ঢেলে সাজানোর ঘোষণা দিয়ে এবারের বিপিএলে নতুনত্ব আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর দায়িত্বহীন আচরণ সেই প্রতিশ্রুতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আম্পায়ারিং, অসদাচরণ, ক্রিকেটারদের সুযোগ-সুবিধা এবং পারিশ্রমিক ইস্যুতে চলমান আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে চমকপ্রদ এক তথ্য উঠে এসেছে—চুক্তিপত্র ছাড়াই বিপিএলে খেলছেন ক্রিকেটাররা। বিসিবি নিজেও এই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নয়।  

জাতীয় একটি দৈনিককে রাজশাহীর এক ক্রিকেটার বলেছেন, ‘টাকা তো পরের বিষয়, চুক্তিপত্রই হাতে পাইনি এখনো।’ পরে জানা যায়, শুধু রাজশাহী নয়, বিপিএলে এখন অবধি কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির ক্রিকেটারই পায়নি চুক্তিপত্র। এটি মূলত দিয়ে থাকে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। অথচ বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব নাজমুল আবেদিন ফাহিম শুক্রবার বললেন, তিনি এসব কিছু জানেন না।

এই বিষয়টি নিয়ে ফাহিমের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার প্রশ্ন উঠলেও তাকে রক্ষা করতে অন্য পরিচালক ইফতেখার আহমেদ মিঠু উত্তর দেন, ‘যখন আমরা বিষয়টি জেনেছি, তখনই বোর্ড প্রেসিডেন্টসহ আমরা মিলে রাজশাহীর সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছি।’

মিঠু আরও জানান, পারিশ্রমিক নিয়ে ক্রিকেটাররা অভিযোগ করলে বিসিবি ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন, ‘যারা সমস্যায় পড়েছে, তাদের আমাদের জানাতে হবে। টিম ম্যানেজমেন্ট বা ক্রিকেটাররা অভিযোগ করলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

এদিকে, চুক্তিপত্র ছাড়াও বিপিএলে অর্থনৈতিক জটিলতা প্রকট আকার ধারণ করেছে। অনেক ক্রিকেটার এখনো পারিশ্রমিকের এক টাকাও পাননি। কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটারদের মোট পাওনার মাত্র ২৫ শতাংশ পরিশোধ করেছে। এসব বিষয়ে বিসিবি পরিচালক ফাহিম বলেন, ‘পারিশ্রমিক নিয়ে সমস্যা হলে বিষয়টি আমাদের কানে আসবে। রাজশাহীর ক্ষেত্রে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। অন্যদের ক্ষেত্রেও এমনটি হলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’

বিপিএলের নানা অনিয়মের জন্য বিসিবি সরাসরি ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকেই দায়ী করছে। ফাহিম বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা ছিল এটি সেরা বিপিএল হবে। যারা এই যাত্রায় যুক্ত হবেন, তারা দায়িত্বশীল আচরণ করবেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই আমরা সেই প্রত্যাশার প্রতিফলন দেখিনি।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব প এল ব যবস থ ব প এল ব ষয়ট

এছাড়াও পড়ুন:

কুয়েট শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান হাসনাত আবদুল্লাহর

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আমরণ অনশন করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করে শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। 

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে হাসনাত আবদুল্লাহ শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান। 

সেখানে তিনি লেখেন, “শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রহসনমূলক আচরণ করার পরিণতি কী হতে পারে, তা চব্বিশের জুলাইয়ে দেখেছে বাংলাদেশ। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়েও আমরা এমন ফ্যাসিবাদী আচরণ দেখতে চাই না।”

কুয়েটের শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির প্রতি একাত্মতা পোষণ করেন জানিয়ে তিনি বলেন, “কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি, দ্রুত শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।”

সোমবার (২১ এপ্রিল) পূর্বনির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে ৩২ জন আমরণ অনশন শুরু করেন। বিকেল ৩টায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টারের বারান্দার পূর্বদিকে অবস্থান নেন। এরপর সেখানে বিভিন্ন বিভাগের ৩২ জন শিক্ষার্থী আনুষ্ঠানিকভাবে অনশন শুরু করেন।  অনশনরত ৩২ শিক্ষার্থীর মধ্যে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে ছাত্রদল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে আহত হন অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।

ওই দিন দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে কমিটি করা হয়। রাতে খানজাহান আলী থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করে প্রশাসন।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সব রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনকে লাল কার্ড দেখান শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে তারা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।

২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা খুলনা থেকে ঢাকায় এসে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেন। এতে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার, উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি জানানো হয়।

এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের ৯৯তম (জরুরি) সভায় সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে সব শিক্ষার্থীকে হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।


১৮ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষের ঘটনায় প্রকৃত দোষী শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করাসহ পূর্ণাঙ্গ তদন্তের জন্য গঠিত কমিটি গত রোববার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।

এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে নগরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার হোসেন আলী নামের এক ব্যক্তি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আমলি আদালতে মামলা করেন।

আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থীরা ১৩ এপ্রিল বিকেল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিলে, আন্দোলন আবারও দানা বাঁধতে থাকে।

গত সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে আগামী ২ মে থেকে সব আবাসিক হল শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া ও ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।

এর মধ্যে গত মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবির ঘোষণা দেন। ঘোষণার পর আন্দোলনকারীরা কুয়েটের ছেলেদের ছয়টি হলের তালা ভেঙে হলগুলোতে অবস্থান নেন।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজশাহীতে রাস্তায় অশালীন অঙ্গভঙ্গি, দুই ‘বখাটে’ গ্রেপ্তার
  • ভারতের আচরণ শিশুসুলভ: পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী
  • বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন পড়তে এসেছ, এলাকার কলেজে পড়লেই তো পারতে: শিক্ষার্থীকে রেজিস্ট্রার
  • বিসিবির চাকরিতে ফিরছেন না আম্পায়ার সৈকত
  • কুয়েট শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান হাসনাত আবদুল্লাহর
  • কর্মস্থলে আচরণ কেমন হলে ভালো
  • যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কংগ্রেস সদস্য ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চীনের পাল্টা নিষেধাজ্ঞা
  • যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কংগ্রেস সদস্য ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার ওপর চীনের পাল্টা নিষেধাজ্ঞা