ঘন সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে থোকায় থোকায় ঝুলছে রসালো কমলা। গাছজুড়ে রসে টইটুম্বুর পাকা কমলার থোকা। বাগানজুড়ে যেন রসালো কমলার রঙিন হাসি। প্রথমবারের মতো দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে পতিত জমিতে কমলার বাগান করে তাক লাগিয়েছেন বদরুল আলম (বুলু) নামের এক যুবক। মানুষ কমলা বাগান ঘুরে ঘুরে নেড়েচেড়ে দেখছেন। আমদানি কমানোর পাশাপাশি পুষ্টি চাহিদা পূরণে কমলা বাগান তৈরিতে সবধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে অবস্থিত এ কমলা বাগান। উপজেলার নিতাইশাহ এলাকার কমলা চাষি বদরুল আলম বুলুর বাগানে ফলটির বাণিজ্যিক চাষ হচ্ছে। কৃষি ডিপ্লোমা শেষ করে চাকরি না পেয়ে চোখে মুখে হতাশার ছাপ নিয়ে চার বছর আগে নিজস্ব চার বিঘা পতিত জমিতে তৈরি করেন কমলার এই বাগান। তার বাগানে রয়েছে দার্জিলিং, চায়না, ভুটানসহ কয়েকটি জাতের কমলার গাছ। ফলনও হয়েছে ভালো। রং ও আকার দেখে গাছ থেকে পছন্দমতো কমলা নিয়ে দর্শনার্থীদের হাতে তুলে দিচ্ছেন বাগান মালিক। 

বাগানে গিয়ে কথা হয় মোজাফফর, মনিরুল ইসলাম, নার্গিস আক্তারসহ কয়েকজন দর্শনার্থীর সাথে। তারা জানান, আমাদের দেশের মাটির মান খুবই ভালো। এই মাটিতে সব ধরনের ফল উৎপাদন হয়ে থাকে। ঘোড়াঘাটে এই কমলার বাগানের কথা অনেক শুনেছি। দেখতে এসে খুব ভালো লেগেছে। এর আগে কখনো এমন কমলার বাগান দেখেনি। ভারত থেকে আমদানিকৃত কমলা খেয়েছি। আজ আমার দেশের মাটি থেকে উৎপাদিত কমলা খেলাম। অনেক মিষ্টি এবং সুস্বাদু। 

এ সময় বাগানে কাজ করা শ্রমিক আতাউর বলেন, “বাগান তৈরির শুরু থেকে আমি এখানে কাজ করে আসছি। বাগানের প্রতিটি গাছে প্রচুর কমলা ধরেছে। এগুলো অনেক মিষ্টি এবং সুস্বাদু। প্রতিদিন স্থানীয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা আসছেন এই বাগান দেখতে। এছাড়াও বাগান থেকে তারা টাটকা কমলা কিনছেন। এসব কমলা আমরা ২০০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি করছি।” 

বাগান মালিক বদরুল আলম বুলু বলেন, “হতাশার ছাপ কাটিয়ে এখন কৃষিতে সফলতা বয়ে এনেছি। বাগানে থাকা ৪০০টি কমলা গাছের প্রতিটিতে খরচ হয়েছে দেড় হাজার টাকা। আর প্রতিটি গাছ থেকে কমলা বিক্রি হচ্ছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার মতো। বাগানটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে ৪ থেকে সাড়ে ৪ লাখ টাকা। আশা করছি এই মৌসুমে প্রায় ৭ লাখ টাকার কমলা বিক্রি করবো।” 

ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান বলেন, “দেশে কমলার উৎপাদন বৃদ্ধি ও আমদানি নির্ভরতা কমানোর পাশাপাশি পুষ্টি চাহিদা মেটাতে কমলার বাগান তৈরিতে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি বিভাগ। এই উপজেলায় ৩০ হেক্টর জমিতে রয়েছে কমলার বাগান। যেখানে কর্মসংস্থান আছে শতাধিক বেকার যুবকের।”

ঢাকা/মোসলেম/ইমন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কমল র ব গ ন র কমল উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবি

হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানকে স্মারকলিপি দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা–কর্মচারী। 

বৃহস্পতিবার ২৮ হাজার ৩০৭ কর্মীর সই করা এক হাজার ৪২৮ পৃষ্ঠার এই স্মারকলিপি উপদেষ্টার দপ্তরে জমা দেওয়া হয়। 

এতে বলা হয়, সংস্কার দাবির কারণে মাঠপর্যায়ে কোনো কর্মসূচি না থাকা সত্ত্বেও গত ১৬ অক্টোবর পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ১০ জন কর্মকর্তাকে বিনা নোটিশে চাকরিচ্যুত করে। একই দিন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরদিন সকাল থেকে শুরু হয় কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তার এবং আরও ১৪ জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। এই ঘটনায় সমিতির কর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশার জন্ম দেয়, যার ফলে কিছু এলাকায় সাময়িক বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটে।

স্মারকলিপি আরও বলা হয়, আরইবি এখনও মামলা, চাকরিচ্যুতি, বদলি, সাসপেন্ড বিভিন্ন হয়রানিমূলক পদক্ষেপ অব্যাহত রেখেছে। শুধু স্মারকলিপিতে সই দেওয়ার কারণেও সম্প্রতি মাদারীপুর ও রাজশাহীর কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রায় অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সংযুক্ত করে তদন্তের নামে হয়রানি ও শাস্তি দেওয়ার চেষ্টা চলছে। চাকরি হারিয়ে, মামলা ও জেল-জুলুমের শিকার হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো খুবই মানবেতর জীবনযাপন করছে। এমনকি ক্ষতিগ্রস্তদের ছেলেমেয়ের পড়াশোনাও চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এর আগে গত ২৫ জানুয়ারি সমিতির ৩০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর সই করা স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। 

স্মারকলিপিতে মামলা প্রত্যাহার ও চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহালের দাবি জানানো হয়েছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ