Samakal:
2025-01-31@17:54:20 GMT

ছড়া কবিতা

Published: 17th, January 2025 GMT

ছড়া কবিতা

শেখ সালাহ্উদ্দীন 
শীত আসে না 
মায়ের কাছে

শীতের কামড় লাগলে গায়ে পৌষ-মাঘে
বাঘেরও হয় মেজাজ খারাপ, চেঁচায় রাগে।
শীতে কাঁপে হাড়-মাংস; দাঁতের মাড়ি     
রয় না বশে, ওপর-নিচে মারে বাড়ি। 
শিকার ধরে আহার করাও মাথায় ওঠে  
প্রাণ বুঝি যায় বেরিয়ে ওদের শীতের চোটে।

গরু ছাগল সকাল-রাতে কাঁপে শীতে
ওদের দিকেও হয় আলাদা নজর দিতে
গৃহস্থ তাই ওদের গায়ে পরায় ছালা    
মাঝে মাঝে গোয়ালে হয় আগুন জ্বালা! 

মা যতই বকুনি দেয়, উঠতে বলে
ঘাপটি মেরে আমরা থাকি লেপের তলে। 
লেপের তলে আয়েশি ওম বেশ তো লাগে 
ওমটা ভেঙে সাতসকালে কে-বা জাগে।    

দস্তানা শাল মাঙ্কি-টুপি পরা, তবু-
বুড়ো দাদু ঘরের মাঝে জবুথবু
মাটির তাওয়ায় নিভু নিভু আগুন সেঁকে
হচ্ছে না ওম, শিরদাঁড়া তার যাচ্ছে বেঁকে।
বলে হেঁকে- বউমা আবার কোথায় গেলে
নতুন আগুন দাও নেভা এই আগুন ফেলে।

ড্রয়িং-রুমে বসে চেঁচায় বড় চাচা- 
যাচ্ছি জমে, চা ছাড়া তো যায় না বাঁচা!   
এক পেয়ালা চা দিতে হয় এতো কি লেট? 
আনতে চা-টা ছোট বউ কি গেছে সিলেট?   

শীত আসে না কেবল আমার মায়ের কাছে
পাত্তা দেবে শীতকে এমন সুযোগ আছে? 
কাজের চাপে হয় না রাখা শীতের খবর 
হোক না সে শীত হাড়-কাঁপানো, তারচে’ জবর!
 

 

প্রজীৎ ঘোষ 
নতুন দিনে নতুন আশা

নতুন দিনে নতুন আশার স্বপ্ন করি চাষ;
নতুন আলোয় আলোকিত আমাদের চারপাশ।
পুব আকাশে নতুন সূর্য যখন দিলো উঁকি;
গরম লেপের আদর ঠেলে উঠে পড়লো খুকি।

কুয়াশারা লুকোয় কোথায়, কোথায় বা সে থাকে?
শীতের রাতে আকাশ কেন এমন ছবি আঁকে?
এমন হাজার প্রশ্ন ঘোরে খুকির ছোট্ট মাথায়;
হাজার স্বপন নিয়ে ঘুমায় দুইটি চোখের পাতায়। 

নতুন করে নতুন ভোরে নতুন লুকোচুরি;
শীতের চোটে কাঁপছে দ্যাখো থুত্থুড়ে এক বুড়ি। 
বুড়ি তো নয়, নয় সে বুড়ি হিম কুয়াশার চাঁদ;
নতুন দিনে নতুন আশা ভাঙলো খুশির বাঁধ।
 

 

সুমন বনিক 
শীতের পিঠে

ফাস্টফুডে আর জাঙ্কফুডে
মেজাজটা খিট-খিটে  
এসব খেয়ে দেশি পিঠার
স্বাদটা কি আর মিটে?

শিকড় খুঁড়ে তাই তো খুঁজি 
বাংলার পিঠে-পুলি 
গ্রামে-গঞ্জের হৃদয় জুড়ে 
রসনার সেই বুলি!

মায়ের হাতের মিষ্টি পায়েস
ভাপা চিতই পিঠে 
মুগেরকুলি পাটিসাপটা 
স্বাদটা যে কী মিঠে!

পৌষ-পাবনের রাতের স্মৃতি
যাইনি আজো ভুলে
সুঘ্রাণে তাই মনটা ভরি
স্মৃতির দুয়ার খুলে।

 

 

শাহরিয়ার শাহাদাত 
বাংলাদেশি ভ্যান

ঘড়ির কাঁটা হাঁটছে ঠিকই 
দৌড়ে লুকায় দিন 
শীতবিকেলের মিষ্টি সময়
জলদি লুফে নিন। 
বলছি কেন, আবাক হলেন
এমন অফার হয়?
দিন গিলে খায় মাঘের দত্যি
জানেন তো নিশ্চয়!

শীতের এমন দই কুয়াশায় 
ডিগবাজি দেয় রোদ
সীমিত এই রোদ প্যাকেজের
করছি অভাববোধ! 
রাতের বদল দিনটা শীতে
বড়ত কিছু, ইস! 
স্কুলের মাঠে ঝিমায় বিকেল
আলসে-নিরামিষ। 

কখন ক্লাসের শুরু ও শেষ
ভীষণ অবাক হই
ব্যাগের ভেতর কাঁপছে যেন
ঠান্ডা টিফিন, বই! 
তাই বলি কী– ও শীত বুড়ো
সাইবেরিয়ান ম্যান
ফ্রি টিকিটে যাবেন? রেডি
বাংলাদেশি ভ্যান!
 

 

চন্দনকৃষ্ণ পাল 
রঙ

বিকেলগুলো সোনালি রঙ
মাখিয়ে যায় গাছের ডালে 
সবুজ এবং সোনালিতে 
কী আনন্দ পাহাড় ঢালে।

পুব পাশের ঐ কালচে সবুজ 
ওখান থেকেই চোখটা মেলে 
দূর আকাশের সোনালি রঙ 
ছোঁয়াছুয়ির খেলা খেলে।

বিকেলগুলো কী আনন্দে ভরা 
আকাশকনের রঙটা দিয়ে গড়া। 
 

 

সনজিত দে 
একমুঠো রোদ

হাড়কাঁপানো শীতে
মিলেছি সঙ্গীতে
যাচ্ছি হাটে সকাল সকাল ভাবছি যেতে যেতে
আস্তে-ধীরে উষ্ণতায় এক রোদ উঠেছে তেতে।
রোদ নিয়ে তাই ফিরবো বাড়ি
চল না গাড়ি তাড়াতাড়ি
ব্যাগ ভরে আজ রোদকে নিয়ে ফিরবো যখন বাড়ি
সব ছায়ারা পড়বে ঢাকা শুকাবে মা’র শাড়ি।

ফর্সা হবে উঠোন যখন
ফিক করে মা হাসবে তখন
এমন হাসি দেখিনি মার অনেক বছর ধরে
সেই যে বাবা হারিয়ে গেছে হঠাৎ ফুড়ুৎ করে।

রোদ দিয়ে তাই হাসি কিনি পেয়ে রোদের ছটা
গাছগাছালি পশু-পাখি হাসছে করে ঘটা।
সব পেয়েছি রোদকে দিয়ে যেন মনে হয়
শীতের সকাল একমুঠো রোদ বুঝেছ নিশ্চয়।
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’ কর্মসূচি ঘোষণা তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের

কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিসহ ৭ দফা দাবি আদায়ে ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’ কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গতকাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নুরুজ্জামান মহোদয় এসেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন আমাদের দাবি যৌক্তিক, তিনি রাষ্ট্রকে বিষয়টি জানাবেন। শিক্ষার্থীরা অনশনরত অবস্থায় মারা যাবে আর তারা রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল জায়গা থেকে ধীরেসুস্থে কাজ করার কথা ভাবছে।

এ ধরনের বক্তব্য শিক্ষার্থীরা আশা করেনি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, আমরা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করতে চাই, ১ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) বিকেল ৪টার মধ্যে আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীদের ৭ দফা দাবি মেনে নিয়ে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়কে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না দেওয়া হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ‘বারাসাত ব্যারিকেড টু নর্থ সিটি’ কর্মসূচি পালন করা হবে। রেল ও সড়কপথ এই কর্মসূচির আওতাভুক্ত থাকবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, ইজতেমার কথা বিবেচনায় অনির্দিষ্টকালের এই কর্মসূচি চলাকালে কিছুটা শিথিলতা থাকবে। ভোর ৬টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ইজতেমায় যোগ দেওয়া মুসল্লিদের জন্য ব্যারিকেড শিথিল থাকবে। এই সময়ের মধ্যে মুসল্লিদের ইজতেমায় যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা।

৭ দফা দাবি আদায়ে শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের মতো আমরণ অনশনে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। অনশনরত অবস্থায় ইতোমধ্যে দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে সহপাঠীরা তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে সেখানে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। অন্যদিকে একই দাবিতে রাত ১০টার দিকে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী রাজধানীর গুলশান ১ এর গোল চত্বরে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। পরে সেখানে জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন শিক্ষার্থীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ