কাবার সাবেক ইমামের পেছনে নামাজ আদায়: খুশি ফেনীর মুসল্লিরা
Published: 17th, January 2025 GMT
প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এসেছেন পবিত্র কাবা শরিফের সাবেক ইমাম ও সিনিয়র মুহাদ্দিস, মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন, সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ওলামা বোর্ডের ফকিহ ড. শায়েখ হাসান বিন আবদুল হামিদ বুখারি।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার সিন্দুরপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর দারুল উলুম মহিউচ্ছুন্নাহ মাদরাসায় আয়োজিত ১০ম আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলনে জুমার নামাজের ইমামতি করেন তিনি।
কাবার সাবেক এ ইমামের পেছনে নামাজ আদায়ের জন্য এদিন সকাল থেকে রঘুনাথপুর এলাকায় মুসল্লিদের ঢল নামে। দূর-দূরান্ত থেকে লক্ষাধিক মানুষ সম্মেলনস্থলে সমবেত হন।
ড.
ফেনী সদরের ধর্মপুর এলাকা থেকে জুমার নামাজে অংশ নিতে আসেন তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, “পবিত্র কাবার ইমামের পেছনে নামাজ আদায় করতে অনেক দূর থেকে এসেছি। প্রথমবার এতো বড় আলেমকে সরাসরি দেখার সুযোগ হয়েছে। এ অনুভূতি অনেক আনন্দের।”
মোহাম্মদ মামুন নামে আরেক মুসল্লি বলেন, “প্রতিবছর এখানে অনেক বড় জামাতে জুমার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। তবে এবার পবিত্র কাবা শরিফের সাবেক ইমাম প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আসার খবরে দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ এসেছে। তাকে কাছে থেকে দেখেছি। নামাজে অংশ নিতে পেরে খুব আনন্দিত ও ভাগ্যবান মনে করছি।”
সম্মেলনের আয়োজক মাওলানা সালাহউদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, “এখানে বিগত বছরে দেশ ও দেশের বাইরের বরেণ্য আলেমদের অংশগ্রহণে ইসলামী মহাসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি এবারের আয়োজন করা হয়েছে। কাবা শরীফের সাবেক ইমাম শায়েখ ড. হাসান বুখারির উপস্থিতি এবারের আয়োজনে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। সবমিলিয়ে লক্ষাধিক মানুষ জুমার নামাজে অংশ নিয়েছেন।”
এর আগে দুপুরে ড. হাসান বুখারি হেলিকপ্টারযোগে এসে রঘুনাথপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নামেন। নামাজ আদায় শেষে তিনি আবার ঢাকায় ফিরে যান।
ড. শায়েখ হাসান বিন আবদুল হামিদ বুখারি একজন প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলার, যিনি কাবা শরিফের ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ও সৌদি আরবের সর্বোচ্চ ওলামা বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
কর্মজীবনের শুরুতে তিনি ২০০০ সাল থেকে ২০০৩ পর্যন্ত মসজিদ আল হারামাইন শরিফের অভ্যন্তরীণ একাডেমি শিক্ষক ছিলেন। ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয় আরবি ভাষা ইনস্টিটিউটের প্রভাষক ছিলেন। এরপর তিনি ২০০৮ ও ২০১৫ সালে দুইবার উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় সরকারি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
প্রতিষ্ঠানের নায়েবে মুহতামিম মুফতি আহমাদুল্লাহ কাসেমীর সভাপতিত্বে ইসলামী এ মহাসম্মেলনে সৌদি আরবের মক্কার হারাম শরীফের মুফতি শায়েখ মুহাম্মদ বিন মাতার আস-সেহলী, ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দের হাদীস ও ফিকহ বিভাগের শিক্ষা সচিব শায়েখ আফজাল কাইমুরী, আল্লামা নুরুল ইসলাম ওলিপুরী, শানে সাহাবা খতিব ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুফতি শামীম মজুমদার, মাওলানা আশেকে এলাহী, আন্তর্জাতিক কেরাত সংস্থা বাংলাদেশের মহাসচিব সাদ সাইফুল্লাহ মাদানী, মুফতি আব্দুল্লাহ আল সালেহী ও মাওলানা মেরাজুল হক বয়ান করেন।
ঢাকা/সাহাব উদ্দিন/এস
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যমজ বোনের ডেন্টালে ভর্তির সুযোগে আনন্দ, প্রথমবারের মতো আলাদা হওয়ার কষ্ট
টাঙ্গাইলের সখীপুরে যমজ বোন ডেন্টাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। গতকাল রোববার ডেন্টাল কলেজে বিডিএসে ভর্তি পরীক্ষার (২০২৪-২৫) ফলাফলে যমজ বোন উত্তীর্ণ হয়েছেন।
এই দুই বোন হলেন সামিয়া জাহান ওরফে আফসানা ও সাদিয়া জাহান ওরফে শাহানা। সামিয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটে এবং সাদিয়া রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল ইউনিটে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন।
এর আগে সখীপুরে আরেক শিক্ষক দম্পতির যমজ মেয়ে যারিন তাসনিম বুয়েটে এবং যাহরা তাসনিম মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পান।
আরও পড়ুনএক বোনের বুয়েটে আরেকজনের মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ, প্রথমবার আলাদা হচ্ছেন তাঁরা০১ মার্চ ২০২৫সামিয়া ও সাদিয়ার পরিবার সূত্রে জানা যায়, সখীপুর পৌর এলাকার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাহারতা এলাকার বাসিন্দা আল আমিন মিয়া ও আফিয়া আক্তার দম্পতির যমজ মেয়ে সামিয়া ও সাদিয়া। এর আগে দুই বোন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছিলেন।
যমজ বোনদের বাবা আল আমিন আজ সোমবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ওরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হয়ে ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হবে। তাঁর দুই মেয়ে টাঙ্গাইলের কুমুদিনী সরকারি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে জিপিএ–৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। এর আগে এসএসসি ও জেএসসিতে তাঁরা জিপিএ–৫ পেয়েছিলেন।
সামিয়া জাহান ও সাদিয়া জাহান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা একসঙ্গে মায়ের পেটে ছিলেন। একসঙ্গে বড় হয়েছেন। এক বিছানায় ঘুমিয়েছেন। একই টেবিলে, একই বিদ্যালয়ে ও একই কলেজে পাশাপাশি বসে পড়াশোনা করেছেন। এখন স্বপ্নপূরণে ও ভবিষ্যৎ জীবন গড়তে দুজনকে দেশের দুই প্রান্তে চলে যেতে হবে। একজন আরেকজনকে ছেড়ে থাকবেন, ভাবতেই তাঁদের কষ্ট হচ্ছে।
বাবা আল আমিন মিয়া উপজেলার বড়চওনা-কুতুবপুর কলেজের ইসলাম শিক্ষা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং জামায়াতে ইসলামীর সখীপুর উপজেলা শাখার আমির। মা আফিয়া আক্তার স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
সখীপুর পাইলট উচ্চবালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল কাইউম বলেন, ‘ওরা আমাদের বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে জিপিএ–৫ পেয়েছিল। ওরা আমাদের বিদ্যালয়ের গর্ব। এবার ওই দুই বোন ডেন্টাল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে শুনে খুব খুশি হয়েছি।’