ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের সময় শিকারি সাংবাদিকতার উন্মেষ হয়। এর মাধ্যমে মুহূর্তে ব্যক্তিকে অপরাধী বানিয়ে শাস্তি দেওয়া হতো। এ ধরনের সাংবাদিকতায় জড়িত ছিল গণমাধ্যম, গোয়েন্দা সংস্থা ও সরকারের একাংশ। শিকারি সাংবাদিকতার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ অন্যদের সীমার মধ্যে রাখতে ভয়ের শিক্ষা দিত।

শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে ‘ফ্যাসিবাদের জমানায় শিকারি সাংবাদিকতা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) আয়োজিত সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন।

পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফের সভাপতিত্বে সভায় অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, শিকারি সাংবাদিকতায় যারা লক্ষ্যবস্তু হন, তারাই প্রত্যক্ষ শিকারি। কিন্তু এর পরোক্ষ শিকারি সবাই। আসলে এর মাধ্যমে একজনকে মেরে অন্যদের শিক্ষা দেওয়া হয়– তোমরা সীমানার বাইরে যাবে না।

সলিমুল্লাহ খান আরও বলেন, সাংবাদিকতার পেছনে আছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। বিশ্ববিদ্যালয়, রেডিও, টেলিভিশন, সংবাদপত্র– সবই হচ্ছে রাজনৈতিকভাবে জনমত আদায় করার প্রচেষ্টা। বিগত সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি কী ভূমিকা পালন করেছে, এরও সমালোচনা দরকার, বিচারের মুখোমুখি করা দরকার। ফ্যাসিবাদ প্রতিদিনের আয়নায় দেখতে না পেলে এটাকে সরানো যাবে না। প্রতিদিন ফ্যাসিবাদ পুনরুৎপাদিত হচ্ছে। ফ্যাসিবাদ আশপাশেই আছে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, ‘এ ধরনের সাংবাদিকতাকে দুর্বৃত্তায়নের রাজনৈতিক অর্থনীতি বলা যায়। এর ভয়াবহতা সবাই বুঝি। ফলে যার যার অবস্থান থেকে সতর্ক থাকতে হবে।’ 

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য মামুন আহমেদ বলেন, ‘২০১৮ সালে কোটা আন্দোলনের সময় তারেক রহমানের সঙ্গে আমার একটি সাদামাটা ফোনালাপ ফাঁস করে প্রায় প্রত্যেকটা টেলিভিশনে দেখানো হয়েছে। টকশো করা হয়েছে যেন আমি বড় কোনো অপরাধ করেছি। কারও ব্যক্তিগত ফোনালাপ ফাঁস করে সেটি প্রচার করা আইনসিদ্ধ কিনা, আমার জানা নেই। তবে এখন আশা করি, অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে।’

সভায় আরও বক্তৃতা করেন ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খোরশেদ আলম।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প আইব স ব দ কত ব দ কত র

এছাড়াও পড়ুন:

সামারিক শক্তিতে মিয়ানমারের চেয়ে ২ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ

চলতি বছর সামরিক শক্তির দিক থেকে মিয়ানমারের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। চলতি সপ্তাহে সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার প্রকাশিত সূচকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই র‌্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সামরিক বাজেট। সেনাবাহিনীর আকার, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর শক্তিকেও বিবেচনা করা হয়েছে সমীক্ষায়।

গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সূচক অনুযায়ী, বিশ্বে সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপরে পরে রয়েছে রাশিয়া, চীন, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া। পরমাণু শক্তিধর হলেও পাকিস্তানের অবস্থান ১২ নম্বরে। তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে ৩৫তম অবস্থানে। বাংলাদেশের আগে রয়েছে উত্তর কোরিয়া ও আর্জেন্টিনা। আর বাংলাদেশের প্রতিবেশী মিয়ানমার রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটির বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৬ কোটি ৬১ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে মোট সেনা সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৭ হাজার ৪০০ সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ২৫ হাজার ১০০ সেনা। 

অন্যদিকে, মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যা ৫ কোটি ৭৫ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। মিয়ানমারের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার। মিয়ানমারের রিজার্ভ সৈন্য রয়েছে ২০ হাজার। দেশটির বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৫ হাজার সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ১৬ হাজার সেনা। 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ