চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আগের মতোই বেসরকারি কারা পরিদর্শক নিয়োগ নিয়ে ‘বিতর্ক’ সৃষ্টি হয়েছে। একসময় নিরপেক্ষ দানবীর, সমাজসেবক ও মানবাধিকারকর্মীরা নিয়োগ পেতেন। আওয়ামী লীগ সরকার সেই ধারা ভেঙে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের নিয়োগ দিয়ে প্রথম বিতর্ক সৃষ্টি করে। ৫ আগস্টের পরও সেই ধারা অব্যাহত রয়েছে। নিরপেক্ষ ও প্রকৃত সমাজসেবকদের নিয়োগের পরিবর্তে কারা পরিদর্শক হিসেবে রাজনৈতিক দলীয় ব্যক্তিরা নিয়োগ পেয়েছেন। ছাত্রলীগের জায়গায় এবার ছাত্রদল, মহিলা দল ও বিএনপির আট নেতা নিয়োগ পেয়েছেন। এ ছাড়া নিয়োগ পেয়েছেন একজন ছাত্র সমন্বয়ক, এলডিপির একজন নেতা, একজন এনজিওকর্মী এবং একজন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধি। নতুন নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে একসময় কারাগারে খাবার সরবরাহকারী ঠিকাদারও রয়েছেন।
অলাভজনক পদ হলেও কারা পরিদর্শক হয়ে অতীতে ছাত্রলীগ-আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে কারাগারে জামিনে বন্দি মুক্তি বাণিজ্য, অবৈধ সুযোগ-সুবিধা পাইয়ে দেওয়া, নিষিদ্ধ মোবাইল, মাদক সরবরাহসহ নানা অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। 
সংশ্লিষ্টরা জানান, ১২ পদে নিয়োগ পেতে এবার বিএনপি ছাড়াও দেড় শতাধিক উন্নয়নকর্মী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, সমন্বয়ক ও মানবাধিকারকর্মী আবেদন করেছিলেন। তাদের মধ্য থেকে বৃহস্পতিবার ১২ জন কারা পরিদর্শক নিয়োগ করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড.

মো. জিয়াউদ্দীন।

ড. মো. জিয়াউদ্দীন বলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন থেকে এ পদে নিয়োগের যে সুপারিশ এসেছিল, তার আলোকে এদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এদের বেশির ভাগেরই রাজনৈতিক পরিচয় জানা নেই। 
নতুন কারা পরিদর্শক জোবাইরুল আলম মানিক বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম জেলার একজন সমন্বয়ক। অন্যরা হলেন– চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম তৌহিদ, বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আতাউল্লাহ,  দক্ষিণ জেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক, নগর যুবদলের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক, চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সদস্য জাফর আহম্মদ, নগর মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক কামরুন নাহার লিজা ও নগর মহিলা দলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মৎ সুলতানা বেগম। বাকি তিনজন হলেন– এলডিপির যুব সংগঠন দক্ষিণ জেলা লিবারেল গণতান্ত্রিক যুবদলের দপ্তর সম্পাদক উজ্জল বরণ বিশ্বাস, এনজিও আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন এবং বদরপাতি যুব গোষ্ঠী নামে একটি সংগঠনের সভাপতি সৈয়দ আবুল বশর। এদের মধ্যে বিগত বিএনপি সরকার আমলে কারাগারে খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদার ছিলেন মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন। 

নতুন কারা পরিদর্শক নাসির উদ্দিন বলেন, আজ থেকে ২০ বছর আগে কারাগারে ঠিকাদার হিসেবে কাজ করেছি। নিয়ম অনুযায়ী টেন্ডারে অংশ নিয়ে কারাগারের খাদ্য সরবরাহ করেছি। 
নগর মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক কামরুন নাহার লিজা বলেন, কারা পরিদর্শক পদে আগে কখনও ছিলাম না। তাই অভিজ্ঞতা না থাকলেও বন্দিদের কল্যাণে কাজ করতে হবে সেটা জানি। সেভাবেই কাজ করব।  

ছাত্র সমন্বয়ক জোবাইরুল ইসলাম মানিক বলেন, এটা আমার কাছে একটি চ্যালেঞ্জ। কারাগারে অনিয়ম-দুর্নীতি বন্ধ, শৃঙ্খলা ও বন্দিসহায়ক পরিবেশ রক্ষায় কাজ করব। 
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) চট্টগ্রাম জেলা সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী বলেন, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানুষের আশা ছিল মানবিক, দানশীল ও প্রকৃত মানবসেবকরাই এ পদ পাবেন। আওয়ামী লীগ তাদের দলীয় লোক নিয়োগ দিয়ে কারাগার অনিয়মের আখড়ায় পরিণত করেছিল, তা থেকে আমরা বের হতে পারলাম না। এবারও দলীয় লোক নিয়োগ পাওয়ায় ভালো কিছু হবে বলে মনে হচ্ছে না। শুধু চেহারা ছাড়া আর কোনো পরিবর্তন হয়নি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ দল র স ব ক সমন বয়ক য বদল র সরবর হ ক জ কর ব এনপ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

ঝালকাঠিতে পানির দাবিতে পৌরসভা ঘেরাও, বিক্ষোভ

ঝালকাঠি পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডে পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বেশিরভাগ সময় মিলছে না পৌরসভার সরবরাহ করা পানি। দুই বছর ধরে চরম দুর্ভোগে আছেন এই ওয়ার্ডের ১৫ হাজার বাসিন্দা। পর্যাপ্ত পানি সরবরাহের দাবিতে পৌরসভা ভবন ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন তারা। 

বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে শত শত নারী- পুরুষ পৌরসভা ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন। তারা এক ঘণ্টা ধরে ভবন ঘেরাও করে রাখেন। পরে ঝালকাঠি প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন তারা। 

৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জানান, ঝালকাঠি শহরের কাঠপট্টি, লঞ্চঘাট, কলাবাগান, পৌর খেয়া ঘাটসহ বিভিন্ন এলাকায় মিলছে না পৌরসভার সরবরাহ করা পানি। প্রায় দুই বছর ধরে দিনের বেশিরভাগ সময়ই পানি পাচ্ছেন না এসব এলাকার বাসিন্দারা। গ্রীষ্ম মৌসুম শুরু হওয়ার পর পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। খাওয়া, গোসল, রান্নার কাজে বিপাকে পড়তে হচ্ছে। পাম্প নষ্ট হওয়া ও নাজুক সরবরাহ ব্যবস্থার অজুহাত দিয়ে নিজেদের গাফিলতি আড়াল করছে কর্তৃপক্ষ।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন লঞ্চঘাট এলাকার বাসিন্দা আনিস হাওলাদার, কাঠপট্টি এলাকার মিলন মৃধা, লিজা আক্তার ও পারভিন বেগম। 

ঝালকাঠি পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী (পানি শাখার দায়িত্বে) কামরুল হাসান বলেন, নিরবচ্ছিন্ন পানি সরবরাহের জন্য সনাতন পদ্ধতি বাদ দিয়ে পুরো প্রক্রিয়াকে আধুনিকায়ন করে শিগগিরই এ সমস্যা সমাধান করা হবে। 

ঢাকা/অলোক/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঝালকাঠিতে পানির দাবিতে পৌরসভা ঘেরাও, বিক্ষোভ
  • এডিবির বিনিয়োগ করা একাধিক প্রকল্প কাজে আসছে না
  • বাজারে খুলনার তরমুজ বেশি, চিনবেন কীভাবে
  • চীনের ফেরত দেওয়া বোয়িং কিনতে চায় ভারত
  • বাংলাদেশে ক্যাস্ট্রলের পরিবেশক হিসেবে নিয়োগ পেল রক এনার্জি
  • নেত্রকোনায় সাবস্টেশনে অগ্নিকাণ্ড, জেলা কারাগার সাড়ে ৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন
  • ‘বিল তো ঠিকই দিই, পানি পাই না এক ঘণ্টাও’
  • শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৩০ হাজার টাকা করার দাবি টিইউসির
  • মঙ্গল গ্রহে মানব বসতি স্থাপনে যত চ্যালেঞ্জ
  • ত্রুটিপূর্ণ আমদানি বিলের দায় শোধ করতে পারবে ব্যাংক