নির্বাচনের জন্য ‘অস্থির’ বিএনপির সমালোচনায় চরমোনাই পীর
Published: 17th, January 2025 GMT
দ্রুত নির্বাচনের দাবি তোলায় বিএনপির কড়া সমালোচনা করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম। সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির (পিআর) বিরোধিতারও সমালোচনা করেছেন তিনি। চরমোনাই পীর বলেছেন, ‘যারা নাকি নির্বাচন করতে অস্থির হয়ে গেছেন, পিআর পছন্দ করছেন না। মানুষ সজাগ হয়েছে। জরিপ করে দেখেন।’
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামী যুব আন্দোলনের কনভেনশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
বইমেলার জন্য বাংলা একাডেমির অনুরোধে গণপূর্ত অধিদপ্তর উদ্যান ব্যবহারের অনুমতি বাতিল করলেও সমাবেশ করে যুব আন্দোলন। তবে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার জন্য সকালের পরিবর্তে বাদ জুমা সমাবেশ হয়। দুপুরে উদ্যান ছাপিয়ে আশপাশের সড়কও পূর্ণ হয়ে যায় সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের জমায়েতে। শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবন সড়কে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে চরমোনাই পীর বলেন, অনেকে মনে করছে বড় তালগাছ হয়ে গেছেন। আসলে পায়ের নিচে মাটি নেই। চাঁদাবাজ, দখলকারী, খুনিদের মানুষ দেখতে চায় না। গ্রামে একটা কথা আছে- গোদা পা দিয়ে লাথি মারলে শক্তি থাকে না। এটা জানা হয়ে গেছে।
অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিল তাদের নতুন কিছু দেওয়ার নেই বলে মন্তব্য করেন ইসলামী আন্দোলনের আমির।
বিএনপি আওয়ামী লীগকেও নির্বাচনে চায়, এমন ইঙ্গিত দিয়ে রেজাউল করিম বলেন, যারা হাজার মায়ের কোল খালি করেছে, তাদের নির্বাচনের আনার আহ্বান কীসের ইঙ্গিত? মায়েদের কান্না এখনও শেষ হয়নি। আর তাদের নিয়ে এসে ক্ষমতা দখল করবেন। ভারতের দোসরদের খুশি করবেন!
সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতেই নির্বাচন হবে হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, আবার আপনারা এককভাবে ক্ষমতায় গিয়ে আমাদের ওপর স্টিম রোলার চালাবেন- তা হবে না। দেশের টাকা পাচার করবেন, বিদেশে বেগম পাড়া করবেন- মানুষ আর তা দেখতে চায় না। প্রয়োজনে আবার রক্ত দেব।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে রেজাউল করীম বলেন, অভ্যুত্থানের হাজারো প্রাণের বিনিময়ে ক্ষমতায় বসেছেন। কিন্তু আপনাদের কাজকর্মগুলো অনেকাংশে প্রশ্নবিদ্ধ। তা দেখে দুঃখ হয়।
সংবিধান সংস্কার কমিশন দ্বিকক্ষের সংসদ এবং নিম্নকক্ষে নারীদের জন্য ১০০ আসন সংরক্ষণের সুপারিশ করেছে। এর বিরোধিতা করে ইসলামী আন্দোলনের নায়েবে আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করিম বলেন, আসন কম-বেশি হোক সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন হতে হবে। কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলনের পর নারীদের জন্য কোটা রাখা যাবে না।
ফয়জুল করিম বলেন, যারা সংস্কারে বাধা সৃষ্টি করেছেন, তারা ১৬ বছর কোথায় ছিলেন? রাখঢাক না রেখেই বলব, বিএনপি কোথায় ছিল? প্রতিবার ঈদের পর আন্দোলন হবে বলেছেন। কিছু করতে পারেনি। ছাত্র-জনতা আন্দোলনে যে অর্জন হয়েছে, তা ধ্বংসের চক্রান্ত করছেন। ৫ আগস্টের পরেও চাঁদাবাজি দখলবাজি চলছে। যারা বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন করেছে, জনগণ তাদের আর ক্ষমতায় চায় না।
আতিকুর রহমান মুজাহিদকে যুব আন্দোলনের সভাপতি ও মানসুর আহমেদ সাকিকে সেক্রেটারি জেনারেল ঘোষণা করেন ইসলামী আন্দোলনের আমির রেজাউল করিম।
যুব আন্দোলনের সভাপতি নেছার উদ্দিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে হিন্দু মহাজোটের সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নসহ ইসলামী আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ নেতারা বক্তব্য রাখেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ চরম ন ই প র চরম ন ই প র ক ষমত য় র জন য করব ন ব এনপ ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ঠিকাদার বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ২ প্রকৌশলীকে হুমকির অভিযোগ
খুলনা নগরীর খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্লা সোহাগের বিরুদ্ধে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) দুই প্রকৌশলীকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। কুয়েটের একটি ভবনের ছাদের ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজে ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে লাভ আরও বেশি নির্ধারণের কথা বলেছিলেন ওই ঠিকাদার। এ নিয়ে প্রকৌশলীদের তিনি হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ প্রেক্ষাপটে কুয়েটের নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) শেখ আবু হায়াত ও নির্বাহী প্রকৌশলী (পুর) মো. গোলাম কিবরিয়া সোমবার কুয়েট উপাচার্যের কাছে লিখিত অভিযোগ করে নিরাপত্তা চেয়েছেন।
সূত্র জানায়, কুয়েটের ১৩ নম্বর ভবনের ছাদের ওপর ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজ নিয়েছেন মোল্লা সোহাগ। কাজটি কয়েকদিন আগে শুরু হয়। গত রোববার বিকেল ৩টার দিকে ঠিকাদার সোহাগ প্রথমে নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়ার ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী এ বি এম মামুনুর রশিদ এবং অন্য নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াতকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও হুমকি দেন। গালাগাল করতে নিষেধ করলে তিনি গোলাম কিবরিয়াকেও গালাগাল ও হুমকি দেন। পরে তিনি একই পরিচয় দিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াতকে ফোনে গালাগাল ও হুমকি দেন।
উপাচার্যের কাছে দুই নির্বাহী প্রকৌশলী লিখিত অভিযোগে বলেন, ওয়াটারপ্রুফিংয়ের কাজের দর প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ের প্রকৌশলীরা বাজারদরের সঙ্গে সরকারি নিয়মে ভ্যাট, আইটি ও ১০ শতাংশ প্রফিট বা লাভ (পূর্বনির্ধারিত) যুক্ত করে নির্ধারণ করেন। ঠিকাদার সোহাগ ১০ শতাংশ লাভ কেন যুক্ত করে দর নির্ধারণ করা হয়েছে, তাঁকে আরও বেশি লাভ দিতে হবে বলে ফোনে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়াকে জানান। এ কথা বলার পর প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। কিন্তু কোনো কথা না শুনে ফোনে প্রকৌশলী গোলাম কিবরিয়া ও শেখ আবু হায়াতকে গালাগাল ও মারধরের হুমকি দেন সোহাগ। এ অবস্থায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ আবু হায়াত বলেন, রোববার বিকেল ৩টার কিছু আগে খানজাহান আলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয়ে আমাকে ফোন দিয়ে বলে– ‘তুই চেয়ারের পরে বসে সবাইরে ১০ লাখ ২০ লাখ টাকার কাজ দিস। আমাকে দিছিস টেন পারসেন্ট লাভে।’ এই বলে আমাকে যাচ্ছেতাই বলে গালাগাল করেন। পাঁচ মিনিট পর ফোন দিয়ে আমাকে দেখে ছাড়বেন, আমার বাড়ি আক্রমণ করবেন, ফুলবাড়িগেটে গেলে আমাকে দেখে নেবেন– এসব বলে হিুমকি দেন।
নিজের সাংগঠনিক পরিচয় ও প্রকৌশলীকে ফোন দেওয়ার কথা স্বীকার করেন মোল্লা সোহাগ। তবে কোনো ধরনের ঠিকাদারি কাজের সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলে দাবি করেন। মোল্লা সোহাগ বলেন, আমার নেতার অর্ডার আছে– আমি কোনো জায়গায় কোনো টেন্ডারেও যাই না, কোনো ঠিকাদারিতেও নেই। আমার কোনো কাজ কুয়েটে চলে না। আমার ট্রেড লাইসেন্সই নেই, কাজ পরের কথা। আমি তাদের (প্রকৌশলী) ফোন দিয়েছিলাম, কথা হয়েছে, তবে কোনো হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়নি।
কোনো কাজ চলছে না, তাহলে প্রকৌশলীদের কার হয়ে ফোন দিয়েছিলেন– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা আবু হায়াত ও গোলাম কিবরিয়াকে ফোন দিলে ভালোভাবে জানতে পারবেন।’