ নেন একুশে পদকপ্রাপ্ত অধ্যাপক সুকোমল বড়ুয়া, বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, সিদ্ধেশ্বরী সর্বজনীন পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি নিবাস চন্দ্র মাঝি, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সহসভাপতি বদন্ত স্বরুপানন্দ ভিক্ষু, ইমানুয়েল ব্যাপ্টিস্ট চার্চের পাস্তর তপন রায়, হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব সভাপতি দিনবন্ধু রায়, শুভাশীষ বিশ্বাস, লিটন কোমল বড়ুয়াসহ প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ