এক পরিবারের তিনজনকে কোপাল সন্ত্রাসীরা, নিহত ১
Published: 17th, January 2025 GMT
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে জমি নিয়ে বিরোধে এক পরিবারের তিনজনকে কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পোগলদিঘা ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে বিপুল মিয়া (৪৫), তাঁর স্ত্রী মুক্তা বেগম (৩৫) ও মা আসমা বেগমকে (৬৫) সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। চিকিৎসক বিপুল মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। মুক্তা ও আসমার হাত-পায়ের রগ কাটা ছিল। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাদের ময়নমসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আসাদুজ্জামান আপেলের সঙ্গে চাচাতো ভাই বিপুলের বসতবাড়ির ১৩ শতাংশ জমি নিয়ে বিরোধ। কয়েক দিন আগে বিপুল বসতভিটার দুটি গাছ কাটার সিদ্ধান্ত নেন। বাধা দেওয়ার সন্দেহে সরিষাবাড়ী থানায় আপেলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। এটা জানতে পেরে গতকাল সকালে আপেলের নেতৃত্বে কাটারি, চাপাতি, রামদা নিয়ে বিপুলের বাড়িঘরে হামলা হয়। তারা বিপুল, তাঁর স্ত্রী ও মাকে এলোপাতাড়ি কোপায়। এতে বিপুলের ডান পা ও ডান হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মুক্তার বাঁ পা ও দুই হাতের কবজি, আঙুল এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে ক্ষত করে। আসমার ডান হাত ভেঙে গেছে। ঘটনার সময় বিপুল ও মুক্তার সন্তান খেলতে খেলতে বাড়ির দিকে আসছিল। এ সময় বিপুলের ভাইয়ের স্ত্রী আঁখি আক্তার তাকে নিয়ে পালিয়ে যান।
আঁখি আক্তার বলেন, ‘ঘটনার সময় বিপুল ভাইয়ের ছেলে মমিন (১২) বাড়িতে ছিল না। ওই সময় বাইরে থেকে বাড়ির দিকে আসছিল। আমি কিছু বুঝতে না দিয়ে রাস্তা থেকে মমিনকে নিয়ে পালিয়ে যাই। মমিন থাকলে ওকেও মেরে ফেলত ওরা।’
সরিষাবাড়ী থানার ওসি চাঁদ মিয়া বলেন, ‘জমি নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ দুই পরিবারের। এর জের ধরে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে কয়েকটি দল কাজ করছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আপেলের মা আনোয়ারা বেগমকে আটক করা হয়েছে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জখম ক প য় জখম সময় ব
এছাড়াও পড়ুন:
বাউফলে তরমুজভর্তি ট্রলার ছিনতাইয়ের মামলায় যুবদল কর্মীসহ গ্রেপ্তার ৩
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নদীবেষ্টিত চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে চাঁদার দাবিতে কৃষকের তরমুজভর্তি ট্রলার ছিনতাই ও চাঁদাবাজির অভিযোগে হওয়া মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর পাশাপাশি ছিনতাই হওয়া পাঁচ শ তরমুজ উদ্ধার করে ওই কৃষকের ছেলেকে বুঝিয়ে দিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের যুবদল কর্মী মো. সাইফুল, মো. মেহেদী হাসান (২০) ও গোলাম মুর্তজা (৪০)। এর মধ্যে মামলার প্রধান আসামি সাইফুলকে গত বুধবার রাতে এবং মেহেদী ও মুর্তজাকে আজ শনিবার সকালে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাইফুল নাজিরপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে তাঁকে উপজেলা ছাত্রদল বহিষ্কার করেছে। বর্তমানে তিনি যুবদলের সক্রিয় কর্মী বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশ, স্থানীয় চাষি ও ভুক্তভোগী কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার খেত থেকে ৮৬০টি তরমুজ কেটে ট্রলারে উঠিয়ে বরিশাল নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন কৃষক মো. মানিক ব্যাপারী। দুপুর ১২টার দিকে বিএনপি নেতা এনায়েত হোসেনের ছেলে মো. সাইফুল (৩৫) দেশি অস্ত্রসহ ২০-২৫ জনের একটি দল নিয়ে ট্রলারের চালককে মারধর করেন। এরপর চর রায়সাহেব থেকে তরমুজভর্তি ট্রলারটি ছিনিয়ে নিয়ে নিমদী লঞ্চঘাটের দক্ষিণ পাশে ইটভাটার কাছে নিয়ে নোঙর করে রাখেন তাঁরা। খবর পেয়ে কৃষক মানিক ব্যাপারী সেখানে গিয়ে ট্রলারসহ তরমুজ ফেরত চাইলে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন সাইফুল ও তাঁর লোকজন। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে মানিক ব্যাপারী ও তাঁর ছেলে সাগরকে মারধর করে তরমুজ অন্য ট্রলারে উঠিয়ে নিয়ে যান সাইফুল। পরে ছয় হাজার টাকার বিনিময়ে ট্রলার ফেরত দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় বুধবার রাত ১২টার দিকে মো. মানিক ব্যাপারী বাদী হয়ে মো. সাইফুল ইসলামসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে আরও ২৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির নামে বাউফল থানায় মামলা করেন। ওই রাতেই পুলিশ সাইফুলকে গ্রেপ্তার করে। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সাইফুলের বিরুদ্ধে আগে থেকে দুটি মাদক মামলা, চাঁদাবাজিসহ অন্তত ছয়টি মামলা আছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, ‘প্রধান আসামিসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লুট হওয়া পাঁচ শ তরমুজ উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আশা করছি খুব কম সময়ের মধ্যে বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।’