সরকারের চলমান পদক্ষেপ নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
Published: 18th, January 2025 GMT
‘অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রশাসনিক সেক্টর বেশি মনোযোগ পেলেও অর্থনৈতিক সংস্কারে কোনো মনোযোগ নেই। এ সরকারের কোনো অর্থনৈতিক মেন্যুফেস্ট নেই। অনেকেই বলছেন, অর্থনীতির ক্ষেত্রে এই সরকার আগের সরকারের মতোই কাজ করছে। আশঙ্কা করছি, জ্বালানি নিয়ে সামনের গরমে কি হবে তা নিয়ে শঙ্কায় আছি। সামনের বাজেটের কাঠামোর ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আমনের সংগ্রহ অভিযানে দুর্নীতি রয়ে গেছে। ফলে খাদ্য নিরাপত্তা এখনও হুমকিতে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সংস্কার কাজের প্রশংসা করলেও চলমান পদক্ষেপ নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। সামাজিক সুরক্ষা নিয়ে অস্থিরতা চলছে।’
রাজধানীর আগারগাঁও শনিবার সকালে বিআইসিসিতে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি ২০২৪-এর সিম্পোজিয়াম, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, সংস্কার ও জাতীয় বাজেট নিয়ে এক আলোচনায় এসব কথা বলেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ও শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড.
প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রশাসনিক খাতে পদক্ষেপ নিলেও অর্থনৈতিক সংস্কারে সরকারের মনোযোগ নেই বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘শ্বেতপত্র নিয়ে অনেকে ভুল বুঝে তির্যক মন্তব্য ও ভুল ব্যাখ্যা করেছেন। সরকারের ভেতর অনেকে শ্বেতপত্রের সুপারিশ ও পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে অনিশ্চিত বক্তব্য দিয়েছেন, যা আমাদের ব্যথিত করেছে। আমরা চাই সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন হোক।’
ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বিনিয়োগ বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকার যথাযথ মনোযোগ দিচ্ছে না। সরকারের এই মূহুর্তে বিচ্ছিন্ন পদক্ষেপের বাইরে তেমন কোনো অর্থনৈতিক মেনিফেস্টো নাই। সংশোধিত বাজেট না দেওয়ায় এটা অপ্রাসঙ্গিক হয়ে যাচ্ছে। দারিদ্র্য বিমোচন, সংস্কার নিশ্চিত করতে না পারলে সাধারণের পাশাপাশি সংস্কারে জড়িত মানুষরাও ধৈর্যহারা হয়ে পড়ব।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে বাজেট বরাদ্দে অগ্রাধিকার দিতে হবে
বাজেটে বরাদ্দের ক্ষেত্রে দারিদ্র নিরসন, কর্মসংস্থান তৈরি, নারী ও শিশু উন্নয়ন, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবেলায় সহায়ক কার্যক্রমে অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থবিভাগ। আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছর বাজেট প্রণয়ন নিয়ে সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের উদ্দেশে বুধবার এক পরিপত্র জারি করে এসব পরামর্শ দেওয়া হয়।
পরিপত্রে বলা হয়, বাজেটে অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে সরকারের কৌশলগত উদ্দেশ্য অর্জনে সহায়ক হয়, এমন সুনির্দিষ্ট কার্যক্রমের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয়ের প্রাক্কলন এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যেন তা মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত ব্যয়সীমার মধ্যেই হয়। এছাড়া সাধারণভাবে বাজেটে কোনো প্রকার থোক বরাদ্দ প্রস্তাব করা যাবে না।
এতে মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামো পদ্ধতির আওতাভুক্ত সকল মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে বাজেট প্রণয়নের দ্বিতীয় পর্যায়ে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বিস্তারিত বাজেট প্রাক্কলন এবং একইসঙ্গে পরবর্তী ২০২৬-২৭ ও ২০২৭-২৮ অর্থবছরের প্রক্ষেপণ প্রণয়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বাজেট প্রস্তাব আগামী ২৪ এপ্রিলের মধ্যে অর্থ বিভাগের বাজেট অনুবিভাগ, পরিকল্পনা কমিশনের কার্যক্রম বিভাগ, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট বিভাগে পাঠাতে বলা হয়।
পরিপত্রে বাজেট প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে চারটি নীতি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। এর অন্যতম হচ্ছে– মধ্যমেয়াদি বাজেট কাঠামোতে বর্ণিত কৌশলগত উদ্দেশ্য, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, ‘রি-স্ট্রাটেজিসিং দ্য ইকোনমি অ্যান্ড মবিলাইজিং রিসোর্সেস ফর ইক্যুয়িটেবল অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ বিষয়ক টাস্কফোর্স রিপোর্ট এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগের নিজস্ব নীতিমালায় অন্তর্ভূক্ত সরকারের নীতি ও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনা।
এছাড়া সরকারের মৌলিক নীতি নির্ধারণী দলিলগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে দারিদ্র নিরসন, কর্মসংস্থান তৈরি, নারী ও শিশু উন্নয়ন, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবেলায় সহায়ক কার্যক্রমে অগ্রাধিকার ভিত্তিক বরাদ্দ দিতে হবে। জিডিপি প্রবৃদ্ধির সঙ্গে পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় বাড়ার সামঞ্জস্য রাখা, যাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর বর্তমান কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা।
এতে আরও বলা হয়, উন্নয়ন ব্যয়ের বৈদেশিক ঋণের ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ কর্তৃক বৈদেশিক ঋণ বা অনুদানের যে প্রাক্কলন ও প্রক্ষেপণ তৈরি করেছে প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে এর প্রতিফলন নিশ্চিত করতে হবে।