খুলনার পাইকগাছায় দুই সহস্রাধিক অসহায় ও দুস্থ মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। সম্প্রতি খুলনার কপিলমুনি শ্রীরামপুর জিয়া প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সেন্টার প্রাঙ্গণের মাঠে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে এ শীতবস্ত্র বিতরণ বিতরণ করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) চেয়ারম্যান ও দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার আলদীন।

পাইকগাছা বিএনপির সভাপতি ডা.

আব্দুল মজিদের সভাপতিত্বে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও যশোর-৬ আসনের (কেশবপুর) ধানের শীষের সংসদ সদস্য প্রার্থী আবুল হোসেন আজাদ, পাইকগাছা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হোসেন, বিএনপির নেতা শাহাদাত হোসেন ডাবলু, সেলিম রেজা লাকি, মোস্তফা মোড়ল, সন্তোষ কুমার দে, তুষার কান্তি মণ্ডল, স ম নজরুল ইসলাম, আনোয়ারুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম, আকিজ উদ্দিন, বাবুল মোড়ল, এসএম মোস্তাফিজুর রহমান পারভেজ, মো. শফিউল ইসলাম হাজরা, আবুল কাশেম হাজরা, শেখ খায়রুল ইসলাম, অলিউল ইসলাম, তপন পাল প্রমুখ।

আনোয়ার আলদীন বলেন, শীত-দুর্যোগ, দুঃসময়ে আমরা এই অঞ্চলের অসহায় দুস্থ মানুষদের নিয়মিত সাধ্যমতো সর্বাত্মক সাহায্য-সহযোগিতা করার চেষ্টা করছি। রমজানে মাসব্যাপী তিন শতাধিক গরিব অসহায় মানুষের জন্য ইফতারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই অঞ্চলের রাস্তাঘাট উন্নয়নে আমরা সাধ্যমতো ভূমিকা পালন করছি। মসজিদ, মাদ্রাসা, হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সুপেয় পানির অভাব দূর করতে কয়েকটি গ্রামে, বাজারে ডিপ টিউবওয়েল বসানো হয়েছে। প্রতিটি কল্যাণমূলক কাজে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ওয়াকিবহাল রয়েছেন। তার দিকনির্দেশনা ও বিশেষ সুনজর রয়েছে। এসব কর্মকাণ্ড পরিচালনা করার ক্ষেত্রে যারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সবার জন্য দোয়া কামনা করেন তিনি।

আলদীন আরও বলেন, শীতের কষ্ট সেই বুঝবে যার কাছে শীত নিবারণের মতো কোনো বস্ত্র নেই। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় শীতের কষ্ট থেকে দরিদ্র মানুষদের রক্ষা করা সম্ভব। কপিলমুনি-পাইকগাছা এলাকায় অসহায়, দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে পেরে আমরা খুশি। এই এলাকায় দরিদ্র মানুষের জন্য আমাদের কার্যক্রম চলমান থাকবে ইনশাআল্লাহ। তিনি লন্ডনে চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্যে সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।

আবুল হোসেন আজাদ বলেন, উন্নয়নের রোডম্যাপে অবহেলিত পাইকগাছা-কয়রাকে সংযুক্ত করতে হবে। তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করতে এ অঞ্চলে আনোয়ার আলদীনের কর্মকাণ্ড প্রশংসনীয়। তিনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তির জন্যে সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেন।

ডা. আব্দুল মজিদ বলেন, পাইকগাছা-কয়রার উন্নয়নে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুদৃষ্টি আমাদের জন্য প্রেরণার পাথেয়। আনোয়ার আলদীনের মাধ্যমে আমরা উন্নয়ন ও কল্যাণমূলক কর্মকাণ্ড অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাই। তাকে আমরা এ অঞ্চলের সবাই ভালোবাসি।

এ দিকে নতুন কম্বল পেয়ে শীত কাতর মানুষরা আনন্দ প্রকাশ করেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ত র ক রহম ন র ল ইসল ম ব এনপ র র জন য ব তরণ

এছাড়াও পড়ুন:

ইউজিসির নজরদারি সংস্থার অধীনে যাচ্ছে সাত কলেজ

রাজধানীর আলোচিত সাত কলেজ নিয়ে নতুন সিদ্ধান্তে এসেছে সরকার। এ জন্য আপাতত একটি ‘নজরদারি সংস্থা’ গঠন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) একজন সদস্য এ সংস্থার নেতৃত্ব দেবেন। সাত অধ্যক্ষের যে কোনো একজন সংস্থাটির পরিচালকের দায়িত্ব পালন করবেন। নজরদারি সংস্থার কার্যালয় হবে সাত কলেজের যে কোনোটির ক্যাম্পাসে।

এ ছাড়া সাত কলেজের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নতুন ভর্তি কার্যক্রম শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, ভর্তি ও রেজিস্ট্রার দপ্তর এবং হিসাব বিভাগের প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি সাময়িক কাঠামো থাকবে, যা ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে সাত কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের যাবতীয় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করবে। এসব কাজের জন্য সাত কলেজের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি পৃথক ব্যাংক একাউন্ট পরিচালনা করবে। বিশ্ববিদ্যালয় মর্যাদার স্বতন্ত্র কাঠামো চূড়ান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত এই নজরদারি সংস্থার অধীনে সাত কলেজ পরিচালিত হবে।
সরকারের এসব সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে গতকাল সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। যুগ্ম সচিব শারমিনা নাসরীনের সই করা চিঠিতে এই সুপারিশমালা বাস্তবায়নে উপাচার্যকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক এসএমএ ফায়েজ এই উচ্চ পর্যায়ে গঠিত কমিটির আহ্বায়ক। 
ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) কমিটির সদস্য।
এ কমিটি সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলে একাধিক সভায় মিলিত হয়ে সরকারের কাছে যে সুপারিশমালা পেশ করেছে, তা সরকার গ্রহণ করেছে।
কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক এসএমএ ফায়েজ জাপান সফরে থাকায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এর আগে তিনি সমকালকে বলেছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় সমমর্যাদার স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হওয়ার আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সময়ে সাত কলেজ কীভাবে চলবে, সে বিষয়ে আমরা সরকারকে একটি সুপারিশমালা দিয়েছি।

গতকাল ঢাবি উপাচার্যকে দেওয়া চিঠিতে জানানো হয়, ইউজিসি এবং অধিভুক্ত কলেজের একজন অধ্যক্ষের নেতৃত্বে সাত কলেজের সার্বিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এতে ঢাবি প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রতিনিধি থাকবেন। দ্রুত ঢাবির সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলে বিষয়টি চূড়ান্ত করার জন্য উপাচার্যকে অনুরোধ জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সাত কলেজ হলো– ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন থাকা রাজধানীর এই বড় সাতটি কলেজকে ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধিভুক্ত করা হয়েছিল। প্রায় ৮ বছর ঢাবির অধীনে চলে সাতটি কলেজ। গত ২৭ জানুয়ারি অধিভুক্তি বাতিলের ঘোষণা দেয় ঢাবি। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে এখন সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর প্রক্রিয়া শুরু করেছে অর্ন্তবর্তী সরকার। তার আগ পর্যন্ত এই নজরদারি সংস্থার অধীনে চলবে সাত কলেজ।

কেমন হবে নজরদারি সংস্থার কাঠামো
নজরদারি সংস্থার প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ঢাবির রেজিস্ট্রার দপ্তর মনোনীত কর্মকর্তা, পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ঢাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর মনোনীত কর্মকর্তা, অর্থ ও হিসাব সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সংশ্লিষ্ট শাখা মনোনীত প্রতিনিধি দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া সাত কলেজের অনলাইন ভর্তি কমিটির মাধ্যমে আবেদন সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালিত হবে। কলেজগুলোর শিক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার সাময়িক ব্যবস্থা হিসেবে এই কাঠামো।

সুপারিশে বলা হয়েছে, ‘সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রশাসনিক জটিলতা ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের নানা অসুবিধার কথা বিবেচনায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেসব শিক্ষার্থী বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান শিক্ষা কার্যক্রমের অধীনে রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্বশীলতার সঙ্গে বর্তমান ব্যবস্থা চালু রাখবে।’
আরও বলা হয়েছে, ‘প্রস্তাবিত ব্যবস্থাটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ পর্ষদে (একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট) জরুরি ভিত্তিতে অনুমোদিত হতে হবে।’
উচ্চ পর্যায়ের কমিটির সুপারিশ অনুসারে, ‘সাত কলেজের ভর্তি, পরীক্ষা ও অন্যান্য কার্যক্রম সংক্রান্ত তথ্য আদান প্রদানের জন্য স্ব স্ব কলেজের অধ্যক্ষের নিয়ন্ত্রণে একটি করে হেল্প ডেস্ক থাকবে; নিয়োগপ্রাপ্তির পরেই প্রস্তাবিত সাময়িক কাঠামোর পরিচালক জনবলের প্রস্তাবসহ কাঠামোর কার্যক্রমের অপারেশন ম্যানুয়েল প্রণয়ন করে সিন্ডিকেটে অনুমোদনের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দাখিল করবেন। কমিশন সমন্বিত কাঠামোর সার্বিক তত্ত্বাবধানসহ সময়ে সময়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবে।’


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ