সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের ছয় নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এর পাশাপাশি আরো তিন জনকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের দপ্তর সম্পাদক (সহ-সভাপতি পদমর্যাদা) মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বহিষ্কৃতরা হলেন—জাবি শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক যোবায়ের আল মাহমুদ ও নাইমুর রহমান কৌশিক, সদস্য আবদুল গাফফার ও আল ইমরান, রফিক জব্বার হলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল কাদের মারজুক এবং মীর মশাররফ হোসেন হলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন।

অপরদিকে, অব্যাহতিপ্রাপ্তরা হলেন— জাবি শাখা ছাত্রদলের সদস্য নিশাত আব্দুল্লাহ, শামসুজ্জামান সায়েম এবং হাসিব বিন আব্দুল হাই।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির জরুরি সভা ডাকা হয়। সভার শুরুতে পদবঞ্চিতরা সভা বর্জন করে হট্টগোল ও ভাঙচুর করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এতে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি হলে সভা স্থগিত ঘোষণা করা হয়।

পদবঞ্চিতদের দাবি, আওয়ামী লীগ সরকারের স্টিমরোলার সহ্য করে গত এক যুগ ধরে যারা আন্দোলন করেছেন, নতুন কমিটিতে তাদের বর্জন করা হয়েছে। ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিভিন্নভাবে ভুল বুঝিয়ে একটা পক্ষ এই কমিটি করেছে। 

তারা অভিযোগ করেন, ৫ আগস্টের পরও দলীয় কোনো প্রোগ্রামে যাননি, এমন অনেকের নাম এসেছে এই কমিটিতে। অথচ, দুঃসময়ের ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হয়নি।

প্রসঙ্গত, গত ৮ জানুয়ারি ছাত্রদলের জাবি শাখার নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। ১৭৭ সদস্যের এ কমিটিতে জহির উদ্দিন বাবরকে আহ্বায়ক এবং ওয়াসিম আহমেদ অনীককে সদস্য সচিব করা হয়েছে।

ঢাকা/আহসান/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁদাবাজির কারণে চালের দাম বাড়ছে

কুষ্টিয়ার মোকামে চালের দাম বাড়ার জন্য বিএনপির কয়েকজন নেতার চাঁদাবাজিকে দায়ী করেছেন দলটির একাংশের নেতাকর্মী। তাদের কেউ সম্প্রতি গঠিত জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে পদবঞ্চিত, কেউ আবার প্রত্যাশা অনুযায়ী পদ-পদবি পাননি। 

একই সঙ্গে জেলাজুড়ে চাঁদাবাজি, হাটঘাট দখল, ব্যবসা-বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণও বর্তমান কমিটির নেতারা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকি ওই নেতারা মসজিদের জায়গা ও ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর (বিএটি) জমি দখলেরও অভিযোগ করেন। 

গত ৪ নভেম্বর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর থেকে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মী ওই কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে জেলা শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে দলের রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয়। এর আয়োজন করছে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক কমিটি। কর্মশালায় জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন। এ কর্মসূচি সামনে রেখে অবমূল্যায়িত ও পদবঞ্চিত নেতাকর্মী দুপুর ১২টায় বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শিল্পকলা একাডেমির সামনে যান।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, সকাল ১০টা থেকে শিল্পকলা একাডেমির ভেতরে কর্মশালা শুরু হয়। অন্যদিকে দুপুর ১২টার দিকে শহরের ইসলামিয়া কলেজ মাঠে জড়ো হয়ে শতাধিক নেতাকর্মী বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। শহরের এনএস রোড ঘুরে তারা সাড়ে ১২টার দিকে শিল্পকলা একাডেমির প্রধান ফটকের সামনে যান। তারা ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করলে ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন নেতাকর্মী সেখানেই স্লোগান শুরু করলে হট্টগোল সৃষ্টি হয়। 

এ সময় কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেহাবুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে যান। বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীর কেউ কেউ জোর করে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। পরে প্রধান ফটকের সামনেই সমাবেশ করেন তারা। বেলা সোয়া ১টার দিকে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষ করে তারা চলে যান।

এর আগে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির ৩১ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে গত ৭ জানুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন পদবঞ্চিত নেতাকর্মী। ঢাকা ও কুষ্টিয়ায় তারা এ কর্মসূচি পালন করেন। কর্মসূচির মধ্যে ছিল অনশন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ।

জেলা শিল্পকলা একাডেমির প্রধান ফটকের সামনে সমাবেশে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আইনজীবী শামিমুল হাসান অপু বলেন, দলের নিবেদিতপ্রাণ ও আওয়ামী দুঃশাসনের হামলা-মামলা, নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীকে বাদ দিয়ে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটির নেতাদের কারণে কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব চলছে। তারা মসজিদের জায়গা দখল করছেন, চালের মোকামেও চাঁদাবাজি করছেন। এ কারণে চালের দাম বেড়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শামিমুল হাসান অপু আরও বলেন, জেলা বিএনপির নতুন নেতারা কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ, সারের ব্যবসা, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো (বিএটি) দখলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। 

জেলা কৃষক দলের সাবেক সভাপতি গোলাম কবির বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে বিএনপির কমিটিতে ঢুকিয়ে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। এই কমিটি মানি না।’

নতুন কমিটির নেতারা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ অমান্য করছেন বলে অভিযোগ করেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বশিরুল আলম চাঁদ। তিনি বলেন, তারা নিজেদের মতো চলে। ‘মামা-ভাগ্নে কমিটি’ বাতিল না হলে তীব্র আন্দোলন হবে।

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে পুনর্বাসনের অভিযোগ তুলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন জেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মেজবাউর রহমান পিন্টু। কমিটি বাতিল না হলে বিক্ষোভ-হরতালের মতো কর্মসূচির মাধ্যমে কুষ্টিয়া অচল করে দেওয়ার সতর্কবার্তা দেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক কাজল মাজমাদার।

এদিকে চালের দাম বেড়ে যাওয়া ও চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন বলেন, ‘আমি কর্মশালায় আছি। তারা (বিক্ষুব্ধ নেতারা) যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা অমূলক ও কল্পনাপ্রসূত। এসব কথার কোনো সারমর্ম নেই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চাঁদাবাজির কারণে চালের দাম বাড়ছে মোকামে
  • চাঁদাবাজির কারণে চালের দাম বাড়ছে