পেপ গার্দিওলার ম্যানচেস্টার সিটি নিশ্চিতভাবেই সাম্প্রতিক সময়টা ভুলে যেতে চাইবেন। এই স্প্যানিশ ম্যানেজারের ২০১৬ সালে সিটিতে যোগ দেওয়ার পর, ক্লাবটি কোন ধরনের পয়েন্ট হারালেই সেটা খবর হতো। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাক্তিগত জীবনে ঝড় বয়ে যাওয়া গার্দিওলার অধীনে গত বছরের সেপ্টেম্বরের ১৯ তারিখ থেকে দেখা মিলল ভিন্ন এক ম্যানসিটির। সেদিন থেকে এখন পর্যন্ত ২৬ ম্যাচ খেলা ম্যানচেস্টারের ব্লু’রা জিতেছে মাত্র ৯ ম্যাচ! তবে তাদের এই অসময়ে স্বস্তির সংবাদ হয়ে এসেছে দলের সেরা তারকা স্ট্রাইকার আর্লিং হালান্ডের নতুন করে ক্লাবের সঙ্গে ‘সাড়ে নয় বছরের’ বিশাল চুক্তি করাটা! 

ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে হলান্ডের আগের চুক্তির মেয়াদ ছিল ২০২৭ সাল পর্যন্ত। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি, ২০২৫) করা নতুন চুক্তিতে সেটা বেড়ে গেল আরও ৭ বছর। আগামী ২০৩৪ সাল পর্যন্ত এখানে থাকবেন নরওয়েজিয়ান তারকা। এই চুক্তির আর্থিক বিষয়গুলো  এখনও প্রকাশ করেনি সিটি। তবে সংবাদমাধ্যম ইএসপিএনের দাবি ইতিহাসের চোখধাঁধানো চুক্তিগুলোর একটি এটি!

আরো পড়ুন:

জয়বঞ্চিত ক্লান্ত ম্যানসিটি

এভারটনের বিপক্ষেও জয় পেলো না ম্যানসিটি

সিটির সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদী চুক্তি করে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ডিফেন্ডারদের ভিন্ন ধরনের এক বার্তা দিলেন হালান্ড। এটাকে খোলা চিঠিও বলা চলে। যার প্রথমাংশ ছিল অত্যন্ত আবেগী। হালান্ড নিজেই সেই তা পাঠ করেন, “প্রিয় ডিফেন্ডাররা, আমি আমাদের গত কয়েক বছরের সম্পর্ক নিয়ে ভাবছিলাম। সব সম্পর্কের ক্ষেত্রেই উঁচু এবং নীচু থাকে। এটা স্বাভাবিক। হ্যাঁ, আমাদের লড়াই হয়তো হয়েছে, তবে তোমরা আমাকে নিজের সেরাটা পেতে ধাবিত করেছ।”

আপাত দৃষ্টিতে বার্তাটিকে আবেগী মনে হলেও দ্বিতীয়াংশে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের প্রতি ছিল সূক্ষ খোঁচা, “কখনও যদি পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে যায়, আমাদের মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে। যাই হোক, সাম্প্রতিক সময়ে অনেক গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ছে। আমি বুঝতে পারছি। কখনও কখনও হয়তো তোমরা আমাকে আশাপাশে চাও না, কিন্তু আমি মনে করি, আমরা একে অপরের প্রয়োজন। অন্যভাবে বললে, তোমরাই আমাকে পরিপূর্ণ করো। সুতরাং, আমি বলতে চাচ্ছি যে, দুঃখিত, আমাকে এখানে (ম্যানসিটিতে) থাকতে হবে।”

আরেক সাক্ষাৎকারে এই ২৪ বছর বয়সী স্ট্রাইকার নিজের আনন্দ ধরে রাখতে পারেননি,  “নতুন চুক্তি করতে পেরে আমি সত্যিই খুশি। ম্যানচেস্টার সিটি বিশেষ একটি ক্লাব, এখানে সবাই চমৎকার মানুষ এবং দারুণ সব সমর্থক আছে। এখানকার আবহই এমন যে, সবার ভেতর থেকে সেরাটা বের করে আনতে সাহায্য করে। পেপ (গার্দিওলা), তার কোচিং স্টাফ, আমার সতীর্থ এবং ক্লাবের প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাতে চাই, কারণ গত কয়েক বছরে তারা আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। 

অন্যদিকে সদ্যই ব্যক্তিগত জীবনের ঝামেলায় বিধ্বস্ত সিটি ম্যানেজার গার্দিওলা যেন দীর্ঘদিন পর আনন্দের একটু খোরাক পেয়েছেন,“এটা আমাদের সবার জন্য অসাধারণ একটি সংবাদ, ক্লাবের জন্যও। একজন খেলোয়াড় এই ধরনের চুক্তিতে স্বাক্ষর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যা সে আগে কখনো করেনি। কারণ, ও (হালান্ড) প্রমাণ করতে চায় এখানে থাকতে কতটা মরিয়া সে।”

২০২২ সালের গ্রীষ্মে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড থেকে ৫১ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে ম্যানচসিটিতে যোগ দেওয়ার পর থেকে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে হালান্ড ১২৬ ম্যাচে করেছেন ১১১টি গোল। সতীর্থদের দিয়ে করিয়েছেন ১৫টি গোলে। তার অসামান্য অবদানে ক্লাবটি প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগ সহ ট্রেবল জিতে। বরুসিয়া ডর্টমুন্ড থেকে রিলিজ ক্লজ সক্রিয় করে হালান্ডকে দলে ভিড়িয়ে ছিল ম্যানচেস্টার সিটি।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

তুফানের পর বনলতা সেন


‘আমি ক্লান্ত প্রাণ এক, চারিদিকে জীবনের সমুদ্র সফেন/ আমারে দু-দণ্ড শান্তি দিয়েছিল নাটোরের বনলতা সেন’– কবি জীবনানন্দ দাশের সুবিখ্যাত কবিতা ‘বনলতা সেন’। এ কবিতা নিয়ে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের কোনো অন্ত নেই। কে এই সুন্দরী নারী? কী তাঁর পরিচয়? নাটোরের বনলতা সেন নামের কোনো মায়াবতীর সঙ্গে কবির কি আদৌ পরিচয় ছিল? বনলতা সেন বিষয়ে আজীবন এই নীরবতা বজায় রেখেছেন কবি; মনের অজান্তেও কখনও কারও কাছে বনলতা সেনকে নিয়ে বলেননি কোনো কথা। কবির চরিত্র অনাবিষ্কৃত থাকলেও এবার পর্দায় আসছে ‘বনলতা সেন’ নামে একটি সিনেমা। মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের পরিচালনায় এতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী ও মডেল মাসুমা রহমান নাবিলা। সবকিছু ঠিক থাকলে চলতি বছরই এ সিনেমা মুক্তি পাবে। 

বনলতা সেনের খোঁজে...
নাবিলার সর্বশেষ অভিনীত সিনেমা ‘তুফান’ মুক্তি পেয়েছে গত বছর ঈদুল আজহায়। রায়হান রাফী পরিচালিত এ সিনেমায় তাঁর অভিনীত ‘জুলি’ চরিত্রটি বেশ প্রশংসিত হয়েছে। শাকিব খানের সঙ্গে তাঁর নতুন রসায়নও দর্শক গ্রহণ করেছেন। তাদের খুনসুটি, ঝগড়া, অভিমান-অনুযোগ, প্রেমের দৃশ্যগুলো দর্শককে বেশ আনন্দ দিয়েছে। এর আগে তিনি শেষ করেছেন অনুদানের সিনেমা ‘বনলতা সেন’-এর কাজ। একেবারে নীরবেই সিনেমার দৃশ্যধারণ হয়েছে । এটি তাঁর অভিনয় ক্যারিয়ারে একটি গুরুত্বপূর্ন কাজ বলে মনে করছেন তিনি।  সিনেমায় অভিনয় প্রসঙ্গে নাবিলা বলেন, ক্যারিয়ারের শুরু থেকে বেশ বাছবিচার করে সিনেমার কাজে হাত দিয়েছি। আমার অভিনীত তৃতীয় সিনেমা ‘বনলতা সেন’-এর গল্প অসাধারণ।  নির্মাতা মাসুদ হাসান উজ্জ্বল বেশ যত্ন নিয়ে কাজটি শেষ করেছেন। অনেক বছর ধরে সিনেমার কাজ হয়েছে। আমার অভিনীত চরিত্রটি নিয়ে বিস্তারিত বলতে চাই না। আমি চাই, দর্শক পর্দায় কাজটি দেখুক। গল্প ও চরিত্র মিলে সিনেমাটি দর্শকের ভালো লাগবে– এ আশা করাই যায়।

একটি সূত্রে জানা গেছে,শুরুতে নাবিলাকে নির্মাতা শুধু চরিত্রের সারসংক্ষেপ দিয়েছিলেন। পরে পুরো স্ক্রিপ্ট পড়তে চান তিনি। নির্মাতা তাঁকে প্রথমে কম গুরুত্বপূর্ন চরিত্রের কথা বলছিলেন। কিন্তু বিরতির পর ওই ধরনের চরিত্র দিয়ে ফিরতে চাইছিলেন না এই অভিনেত্রী। 

অনেক দিন পর নাবিলাকেই ডাকলেন নির্মাতা। নিলেন অডিশন। পরে চরিত্রটি নাবিলার জন্য গুরুত্বপূর্ন চরিত্রটিই বরাদ্দ হলো। নাম শুনে অনেকেই মনে করছেন এটি সাহিত্যনির্ভর কাজ। কেউ কেউ বলেছেন,বনলতা সেন কবিতার ছায়া থাকবে সিনেমায়। বিষয়টি নিয়ে নাবিলা বলেন, ‘স্ক্রিপ্টে যখন চোখ রাখি তখনই মনে হয়েছিল, আমি কোনো সাহিত্য পড়ছি। আসলে এটি সাহিত্যনির্ভর কাজ নয়। বনলতা সেন কে, এটি তো আমাদের জানা নেই। কাল্পনিকই বলা চলে। কেউ কখনও তাকে দেখেননি। নির্মাতা যেভাবে বনলতা সেনকে কল্পনা করেছেন, সেভাবেই সিনেমায় তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। সিনেমাটিকে আসলে কোনো জনরায় ফেলা যায় না। নির্মাতা নিজের মতো করে গল্প লিখেছেন। এটি একটি রহস্যময় সিনেমা। অনেক ইতিহাস আছে এতে। বনলতা সেন কে তা সিনেমা দেখার পর বোঝা যাবে। 

রান্নার আয়োজন 
অভিনয়, উপস্থাপনা, মডেলিংয়ে বছরজুড়েই ব্যস্ত সময় কাটে নাবিলার। মাঝে সিনেমার কাজে বেশি মনোযোগী ছিলেন তিনি। এ কারণে উপস্থাপনায় একেবারেই দেখা যায়নি এ অভিনেত্রীকে। ১০ বছর পর ফিরলেন উপস্থাপনায়। ‘রাঁধুনী রান্নাঘর, বাংলাদেশের সেরা ১০০ রেসিপি’ ও ‘স্টারশিপ ফিউশন কিচেন’ নাম দুটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছেন তিনি। গত বছরের শেষ দিকে আবারও ‘রাঁধুনী রান্নাঘর, বাংলাদেশের সেরা ১০০ রেসিপি’ নিয়ে ফিরেছেন নাবিলা।

‘রাঁধুনী রান্নাঘর, বাংলাদেশের সেরা ১০০ রেসিপি’ উপস্থাপনা প্রসঙ্গে নাবিলা বলেন, ‘বেশ বিরতির পর রান্নার অনুষ্ঠান দিয়ে উপস্থাপনায় ফিরতে পেরে ভালোই লাগছে। বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে অনেক ধরনের অনুষ্ঠান প্রচার হচ্ছে। নানা অনুষ্ঠানের ভিড়ে এর আইডিয়া ব্যতিক্রম। পাকা ১০০ রাঁধুনির রেসিপি দিয়ে সাজানো হয়েছে এ আয়োজন। মাছারাঙা টেলিভিশনে এর ১৩ পর্ব প্রচার হয়েছে। বেশ সাড়া পাচ্ছি আয়োজনটিতে। ‘স্টারশিপ ফিউশন কিচেন’ কাজটি পছন্দের বলে জানিয়েছেন নাবিলা। একটি দৈনিক পত্রিকার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ও চরকিতে রান্নার এ আয়োজন দেখা যাচ্ছে। রান্নার অনুষ্ঠান উপস্থাপনা বেশ উপভোগ করছেন বলে জানান এ অভিনেত্রী।

কাজের অবসরে
শুটিং না থাকলেই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করেন নাবিলা। তিনি বলেন, ‘আমি ঘরকুনো মেয়ে। ঘরেই বেশি মন টেকে। যখন শুটিং করি, তখনও সন্তানকে সময় দিতে পারছি না বলে অপরাধবোধ কাজ করে। ওই সময় সন্তানের সঙ্গ খুব মিস করি। সংসার সামলে সময় যে কখন চলে যায়, টেরই পাই না।’ v

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অর্পিতা নন, ভয়াবহ দুর্ঘটনায় শিকার সালমানের আরেক বোন
  • সঙ্গীর সঙ্গে মনোমালিন্য হলে করণীয়
  • ঈশ্বর ও মুনিয়া
  • আমাকে ছেড়ে দেন, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে টানাটানি কইরেন না: পরীমণি
  • তুফানের পর বনলতা সেন
  • যেভাবে আদা খেলে ব্রণ দূর হয়