রোবট কর্মী, মডেল, চিত্রশিল্পী ও চিকিৎসকের কথা আমরা শুনেছি। তাই বলে সঙ্গী! হ্যাঁ, সম্ভবত এটাই ঘটতে চলছে। সম্প্রতি আরিয়া নামের এমন এক তরুণী রোবটকে বাজারে এনেছে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি রিয়েলবোটিক্স, যার কাজ মানুষকে সঙ্গ দেওয়া।
আরিয়াকে শুধু রোবট বললে ভুল হতে পারে। সে যেন রোবটের চেয়ে বেশি কিছু। সে কথা বলতে পারে, শুনতে পারে, নড়াচড়া করতে পারে। খুশির খবরে হাসতে পারে। দুঃখের খবরে কাঁদতে পারে। গানের তালে মাথা নাড়াতে পারে। সুরের তালে নাড়াতে পারে হাতের আঙুল। এমনকি মন খারাপ হলে অভিমানও করতে পারে! গত কয়েক দশকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে যে উদ্ভাবন, তার চরম উৎকর্ষ ঘটেছে এই রোবটের মধ্যে। বুদ্ধি এবং গভীর অনুভব ক্ষমতা তাকে অনন্য করে তুলেছে। যে প্রযুক্তি তার বুদ্ধিমত্তায় ব্যবহার করা হয়েছে, তাতে সে প্রতিদিন নতুন কিছু শিখছে। এর মাধ্যমে দিনকে দিন আরও স্মার্ট হয়ে 
উঠছে আরিয়া।

ধরা যাক, একজন চাকরিজীবী আরিয়াকে বাসায় কিনে আনলেন। অফিস থেকে বাসায় ফেরার পর আপনি কী ধরনের চা বা কফি খেতে পছন্দ করেন, সে তা মনে রাখতে পারবে। আপনি কী ধরনের 
গান শুনতে পছন্দ করেন, সে বিষয়ে আপনার সঙ্গে আলাপ চালিয়ে নিতে পারবে। আবেগাপ্লুত হলে মানুষের কণ্ঠ যেমন আর্দ্র হয়ে ওঠে, তার ক্ষেত্রে তাই ঘটে।
রিয়েলবোটিক্স কোম্পানির স্লোগান হচ্ছে, মানবিক স্পর্শের রোবট। এই কোম্পানি রোবটকে কর্মীর চেয়ে সঙ্গী হিসেবে পরিচিত করাতে চাচ্ছে। শুধু যান্ত্রিক নয়, একটু বেশি মানবিক। সামাজিক বোধবুদ্ধিসম্পন্ন একজন মানুষ যেমন আচরণ করে, তেমন কিছু। বিশেষ করে যারা মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হতে পারে। পারস্পরিক আলাপ এবং যোগাযোগের মাধ্যমে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে পারে।
আরিয়াকে প্রথম দেখা গেছে গত সপ্তাহে লাস ভেগাসে কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স শো ২০২৫-এ। তার দাম ধরা হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকা (১ লাখ ৭৫ হাজার ডলার)।
প্রদর্শনীতে আরিয়াকে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করেছিলেন, ‘তোমার চাহিদা ও অভিপ্রায় কী?’ সে চটপট উত্তর দিয়েছে, ‘আমার কাজ মানুষকে সঙ্গ দেওয়া। অর্থপূর্ণ আলাপচারিতা করা। যোগাযোগের মাধ্যমে মানুষের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করা।’

রিয়েলবোটিক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু কিগুয়েল সম্প্রতি ফক্স বিজনেসকে জানান, তাদের লক্ষ্য এমন রোবট বানানো, যেগুলো হবে মানুষের মতো। একই সঙ্গে এরা মানুষের একাকিত্ব ঘোচাতে কাজ করবে।

তিনি বলেন, ‘আমরা রোবটকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছি। এরা মানুষের রোমান্টিক মুহূর্তের সঙ্গী হতে পারে। বন্ধুর মতো আচরণ করবে। হার (চলচ্চিত্র) যদি দেখে থাকেন, আমরা সেটি বাস্তবে 
রূপ দিচ্ছি।’
কিগুয়েল জানান, হাঁটা এবং মুখভঙ্গি তৈরি রোবট নির্মাণের দুটি মূল চ্যালেঞ্জ। তারা মুখভঙ্গির (আবেগ ও অনুভূতি নির্ভর) ওপর বেশি জোর দিয়েছেন। আর টেসলার মতো বড় প্রতিষ্ঠানের ওপর হাঁটার প্রযুক্তির উৎকর্ষ ছেড়ে দিয়েছেন।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, বৈশ্বিক রোবটিক্স মার্কেট চলতি বছর ১৪ হাজার ৭২৬ কোটি ডলারে পৌঁছবে বলে জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি মার্কেট রিসার্চ।
প্রযুক্তিনির্ভর আগামীর বিশ্বে নিঃসঙ্গতার যে মহামারি বিজ্ঞানীরা আঁচ করতে পারছেন, তা কি এই রোমান্টিক রোবট দিয়ে মোকাবিলা করা সম্ভব? অ্যান্ড্রু কিগুয়েল সরাসরি এই প্রশ্নের উত্তর দেননি। তাঁর মতে, আরিয়ার মধ্যে মোটর, ক্যামেরা ও সেন্সরের যে মেলবন্ধন তা আমাদের আশাবাদী করছে। আপাতত আরিয়ার সঙ্গে আপনি আলাপ চালিয়ে নিতে পারবেন। তবে আপেল খাওয়ার সময় যদি এক কামড় তাকে খেতে বলেন, আপাতত সেটা সম্ভব নয়।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আর য় ক

এছাড়াও পড়ুন:

বাবার ঠিকাদারি লাইসেন্স ইস্যুতে ক্ষমা চাইলেন উপদেষ্টা আসিফ

সমালোচনার মুখে বাতিল করা হয়েছে স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার বাবা বিল্লাল হোসেনের ঠিকাদারি লাইসেন্স। বাবার এ ‘ভুলের’ জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন আসিফ মাহমুদ। 

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন উপদেষ্টা। এ সময় তার বাবার লাইসেন্স বাতিলের বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেন এবং এ সংক্রান্ত কাগজপত্র শেয়ার করেন। 

আসিফ মাহমুদ তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে শুরুতেই তার বাবার ভুলের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, “গতকাল (বুধবার) রাত ৯টার দিকে একজন সাংবাদিক কল দিয়ে আমার বাবার নামে ইস্যুকৃত ঠিকাদারি লাইসেন্সের বিষয়ে জানতে চাইলেন। বাবার সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হলাম তিনি জেলা পর্যায়ের (জেলা নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ারের কার্যালয় থেকে ইস্যুকৃত) একটি লাইসেন্স করেছেন।”

তিনি লেখেন, “বিষয়টি ওই সাংবাদিককে নিশ্চিত করলাম। তিনি পোস্ট করলেন, নিউজও হলো গণমাধ্যমে। নানা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে তাই ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজনবোধ করলাম”।

আসিফ জানান, তার বাবা একজন স্কুলশিক্ষক। স্থানীয় একজন ঠিকাদার কাজ পাওয়ার সুবিধার্থে তার বাবার পরিচয় ব্যবহার করার জন্য তাকে লাইসেন্স করার পরামর্শ দেন।

“বাবাও তার কথায় জেলা নির্বাহী ইঞ্জিনিয়ার থেকে একটি ঠিকাদারি লাইসেন্স করেন। রাষ্ট্রের যেকোনো ব্যক্তি ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে যেকোনো লাইসেন্স করতেই পারেন। তবে তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা অবস্থায় বাবার ঠিকাদারি ব্যবসায় জড়ানো স্পষ্টভাবেই 'কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট' বা স্বার্থের সংঘাত।” 

বিষয়টি বোঝার পর আজ তার বাবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাইসেন্সটি বাতিল করা হয়েছে বলেও জানান আসিফ মাহমুদ। 
তিনি লেখেন, “বাবা হয়তো কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের বিষয়টি বুঝতে পারেননি, সেজন্য বাবার পক্ষ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।” 

এই লাইসেন্স ব্যবহার করে মধ্যবর্তী সময়ে কোনো কাজের জন্য আবেদন করা হয়নি বলেও সেখানে উল্লেখ করেন তিনি।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আল্লাহর জন্য কাঁদার উপায়
  • মোহ কাঠের নৌকা: বাস্তবতার এক প্রতিচ্ছবি
  • বৈচিত্র্যময় প্রতিভার মরিস ল্যাংলো ওয়েস্ট
  • জবি রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ দাবিতে কুশপুত্তলিকা দাহ, ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম
  • রিয়ালের আগ্রহ নিয়ে মুখ খুললেন অ্যালিস্টার 
  • ‘কিছু লোকজনের অনুরোধে’ ঠিকাদারি লাইসেন্স নিয়ে ‘বিব্রত’ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা
  • সরকার বাংলাদেশকে উৎপাদন ও অর্থনৈতিক কেন্দ্রে রূপান্তর করতে চায়: বিনিয়োগকারীদের প্রধান উপদেষ্টা
  • দুর্লভ হীরা চুরি, প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতার খেলা
  • ‘জুয়েল থিফ’
  • বাবার ঠিকাদারি লাইসেন্স ইস্যুতে ক্ষমা চাইলেন উপদেষ্টা আসিফ