রাজধানীর হাতিরঝিলের বাগিচার টেক এলাকায় আমেরিকা প্রবাসী মাসুদ আলমকে মারধর ও নিজস্ব প্লট ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকির অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলার পর থেকে অভিযুক্ত আসামিরা প্রবাসীকে মামলা তুলে নিতে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। 

ডিএমপির হাতিরঝিল থানায় বুধবার চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন মাসুদ আলম। আসামিরা হলেন, হাতিরঝিলের মহানগর প্রজেক্টের মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (৫৬), শফিকুল ইসলামের ছেলে বিল্লাল হোসেন (৪০), বাগিচার টেক এলাকার মৃত জয়নাল আবেদীনের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৫৮) ও আব্দুল কালামের ছেলে মহিউদ্দিন (৩০)। 

মামলার এজাহারে মাসুদ আলম উল্লেখ করেন,‘প্রবাস জীবনের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে হাতিরঝিল থানার বাগিচার টেক এলাকার একটি প্লট (১৯/সি) কিনে ভোগ দখল করে আসছেন তিনি। কিছুদিন থেকে হাতিরঝিলের মহানগর প্রজেক্ট এলাকার সাইফুল ইসলাম ও তার লোকজন জমিটি দখল করার জন্য তাকে (মাসুদ) মারধর করে জমি ছেড়ে দিতে হুমকি দেয়। ১ জানুয়ারি গভীর রাতে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর ও জখম করা হয়।’ 

মাসুদ আলম সমকালকে বলেছেন, মামলা করার পর থেকে প্লটটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য তিনি ও তার পরিবারকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তার পুরো পরিবার এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। 

এ বিষয়ে হাতিরঝিল থানার ওসি মোহাম্মদ রাজু বলেন, ‌‘এই ঘটনায় আমরা মামলা নিয়েছি। আসামিদের ধরতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

নদী-খালের বুকে জেগে ওঠা এক মায়ার শহর খুলনা

‘ঘুরে এলাম খুলনা শহর রূপসা নদীর তীরে, রূপসা নদীর রূপের মায়া ডাকে ফিরে ফিরে, পুরোনো এই নগরী তো ইতিহাসে ভরা, যেমন তাহার গুণের বাহার রূপেতেও সে সেরা।’ খুলনা শহরকে নিয়ে এমন ছন্দে ছন্দে কবিতা লিখেছেন অবিরুদ্ধ মাহমুদ। কবিতার নাম দিয়েছেন ‘ঘুরে এলাম খুলনা’।

আসলেই খুলনা এক মায়ার শহর, সমৃদ্ধ শহর, কোলাহলমুক্ত নির্মল শ্বাস নেওয়ার শহর। যেখানে নদী গল্প বলে আর খাল গেয়ে ওঠে ইতিহাসের গান। বহুকাল আগে, যখন পদ্মা ও মেঘনার মিলিত স্রোতে দক্ষিণ বাংলার বুক চিরে বয়ে চলত রূপসা, ভৈরব আর আটরা খাল, তখন এই অঞ্চল ছিল নিবিড় বনভূমি ও জলাভূমির এক বিস্ময়কর মিশেল। ইতিহাস বলে, খুলনার গোড়াপত্তন হয়েছিল নদীপথকে ঘিরেই। স্থানীয় লোককথা, প্রত্নতত্ত্ব ও সাহিত্যিক দলিল মিলিয়ে খুলনার জন্মকথা যেন এক রূপকথারই প্রতিচ্ছবি।

‘খুলনা’ নামকরণটি নিয়েও অনেক কিংবদন্তি ও গল্প প্রচলিত আছে। অনেকের মতে, ‘খুলনা’ নামটি এসেছে ‘খুল্লতন নগর’ থেকে, যেখানে দেবতা শিবের পূজা–অর্চনা হতো। আবার কারও মতে, ‘খুল’ মানে জলপথ বা খাল, আর ‘না’ মানে নদীর প্রবাহ থামা। অর্থাৎ যেখানে খাল থেমে নদীতে মেশে, সেখান থেকেই নাম হয়েছে ‘খুলনা’।

খুলনার পুরাকীর্তি নামে একটি বই লিখেছেন মিজানুর রহমান। তিনি বর্তমানে ঢাকার সরকারি তিতুমীর কলেজের উপাধ্যক্ষ হিসেবে কর্মরত। তিনি বলেন, এক সওদাগরের দুই মেয়ে ছিল। এক মেয়ের নাম খুল্লনা ও আরেকজনের নাম ছিল অহনা। ধারণা করা হয়, ওই সওদাগর তাঁর মেয়ের নামানুসারে শহরের নাম রাখেন খুলনা। এ ছাড়া সপ্তদশ শতকে খুলনার ভৈরব নদ থেকে ডুবে যাওয়া জাহাজ উদ্ধার করা হয়। সেই জাহাজের গায়ে Culna শব্দটি লেখা ছিল। ব্রিটিশ আমলে যে মানচিত্র তৈরি করা হয়, সেখানেও খুলনাকে Culna লেখা হয়।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৫ শতকে সুফি সাধক খানজাহান আলী যখন দক্ষিণ বাংলায় আসেন, তখন তিনি সুন্দরবনের প্রান্তঘেঁষা এ অঞ্চলটিকে সভ্যতার আলোয় আলোকিত করেন। তাঁরই নেতৃত্বে খনন করা হয় নানা দিঘি, খাল ও রাস্তা। ‘ডাকাতদের জনপদ’ থেকে ‘আধ্যাত্মিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র’—এই রূপান্তরের শুরু সেখান থেকেই।

অনেক পুরোনো শহর খুলনা। শহরের মিউনিসিপ্যাল বোর্ড গঠিত হয় ১৮৮৪ সালে। খুলনা শহরের রয়েল মোড়ে

সম্পর্কিত নিবন্ধ