পাতে ফিরছে দেশি প্রজাতির অন্তত ৪০ মাছ। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি প্রজাতিগুলোর সফল কৃত্রিম প্রজননে সক্ষম হয়েছেন।
এসব মাছের মধ্যে রয়েছে পাবদা, গুলশা, ট্যাংরা, কৈ, মাগুর, শিং, গুজি আইড়, দেশি সরপুঁটি, জাতপুঁটি, বাটা, বালাচাটা, কুঁচিয়া, কুর্শা, খলিশা, ভেদা, গুতুম, ঢেলা, গজার, ফলি, চিতল, গনিয়া, মহাশোল, বৈরালি, ভাগনা, আঙ্গুস, বাতাসি, পুঁইয়া, কাকিলা, পিয়ালী, রানীসহ ৪০ প্রজাতি।
বিএফআরআইয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মশিউর রহমান জানান, তাদের ইনস্টিটিউটে আগে ময়মনসিংহ অঞ্চলের স্বাদুপানির বিলুপ্তপ্রায় মাছ সংরক্ষণ ও উন্নয়নে গবেষণা হতো। এখন বগুড়ার সান্তাহার, নীলফামারীর সৈয়দপুর ও যশোরের উপকেন্দ্রে এসব মাছ সংরক্ষণে গবেষণা হচ্ছে। ধীরে ধীরে এসব দেশীয় মাছ খাবার টেবিলে আনার চেষ্টা চলছে।
বিএফআরআই মহাপরিচালক অনুরাধা ভদ্র বলেন, সবশেষ শাল বাইম মাছের কৃত্রিম প্রজনন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। ফলে মাছটি এখন চাষের আওতায় আনা সম্ভব হবে। বিপুল পরিমাণ পোনা উৎপাদনের চেষ্টা চলছে। পর্যায়ক্রমে বিলুপ্তির আশঙ্কায় সব দেশীয় মাছকে লাইভ জিন ব্যাংকে
সংরক্ষণ করা হবে।
জানা যায়, দেশে কমবেশি মিঠাপানির মাছ ২৬০ প্রজাতির। এর মধ্যে ছোট মাছের প্রজাতি ১৪৩। এর মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, জলাশয় ধ্বংস, মাত্রাতিরিক্ত আহরণসহ নানা কারণে অন্তত ৬৪ প্রজাতির মাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে। ছোট মাছের বিলুপ্তপ্রায় ১২ প্রজাতির পোনা এখন সারাদেশের হ্যাচারিতে উৎপাদন হচ্ছে। চাষাবাদেও পড়েছে প্রভাব।
বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন নদী-নালা, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড় ও পুকুর থেকে ৮৮ প্রজাতির মাছ সংগ্রহ করে বিএফআরআইয়ের ‘লাইভ জিন ব্যাংকে’ সংরক্ষণ করেছেন। এর মধ্যে যেগুলোর সফল কৃত্রিম প্রজনন সম্পন্ন হয়েছে সেগুলোর পোনা উৎপাদন করা হচ্ছে।
ইনস্টিটিউট সূত্র জানায়, বর্তমানে হ্যাচারিতে শিং, মাগুর, কৈ, ট্যাংরা, পাবদা, গুলশা, বৈরালিসহ ১২ প্রজাতির মাছ ব্যাপকভাবে উৎপাদিত হচ্ছে। সর্বশেষ ২০২২ সালে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে শাল বাইমের কিছু পোনা উৎপাদনে সফল হন বিজ্ঞানীরা।
বিজ্ঞানীরা জানান, দেশীয় ছোট মাছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, লৌহ, আয়োডিনের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থ রয়েছে। মাছের এসব উপাদান শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে তোলে এবং রক্তশূন্যতা, গলগন্ড, অন্ধত্বের মতো রোগপ্রতিরোধে সহায়তা করে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উৎপ দ
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষক ও সাংবাদিক জগদীশ চন্দ্র ঘোষের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
ফরিদপুরের প্রবীণ শিক্ষক ও সাংবাদিক জগদীশ চন্দ্র ঘোষ ওরফে তারাপদ- এর চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী বুধবার পালিত হয়েছে। দিনটি স্মরণে তাঁর ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলীর বাসভবনে গীতাপাঠসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এ ছাড়া দুপুরে স্থানীয় রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রম ও ফরিদপুরে শ্রীঅঙ্গনে বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ২০২১ সালের ২ এপ্রিল ৯৩ বছর বয়সে তিনি মারা যান।
১৯২৮ সালের ৬ আগস্ট মানিকগঞ্জের কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্ম হয় জগদীশ চন্দ্র ঘোষের। ১৯৭১ সালের ২ মে পাকিস্তানি বাহিনীর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় তাঁর পরিবার। ওই দিন তাঁর বাবা যোগেশ চন্দ্র ঘোষ, ভাই গৌরগোপাল ঘোষ ও কাকাতো ভাই বাবলু ঘোষ গণহত্যার শিকার হন।
জগদীশ চন্দ্র ঘোষ শিক্ষকতার পাশাপাশি সাংবাদিকতা করতেন। দীর্ঘ ৪০ বছর তিনি বাংলাদেশ অবজারভার পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া নাটকসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন তিনি।