কুমিল্লার বুড়িচংয়ে বালু নিয়ে খেলা করায় চার বছরের শিশুকে পুকুরে ফেলে দেন এক শিক্ষক। উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্বপাড়া মঞ্জুর আলী সর্দার বাড়িতে বৃহস্পতিবার এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে। 

অভিযুক্ত শাহজাহান বুড়িচং উপজেলা সদরের ফজলুর রহমান মেমোরিয়াল কলেজ অব টেকনোলজির শিক্ষক। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। 

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে শাহজাহানকে শিশুটির মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করতে দেখা যায়। এ সময় তিনি পুকুরে ফেলার কথা স্বীকার করেন। শিশুটি বর্তমানে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। 

এজাহারে বলা হয়, বুড়িচং থানার পূর্বপাড়ার বাসিন্দা নজির আহম্মেদের দুই মেয়ে– চার বছরের মিফতাহুল মাওয়া ও ১০ বছরের গালিবা সুলতানা বালু নিয়ে খেলা করছিল প্রতিবেশী শাহজাহানের বাড়ির সামনে। এতে তিনি উত্তেজিত হয়ে মিফতাহুলকে মারধর করে পুকুরে ফেলে দেন। এ সময় গালিবা চিৎকার করলে শাহজাহান তাকেও মারধর করেন। তার চিৎকারে স্থানীয়রা এসে পুকুর থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান। 

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, শিশুটির মা শামছুন নাহার তানিয়া অভিযুক্ত শাহজাহানকে বলছিলেন, ‘আপনার মধ্যে কি মনুষ্যত্ব নাই? আমার বাচ্চাকে এভাবে পানিতে ফেলে দিলেন! একটু বালু ফেলে দিয়েছে বলে বাচ্চাকে পুকুরে ফেলে দেবেন?’ তখন ওই ব্যক্তি পাল্টা বলেন, ‘তোমার বাচ্চা নাকি কার বাচ্চা– এটা আমি দেখব না। আমার কাছে শিশুর চেয়ে বালুর মূল্য বেশি। তোমার বাচ্চা আমার এখানে আসবে কেন?’

শিশুটির মা তানিয়া বলেন, ‘আমার সন্তানকে মাস্টার শাহজাহান হত্যার চেষ্টা করেছেন। আমি প্রশাসনের কাছে বিচার চাই। ঘটনার সময় যদি আমার বড় মেয়ে উপস্থিত না থাকত, তাহলে বাচ্চাকে হত্যা করা হতো।’ 

ঘটনার পর শাহজাহান আত্মগোপনে চলে যান। তাঁর মোবাইল পাওয়া গেছে। 

বুড়িচং থানার ওসি আজিজুল হক বলেন, শুক্রবার সকালে শিশুর মা বাদী হয়ে শিশু নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলা করেছেন। আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। 
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ