দু’বার মেয়াদ বাড়িয়েও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার বোয়ালিয়ায় করতোয়া নদীতীরে বর্জ্য শোধনাগারের নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। ২০২২ সালে এর নির্মাণ শুরু হলেও এখনও তা অসম্পূর্ণ। দেড় বছরে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ৪২ শতাংশ শেষ করে ঠিকাদারের লোকজন চলে যায়। এক মাস ধরে কাজ বন্ধ আছে। কাজ দ্রুত শেষ করতে গোবিন্দগঞ্জ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের আবাসিক প্রকৌশলী একাধিকবার ঠিকাদারকে তাগিদ দিলেও অগ্রগতির দেখা মিলছে না। এতে পৌরবাসী চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
পৌরসভা সূত্র জানায়, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের আওতায় ২০২২ সালের ডিসেম্বরে গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণ শুরু হয়। ৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় জাকির হোসেনের মালিকাধীন জামালপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমআরকেএমডি (জেভি)।
এ বিষয়ে জাকির হোসেনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ফেরদৌস বলেন, কিছু সমস্যার কারণে কাজটি বন্ধ রাখা হয়েছিল। শিগগিরিই কাজ শুরু হবে।
পৌরবাসী জানান, যথাযথ তদারকি না থাকায় কাজে গাফিলতি করে সময়ক্ষেপণ করেন ঠিকাদার। এতে যেমন কাজ এগোচ্ছে না, তেমনি সময়ের সঙ্গে ব্যয় বাড়িয়ে নেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু তাতেও কাজের অগ্রগতি হয় না।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল দপ্তরের আবাসিক প্রকৌশলী কামরুল হাসান বলেন, কাজ শেষ করার জন্য জনস্বাস্থ্য কার্যালয় থেকে ঠিকাদারকে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নানা অজুহাতে কাজ শুরু করছে না। বর্জ্য শোধনাগারের কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৪২ শতাংশ। এখনও অনেক কাজ বাকি। তবে শিগগিরিই এটি কাটিয়ে উঠতে পারব।
পৌর প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, ঠিকাদার কাজ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন। ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে কাজ দ্রুত শুরু করার জন্য পৌরসভার প্রকৌশলীদের বলা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জনস ব স থ য প রসভ
এছাড়াও পড়ুন:
জি কে শামীমের দুর্নীতি মামলার রায় পেছাল
আলোচিত ঠিকাদার জি কে শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা অবৈধ সম্পদ ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় রায়ের তারিখ পিছিয়ে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি ধার্য করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলমের আদালতে মামলাটি রায়ের জন্য ছিলো। তবে রায় প্রস্তুত না হওয়ায় পিছিয়ে এ তারিখ ধার্য করা হয়।
দুদক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী এতথ্য জানান।
জি কে শামীম কারাগারে আছেন। তার মা আয়েশা আক্তার পলাতক রয়েছেন।
গত ২২ জানুয়ারি দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে আদালত রায়ের এ তারিখ ঠিক করেন।
২০১৯ সালের ২১ অক্টোবর জি কে শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় -১ এর উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর তাদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলার সময় ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর দুপুরে নিকেতনের বাসা থেকে শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ভবন থেকে নগদ এক কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা, ৯ হাজার ইউএস ডলার, ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬০ হাজার টাকার ১০টি এফডিআর, ৩২টি ব্যাংক হিসাবের চেক বই, আটটি আগ্নেয়াস্ত্র ও মদ পাওয়ার কথা জানানো হয় অভিযান শেষে।
গ্রেপ্তারের সময় র্যাব সদরদপ্তর, সচিবালয়ে ও কয়েকটি হাসপাতালের নতুন ভবনসহ অন্তত ২২টি নির্মাণ প্রকল্পের ঠিকাদারি কাজ শামীমের প্রতিষ্ঠান জিকে বিল্ডার্সের হাতে ছিল। এসব প্রকল্পের ব্যয় বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ৬ হাজার কোটি টাকা। পরে সেগুলোর কার্যাদেশ বাতিল হয়। জব্দ করা হয় তার ১৯৪টি ব্যাংক হিসাব।
অভিযনের পরদিন ২১ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় অর্থপাচার প্রতিরোধ আইনে জি কে শামীমের বিরুদ্ধে মামলা করেন র্যাব-১ এর নায়েব সুবেদার মিজানুর রহমান।
২০২৩ সালের ১৭ জুলাই মানি লন্ডারিং আইনের মামলায় জি কে শামীমকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। বাকি সাত আসামিকে (জিকে শামীমের দেহরক্ষী) ৪ বছর করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জি কে শামীম ও তার ৭ দেহরক্ষীকে অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলাম।
ঢাকা/মামুন/ইভা