বিদেশিদের পারফরম্যান্সে সিলেটের হতাশা, পরিবর্তনের আভাস
Published: 17th, January 2025 GMT
সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে বিপিএলে খেলতে আসা বিদেশি তারকাদের পারফরম্যান্স নিয়ে চলছে সমালোচনা। জর্জ মানজি, পল স্টার্লিং এবং অ্যারন জোন্সের মতো মারকুটে ব্যাটসম্যান থাকা সত্ত্বেও তারা নিজেদের সেরা ছন্দ খুঁজে পাচ্ছেন না। ফলে দলের ফলাফলেও পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব। দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে হারের পর সিলেট অধিনায়ক আরিফুল হক জানিয়েছেন, বিদেশি ক্রিকেটারদের এভাবে ব্যর্থতা চলতে থাকলে পরিবর্তন আনতে হবে।
এবারের বিপিএলে এখন পর্যন্ত ৭টি ম্যাচে মাত্র ২টি জয় পেয়েছে সিলেট। বিশেষ করে ষষ্ঠ ম্যাচে চিটাগং কিংসের বিপক্ষে জয়ের সুযোগ তৈরি হলেও মানজি ও জোন্সের ধীরগতির ব্যাটিংয়ের কারণে তা হাতছাড়া হয়। সপ্তম ম্যাচেও রাজশাহীর বিপক্ষে ১৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় বিদেশি ব্যাটারদের ব্যর্থতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
রাজশাহীর বিপক্ষে ম্যাচে সিলেটের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৯ রান করেন জাকির হাসান। আরেক ব্যাটার জাকের আলীর সংগ্রহ ছিল ৩১। অন্যদিকে, স্টার্লিং করেন মাত্র ৫ বলে ২, মানজি ২২ বলে ২০ এবং জোন্স ৬ বলে ৫ রান। পুরো আসরে মানজির ব্যাট থেকে এসেছে ৭ ম্যাচে ১৩৩ রান, জোন্স করেছেন ৯২ রান এবং স্টার্লিং ৪ ম্যাচে করেছেন মাত্র ২৪ রান। এমন পরিসংখ্যান বিদেশি ক্রিকেটারদের প্রতি দলের আস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।
ম্যাচ শেষে আরিফুল হক বলেন, ‘আমাদের বিদেশিরা সাপোর্ট করছে না। সাতটা ম্যাচে দেশি ক্রিকেটাররাই পারফর্ম করেছে। যদি বিদেশিরা সাপোর্ট না করে, তাহলে ১৮০ রান তো দূরে থাক, ১৫০ রান তাড়াও সম্ভব নয়।’
পরিস্থিতি বদলাতে পরিবর্তনের আভাস দিয়েছেন তিনি। আরিফুল জানান, কোচিং স্টাফদের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ম্যাচে পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। শুধু ব্যাটিং নয়, বোলিং এবং ফিল্ডিংয়েও ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারছে না সিলেট। আরিফুল বলেন, ‘আমরা তিনটি বিভাগেই একসঙ্গে ভালো করতে পারছি না। টপ অর্ডারে রান না হলে শেষের ব্যাটাররা যতই চেষ্টা করুক, ১২০ বা ১৫০ রানই সম্ভব।’
তিনটি বিভাগে সিলেটকে উন্নতি করার পরামর্শ দিয়ে আরিফুল আরও বলেন, ‘জয়ের জন্য আমাদের তিনটি জায়গায় একসঙ্গে পারফর্ম করতে হবে। টপ অর্ডার ভালো করলে শেষের ব্যাটাররা আরও ভালোভাবে ইনিংস ক্যারি করতে পারবে।’
সিলেট স্ট্রাইকার্সের জন্য পরবর্তী ম্যাচগুলোতে বিদেশি ক্রিকেটারদের ফর্মে ফেরা অত্যন্ত জরুরি। টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনার পর দলীয় কৌশলে পরিবর্তন এনে পরিস্থিতি বদলানোর চেষ্টা করবেন আরিফুলরা।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সামনের দশকেই শিরোপা জেতবে আফগানরা: স্টেইন
আইসিসি ইভেন্টে আফগানিস্তান সাম্প্রতিক সময়ে বেশ নজরকাড়া পারফরম্যান্স করছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি বাংলাদেশের অনেক পরে ক্রিকেট শুরু করেও এগিয়ে গিয়েছে অনেক। হাশমতউল্লাহ শহীদির নেতৃত্বাধীন দলটি ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কাকে পরাজিত করে রাউন্ড-রবিন পর্ব থেকে সেমিফাইনালে উঠার দৌড়ে ছিল।
এবারের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমি ফাইনালের দৌড়ে এখনও কাগজে কলমে টিকে আছে দলটি। যদিও নেট রান রেটের হিসেব বলছে তাদের পক্ষে সেমি ফাইনাল খেলা সম্ভব নয়। পরপর দুবার আইসিসির বৈশ্বিক ওয়ানডে আসরে খুব কাছে গিয়েও সেমি ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয় তারা।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশের বিপক্ষে নামছেন সাকিব!
ব্যর্থ মিশন শেষে দেশে ফিরলেরন শান্ত-মুশফিকরা
তবে আফগানদের আগামীতে উজ্জ্বল ভবিষ্যত দেখছেন সাবেক তারকা ক্রিকেটাররা। কদিন আগেই বাংলাদেশ তো বটেই এমনকি পাকিস্তানের মতো পরাশক্তিকেও আফগানদের দেখে ক্রিকেট শিখতে বলেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসেইন। এবার দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি পেসার ডেল স্টেইন বলেছেন সামনের দশকের মাঝেই আইসিসির বৈশ্বিক শিরোপা জিতবে আফগানরা।
স্টেইন আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়ে মন্তব্য করেছেন ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোতে। প্রোটিয়াদের হয়ে আন্ত্ররজাতিক ক্রিকেটে ৬৯৯ উইকেটের মালিক বলেছেন যে আফগানদের আরও ধৈর্য্য শেখা প্রয়োজন। যখন তাদের পরিকল্পনা অনুসারে কিছু ঘটে না, তখন অনেক সময়ই মাঠে তারা অস্থির হয়ে ওঠে। কিংবদন্তি এই গতিতারকা আরও যোগ করেছেন যে, যদি তারা ধৈর্য্যের কৌশল শিখে ফেলে, তবে আগামী দশ বছরের মাঝেই তারা একটি আইসিসি টুর্নামেন্ট জিততে পারবে।
স্টেইন বলে, “আমরা এখন এমন একটি সময়ে আছি যেখানে মানুষ ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলেছে। আমরা দুই সেকেন্ডের একটি ইনস্টাগ্রাম স্টোরি দেখা ছাড়া কিছুই সহ্য করতে পারি না, এবং আফগানিস্তানের খেলোয়াড়দেরও মাঠে খেলতে গিয়ে ঠিক তেমনই মনে হয়। ধৈর্য্য হল আফগানিস্তানের খেলোয়াড়দের শেখার সবচেয়ে বড় বিষয়। একবার যদি তারা এটা শিখে নেয়, তবে সাচ্ছন্দ্যে আগামী দশ বছরে তারা আইসিসি টুর্নামেন্ট জয় করতে পারবে।”
“তারা চায় সব কিছু দ্রুত ঘটুক। এই বলটা একটা উইকেট হতে হবে, উইকেট নেওয়ার জন্য ধৈর্য্য নেই। ব্যাটসম্যানরাও অনেক সময় প্রথম ওভারে আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করতে থাকে। ক্রিজে অনেক বেশি নড়াচড়া করে। তারা ছক্কা মারতে চায় এবং খেলায় দ্রুত নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়।”- যোগ করেন স্টেইন।
উল্লেখ্য আফগানিস্তান ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রশিদ খান নেতৃত্বে সেমিফাইনালে পৌঁছেছিল।
ঢাকা/নাভিদ