পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, “পরিবেশ ও প্রকৃতি রক্ষায় তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। উন্নয়নের ধরন বদলাতে হবে। ভুল কাজের কারণে খাবার ও পানীয় নিরাপদ নেই। প্রকৃতিকে উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে আনতে হবে। বায়ু, মাটি ও পানি রক্ষা করা জরুরি।”

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাজধানীর নটরডেম কলেজে ১৫তম জাতীয় প্রকৃতি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, “পরিবেশ রক্ষা শুধু সরকারের দায়িত্ব নয়, নাগরিকদেরও দায়িত্ব। বৃক্ষরোপণ, জলাশয় রক্ষা এবং প্লাস্টিকদূষণ কমানোর মতো ছোট ছোট উদ্যোগ প্রকৃতিকে বাঁচাতে বড় ভূমিকা রাখে।” 

তরুণদের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও পরিবেশ সুরক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

উপদেষ্টা বলেন, “পরিবেশ সংরক্ষণ মানবাধিকারের অংশ। এটি মানুষের পাশাপাশি প্রাণীদেরও অধিকার। আমাদের প্রকৃতিকেন্দ্রিক হতে হবে। যা সৃষ্টি করা যায় না, তা ধ্বংস করাও উচিত নয়।” 

তিনি প্রয়োজন ছাড়াই হর্ন বাজানো বন্ধ করা, প্লাস্টিক বোতল ব্যবহার না করা এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনার পরামর্শ দেন।

নটরডেম কলেজের অধ্যক্ষ ড.

ফাদার হেমন্ত পিউস রোজারিওর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন— প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুকিত মজুমদার বাবু, নটরডেম নেচার স্টাডি ক্লাবের মডারেটর বিপ্লব কুমার দেব এবং প্রতিষ্ঠাতা মডারেটর মিজানুর রহমান ভূঁইয়া।

জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ সংরক্ষণে অবদানের জন্য মুকিত মজুমদার বাবু, মিজানুর রহমান ভূঁইয়া এবং ড. ফাদার হেমন্ত পিউস রোজারিও আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হন। 

পরিবেশ উপদেষ্টা বেলুন উড়িয়ে ১৫তম জাতীয় প্রকৃতি সম্মেলন উদ্বোধন করেন। সম্মেলনে অংশ নেয় অর্ধশতাধিক প্রতিষ্ঠানের ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী। চিত্রাঙ্কন, গ্রিন ইভেন্ট, গ্রিন ডিবেট ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির প্রদর্শনীতে উৎসবমুখর ছিল নটরডেম কলেজ ক্যাম্পাস।

ঢাকা/এএএম/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়েবমেট্রিক্স র‍্যাঙ্কিংয়ে দেশসেরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষা ও গবেষণাবিষয়ক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ওয়েবমেট্রিক্সের র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)। গত ২৭ জানুয়ারি প্রকাশিত এ র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে (ঢাবি) পেছনে ফেলেছে রাবি।

প্রতিবছরের মতো এবারও দুই শতাধিক দেশের ৩১ হাজারের বেশি উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাঙ্কিং, ২০২৫ (জানুয়ারি) প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ওয়েবমেট্রিক্স।

এই র‍্যাঙ্কিং প্রণয়নে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষণ পদ্ধতি, বৈজ্ঞানিক গবেষণার প্রভাব, নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ, অর্থনৈতিক প্রাসঙ্গিকতাসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশগত ভূমিকা বিবেচনা করে স্পেনের মাদ্রিদভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়েবমেট্রিক্স। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাতিষ্ঠানিক ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট ছাড়াও তাদের গবেষক ও প্রবন্ধ বিবেচনায় নিয়ে এ তালিকা তৈরি করা হয়।

ওয়েবমেট্রিক্সের প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ১ হাজার ৪২২তম। ২০২৪ সালের প্রথম সংস্করণে (জানুয়ারি) রাবির দেশীয় অবস্থান ছিল তৃতীয় এবং দ্বিতীয় সংস্করণে (জুলাই) এক ধাপ এগিয়ে অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। এ বছর আরো এক ধাপ এগিয়ে শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। এদিকে, শীর্ষ অবস্থান থেকে অষ্টমে নেমেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যার বৈশ্বিক অবস্থান ১ হাজার ৯৯৫তম।

বাংলাদেশের শীর্ষ বিদ্যালয়ের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে বুয়েট (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৪৭৪), তৃতীয় অবস্থানে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৭৭০), চতুর্থ অবস্থানে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৭৮৩), পঞ্চম অবস্থানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৮১৮), ষষ্ঠ স্থানে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৯৪২), সপ্তম স্থানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৯৭০) এবং অষ্টম স্থানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ১৯৯৫)। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ২২৮৭) নবম স্থানে এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (বৈশ্বিক র‌্যাঙ্কিং ২৩৬৭) দশম স্থানে আছে এ র‌্যাঙ্কিংয়ে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেছেন, “এ অর্জন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। আমরা আমাদের গবেষকদের অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছি এবং তারাও সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে গবেষণাকর্ম করছেন। এজন্যই আমাদের সফলতা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা আমাদের গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির চেষ্টা করছি এবং সবাইকে গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি। আশা করি, আমরা সামনের দিকে আরো ভালো করব।”

রাবির উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেছেন, “আমি অত্যন্ত আনন্দিত এবং আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞ। তবে, আমরা যেন এ সাফল্যে আত্মতুষ্টিতে ভুগে স্থবির না হয়ে যাই। আমাদের সামনে আরো ভালো করার সুযোগ রয়েছে এবং আমরা সে লক্ষ্যেই এগিয়ে যাব।”

তিনি আরো বলেন, “আমি সব সময় বলে আসছি, আমাদের গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানো জরুরি। ন্যূনতম বরাদ্দ অন্তত দ্বিগুণ করা উচিত, যাতে আমরা উন্নত গবেষণা করতে পারি এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরো ভালো অবস্থান অর্জন করতে সক্ষম হই।”

ঢাকা/ফাহিম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ