জামায়াতের সম্মেলন উদ্বোধন করতে গিয়ে অঝোরে কাঁদলেন শহীদ সাকিবের বাবা
Published: 18th, January 2025 GMT
রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা ময়দানে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা ও মহানগরের কর্মী সম্মেলন। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকাল সোয়া ৯টায় কর্মী সম্মেলনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহীর শহীদ সাকিব আনজুমের বাবা সাইদুল হক।
মঞ্চে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। বলেন, “ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারকে বিদায় করতে গিয়ে আমার কলিজার টুকরা সাকিব শহীদ হয়েছে। আমি একজন গর্বিত পিতা। আমার সাকিবের মতো হাজারও ছাত্র-জনতা যে স্বপ্ন নিয়ে দেশের জন্য জীবন দিয়েছে, সেই স্বপ্ন পূরণ করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনোভাবেই ব্যর্থ হওয়া যাবে না।”
সাকিব আনজুম রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ছিলেন। গত ৫ আগস্ট রাজশাহী নগরের শাহমখদুম কলেজের কাছে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। পরে ওই এলাকার একটি বাসায় তিনি মারা যান। তাকে হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয়নি। এর কিছুক্ষণ পরই আওয়ামী সরকারের পতন ঘটে।
আজ শনিবার রাজশাহী জেলা ও মহানগর জামায়াতের এই কর্মী সম্মেলন সাকিব আনজুমের বাবা উদ্বোধক করেন। তিনি রাজশাহীর আরডিএ মার্কেটের একজন ব্যবসায়ী। এই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.
দীর্ঘ ১৫ বছর পর রাজশাহীতে বড় পরিসরে জামায়াতের এমন কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে উচ্ছ্বসিত নেতাকর্মীরা। সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জামায়াতে ইসলামী ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মাদ্রাসা মাঠে প্রবেশ করছেন। সম্মেলন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছেন রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমির ড. মো. কেরামত আলী।
সম্মেলনে প্রায় লক্ষাধিক নেতাকর্মী সমবেত হওয়ার আশা করা হচ্ছে। কর্মী সম্মেলন ছাড়াও এ দিন দুপুরে চিকিৎসক সমাবেশ এবং বিকাল ৩টায় মহিলা সদস্য সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। একইদিন বাদ মাগরিব ব্যবসায়ীদের নিয়ে রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি ভবনে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
ঢাকা/কেয়া/ইমন
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীও মনে করেন, ট্রান্স নারী মানেই নারী নন
যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়ের পর প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার এখন আর মনে করেন না, একজন ট্রান্স নারী আইনি বা প্রাকৃতিক অর্থে নারী।
প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র এমনটাই জানিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টের ঘোষিত এই রায় ‘সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা’ এনেছে। রায় অনুযায়ী, ট্রান্স নারীরা আইনি দৃষ্টিকোণ থেকে নারীর সংজ্ঞায় পড়েন না।
২০২২ সালে এক সাক্ষাৎকারে স্যার কিয়ার বলেছিলেন, ‘ট্রান্স নারী অর্থই নারী’। তিনি এটাও বলেছিলেন, এটা ‘সঠিক নয়’ যে শুধু নারীর সার্ভিক্স (জরায়ুর মুখ) থাকে।
সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে স্টারমারের মুখপাত্র বলেন, ‘না, সুপ্রিম কোর্ট ইকুয়ালিটি অ্যাক্ট অনুযায়ী স্পষ্ট করেছেন, নারী মানে একজন জৈবিক নারী। আদালতের রায়ে এটি স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে।’
মুখপাত্র আরও যোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন নারী মানে একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী। আদালত এটাকে একেবারে পরিষ্কার করেছেন। তিনি এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। কারণ, এটি পরিষ্কার নির্দেশনা দেয় এবং আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি করে।
কখন মত পাল্টালেন স্টারমার
এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আগেও বলেছেন, নারী মানে একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী। আদালতের রায় সেই অবস্থানকেই সমর্থন করেছে।’
স্টারমার অতীতে নারী সংজ্ঞা নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন এবং তাঁর বক্তব্য বারবার পরিবর্তিত হয়েছে। ২০২৩ সালে তিনি বলেছিলেন, ‘৯৯ দশমিক ৯০ শতাংশ নারীর ‘পুরুষের জননাঙ্গ’ নেই। পরে আবার বলেন, নারী মানে ‘একজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী’। এরপর স্যার টনি ব্লেয়ারের মতামতকে সমর্থন করে তিনি আবার বলেন, ‘নারীর থাকে নারীদের জননাঙ্গ’ এবং পুরুষের থাকে ‘পুরুষের জননাঙ্গ’।
টয়লেট ব্যবহার ও নতুন নির্দেশনা
নারী ও সমতাবিষয়ক মন্ত্রী ব্রিজেট ফিলিপসন বলেন, ট্রান্স নারীরা এখন নারীদের প্রসাধনাগার ব্যবহার করতে পারবেন না।
ফিলিপসন বলেন, প্রসাধনাগার বা অন্যান্য একক-লিঙ্গ সুবিধা জৈবিক লিঙ্গের (নারী-পুরুষ) ভিত্তিতে হওয়া উচিত।
তবে মন্ত্রী বলেন, অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও জনসমাগম এলাকায় ইতিমধ্যে নারী-পুরুষ সবার জন্য একক প্রসাধনাগার চালু করেছে। ভবিষ্যতেও ছোট-বড় প্রতিষ্ঠানগুলো এ বিষয়ে ‘উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে’।