অর্থ বিভাগের সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার বলেছেন, বাংলাদেশের সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আর্থিক ঝুঁকি কমিয়ে আনতে এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভ্যন্তরীণ অডিটিং এর গুরুত্ব বিবেচনা করে অর্থ বিভাগ স্বতন্ত্র অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগ স্থাপন করেছে, যা আগামী সপ্তাহ থেকে সম্পূর্ণ কার্যকর হবে।  

শুক্রবার মানিকগঞ্জে ‘ইন্টারনাল অডিটিং জার্নি ইন পাবলিক সেক্টর’ বিষয়ক স্টেকহোল্ডারদের পরামর্শ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য এ কথা বলেন তিনি।

খায়রুজ্জামান মজুমদার বলেন, আর্থিক ব্যবস্থাপনা শুধু অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়, সরকারের সব ব্যয় নির্বাহী প্রতিষ্ঠানও এর সঙ্গে যুক্ত। তাই অর্থ মন্ত্রণালয় পাঁচটি ‘হাই স্পেনর্ডি ডিপার্টমেন্ট’, যেখানে প্রকিউরমেন্ট বেশি হয়– প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, গণপূর্ত অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে অভ্যন্তরীণ অডিটিং পাইলটিং হচ্ছে। এ উদ্যোগ সুদূর প্রসারী হবে এবং পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে চালু করার জন্য সরকার কাজ করেছে। 

কর্মশালার উদ্বোধনী অধিবেশনটি সভাপতিত্ব করেন বাজেট ও ব্যয় ব্যবস্থাপনা অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব 
সিরাজুন নূর চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড.

মো. আব্দুল হাকিম, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান, গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম। 

জাতীয় কর্মসূচি পরিচালক  অতিরিক্ত সচিব (বাজেট-১) বিলকিস জাহান রিমি স্ট্রেনদেনিং পাবলিক ফাইন্যান্সিয়াল ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম টু এনবেল সার্ভিস ডেলিভারি (এসপিএফএমএস) অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে রাখেন। 

সিরাজুন নূর চৌধুরী বলেন, ইন্টারনাল কন্ট্রোল স্থাপন, আর্থিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য ইন্টারনাল অডিটের গুরুত্ব অপরিসীম।  

মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সিস্টেম ডিজিটাইজড করার পাশাপাশি এই সিস্টেম ব্যবহারকারী, বিশেষকরে ভেন্ডারদের দক্ষতার বিষয়টিও ভাবতে হবে। 

ড. মো. আব্দুল হাকিম বলেন, ইন্টারনাল অডিট বাস্তবায়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা উন্নয়ন খুবই জরুরি। 


বিলকিস জাহান রিমি বলেন, ইন্টারনাল অডিট ম্যানেজমেন্টের ‘থার্ড আই’ হিসেবে কাজ করে এবং এর মাধ্যমে সরকারি বিধিবিধান অনুসরণ করে আর্থিক ব্যবস্থাপনা হচ্ছে কিনা তা জানা যায়।  সরকারি পর্যায়ে আমরা পাঁচটি ‘হাই স্পেনর্ডি ডিপার্টমেন্ট’ – প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, গণপূর্ত অধিদপ্তর, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে এ  কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আমরা পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে সম্প্রসারণ করা হবে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আর থ ক সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সওজের জমি দখল করে দেয়াল

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জমির দেয়াল নির্মাণ করে দখল করা হয়েছে। এতে সড়কটি সংকুচিত হয়ে পথচারীদের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।

উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের জাইদেরগাঁও এলাকায় ডিপলেড ওয়্যার ল্যাবরেটরি লিমিটেড নামের একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। দখল হওয়া জমি উদ্ধারের জন্য গত মঙ্গলবার এলাকাবাসীর পক্ষে এস এম জামালউদ্দিন আহম্মেদ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের প্রধান প্রকৌশলীর কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।

প্রকৌশলীর কাছে দেওয়া অভিযোগ থেকে জানা যায়, ডিপলেড ওয়্যার ল্যাবরেটরি সওজের ওই জমিতে দেয়াল নির্মাণের পর বালু ভরাটের পাঁয়তারা শুরু করেছে। এ ছাড়া তাদের দখল করা সওজের জমিসহ বাংলা ফুড নামের একটি কোম্পানির জমির বিরোধ নিয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। বাংলা ফুডের পক্ষে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানি মামলা হলে ২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আদালত সেখানে স্থাপনা নির্মাণে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এর বিপরীতে নারায়ণগঞ্জের দ্বিতীয় যুগ্ম জজ আদালতে আরেকটি দেওয়ানি মামলা করে ডিপলেড ওয়্যার ল্যাবরেটরি। ২০২৪ সালের ২৪ নভেম্বর সেখানে স্থিতিবস্থা বজায় রাখার আদেশ দেন আদালত। সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) এ আদেশ তামিল করার নির্দেশও দেন আদালত। কিন্তু এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গত ২৩ নভেম্বর বিবাদী লায়ন মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান নান্নু ও তাঁর ভাই আবদুল লতিফ মিয়া ওই জমিসহ সওজের জমি দখল করে দেয়াল নির্মাণ করেন।

এলাকাবাসী জানান, দখল করে দেয়াল নির্মাণ করা জমিটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ সড়ক নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণ করে। অধিগ্রহণ করা জমির পাশের  রাস্তা নিয়ে চার গ্রামের মানুষ চলাচল করে। ওই জমিতে দেয়াল নির্মাণ করার কারণে মানুষের চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। দ্রুত দেয়াল উচ্ছেদ করে মানুষের চলাচল নির্বিঘ্ন করার দাবি জানিয়েছেন তারা।

জাইদেরগাঁও গ্রামের আমজাদ হোসেন বলেন, রাস্তা খুঁড়ে কোম্পানি দেয়াল নির্মাণ করায় তাদের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। গাড়ি নিয়ে এ রাস্তায় চলাচল করা যায় না। দেয়াল নির্মাণ করায় রাস্তা সরু হয়ে গেছে।

মোগরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মামুন মিয়া বলেন, সওজের জায়গা দখল করার বিষয়টি তাঁর জানা নেই। কোম্পানি দখল করে থাকলে উচ্ছেদে সহযোগিতা করা হবে।

ডিপলেড ওয়্যার ল্যাবরেটরি লিমিটেডের পরিচালক আবদুল লতিফ বলেন, তারা নিজেদের জমিতেই দেয়াল নির্মাণ করেছেন। সওজের জমি দেয়ালের বাইরে রাখা হয়েছে। সওজ মাপজোখ করলেই তাদের জমি পাওয়া যাবে।

সোনারগাঁ থানার ওসি মোহাম্মদ আবদুল বারী বলেন, আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা জমিতে দেয়াল নির্মাণের সময় পুলিশ বাধা দিয়েছিল। পরে তারা দেয়াল নির্মাণ করে ফেলে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ উচ্ছেদ করার সময় পুলিশের সহযোগিতা পাবে। 

সোনারগাঁ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মঞ্জুর মোর্শেদ জানান, তিনি নতুন যোগদান করেছেন। আগের এসিল্যান্ডের কাছে আদালতের নির্দেশনা তামিল করার চিঠি আসতে পারে।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ নারায়ণগঞ্জের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আল রাজী লিয়ন বলেন, অভিযোগটি পেয়েছি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সওজের জমি দখল করে দেয়াল