কক্সবাজারের টেকনাফের মৌচনি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় পাঁচ বছরের এক শিশু নিহত হয়েছে। এ ছাড়া পুড়ে গেছে অন্তত ১০০ বসতবাড়ি। এতে গৃহহীন হয়ে পড়েন পাঁচ শতাধিক মানুষ। গত বৃহস্পতিবার রাতে নয়াপাড়া নিবন্ধিত মৌচনি ক্যাম্পের জি-২ ব্লকের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে পরিকল্পিত ও নাশকতামূলক বলে অভিযোগ 
করছেন রোহিঙ্গারা। 
এ বিষয়ে ক্যাম্পের জি-২ ব্লকের মাঝি ওমর ফারুক বলেন, রাতে আমার ঘরের পাশ থেকে হঠাৎ আগুন জ্বলে ওঠে।  খুব দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। আগুন লাগার আগে আমাদের ব্লকের অনেকের ঘরের বাইরে দরজা আটকানো ছিল। এতে বোঝা যায়, কেউ ইচ্ছা করে ক্যাম্পে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। তাছাড়া কয়েক দিন আগে থেকে ক্যাম্পে আগুন লাগানো হবে বলে লোকমুখে গুজব ছিল। 
গতকাল শুক্রবার আশ্রয়শিবির ঘুরে দেখা গেছে, নয়াপাড়া পুড়ে যাওয়া ঘরের সামনে বসে আছেন নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা। বিকেল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শীতে কাঁপছেন তারা। আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘরের ওপর বসে কান্না করছিলেন মরিয়ম খাতুন। তিনি বলেন, আমার কেউ নেই। একমাত্র সম্বল ঘরটিও আগুনে পুড়ে গেল। ঠান্ডায় রাতে কীভাবে ঘুমাব, কোনো শীতবস্ত্র নেই, খাবার নেই। 
আগুনে পুড়ে নিহত শিশু আয়েশা সিদ্দিকার বাবা ইব্ররাহিম বলেন, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে সবাইকে নিয়ে বের হয়ে পড়ি। এর পর মেয়েকে আর খুঁজে পাইনি। পরে জানতে পারি, সে ঘুমন্ত অবস্থায় আগুনে পুড়ে মারা গেছে। আগুন ধরেনি, পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগানো হয়েছে। এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গা ছৈয়দ নুর বলেন, ক্যাম্পের কিছু লোক বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড করে ভাগাভাগিতে গরমিল হলে আমাদের ওপর নির্যাতন করে। এদের থেকে বাঁচতে আমরা ৩০-৪০ জন মিলে রাতে ক্যাম্প পাহারা দিয়ে থাকি। কয়েক দিন ধরে সন্ত্রাসীরা ক্যাম্প থেকে লোকদের ধরে নিয়ে মুক্তিপণ দাবি করে। আমরা একজন সন্ত্রাসীকে ধরে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছি। এর পর গত তিন দিন আগে ক্যাম্পে আগুন দেওয়ার হুমকি দেয়। ক্যাম্পে সন্ত্রাসীরা আগুন লাগিয়ে দেয়।
১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক অতিরিক্ত উপমহাপরিদর্শক মোহাম্মদ কাউসার সিকদার বলেন, ক্যাম্পে একটি ঘরে আকস্মিক আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। মুহূর্তেই আগুন আশপাশের ঘর ও স্থাপনায় ছড়িয়ে পড়ে। পরে এপিবিএন পুলিশের পাশাপাশি স্থানীয় রোহিঙ্গাদের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। 
তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত শতাধিক বসতঘর ও নানা স্থাপনা ভস্মীভূত এবং এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তবে এ ঘটনাটি পরিকল্পিত কিনা, সেটি তদন্তের বিষয়। 
টেকনাফের নয়াপাড়া রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের ইনচার্জ (যুগ্ম সচিব) আবদুল হান্নান বলেন, আগুনে পুড়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্তদের নতুন করে ঘর নির্মাণের কাজ শুরু করেছে দাতা সংস্থা। খুব দ্রুত তারা নতুন ঘরে যেতে পারবে। প্রাথমিকভাবে শীতের কম্বল, শুকনো খাবারসহ বিভিন্ন মালপত্র দেওয়া হচ্ছে। আগুন লাগার ঘটনাটি তদন্ত করছে পুলিশ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

বিপিএলে ঢাকার শেষ ম্যাচ দেখতে মাঠে থাকবেন শাকিব

চলমান বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েছে ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খানের মালিকানাধীন দল ঢাকা ক্যাপিটালস। টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই দল নিয়ে সরব ছিলেন তিনি। এবার ঢাকার শেষ ম্যাচেও মাঠে উপস্থিত থাকবেন এই জনপ্রিয় নায়ক।

শাকিব খানের ম্যানেজার জানিয়েছেন, আগামীকাল শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ঢাকা ক্যাপিটালসের শেষ ম্যাচটি দেখতে আসবেন শাকিব। দলটির প্রতিপক্ষ খুলনা টাইগার্স। দুপুরের পরই গ্যালারিতে উপস্থিত হয়ে খেলোয়াড়দের অনুপ্রাণিত করবেন তিনি।

এর আগে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ঢাকা ক্যাপিটালসের প্রথম ম্যাচে মাঠে হাজির ছিলেন শাকিব খান। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘এবারই প্রথম বিপিএলে সরাসরি যুক্ত হলাম। অনেক কিছু শিখলাম, যা ভবিষ্যতে কাজে লাগবে।’

এদিকে, আসন্ন ঈদে মুক্তি প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘বরবাদ’-এর শুটিংয়ে ব্যস্ত থাকায় বিপিএলের বেশ কয়েকটি ম্যাচ দেখতে পারেননি শাকিব খান। মুম্বাইয়ে শুটিং শেষ করে বুধবার বিকেলে ঢাকায় ফেরেন তিনি। এবার ঢাকার শেষ ম্যাচে গ্যালারিতে বসে দলকে সমর্থন দিতে হাজির হবেন এই নায়ক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ