বাঘাইছড়ি বিএনপির সভাপতিসহ ৯ নেতাকর্মীর পদ স্থগিত
Published: 17th, January 2025 GMT
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা বিএনপির সভাপতিসহ, ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ৯ নেতাকর্মীর পদ স্থগিত করা হয়েছে।
রাঙামাটি জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু নাছির ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ স্বাক্ষরিক পৃথক পত্রে এ তথ্য জানানো হয়।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ মামুন।
আরো পড়ুন:
সর্বদলীয় বৈঠকে বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের প্রতিনিধি
সিরাজগঞ্জে বিএনপির নেতাকর্মীদের পৌষ উৎসব উদযাপন
পদ স্থগিত নেতারা হলেন- বাঘাইছড়ি উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো.
আট নেতাকে দেওয়া পদ স্থগিতের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘গত ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি, ২৫ ইং চট্টগ্রাম হতে প্রকাশিত ‘দৈনিক সাঙ্গু’ পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ, স্থানীয় বাঘাইছড়ি উপজেলা ও পৌর বিএনপি নেতৃবৃন্দের লিখিত অভিযোগ, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয় যে, আপনারা দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও দলের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করাসহ দলের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন। এরূপ অপকর্ম হতে বিরত থাকার জন্য কেন্দ্রীয় ও রাঙামাটি জেলা বিএনপির পক্ষ হতে দলের সব নেতাকর্মীকে বহুবার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। আপনারা দলের দায়িত্বশীল পদে বহাল থেকে দলের সব নির্দেশনা অমান্য করে এসব গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে দলীয় সুনাম ও দলীয় শৃঙ্খলা নষ্ট করেছেন।
আপনারা দলের সব নির্দেশনা অমান্য করে দলীয় গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে দলীয় সুনাম ও দলীয় শৃংখলা নষ্ট করায় আপনার সব পর্যায়ের দলীয় সব পদ-পদবী ও পদের কার্যক্রম দলের গঠনতন্ত্রের ৫(গ) ধারা মোতাবেক অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হইল। উক্ত সময়ে আপনি কোনো প্রকার দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ ও দলীয় পদ-পদবী ব্যবহার করিতে পারিবেন না।”
বাঘাইছড়ি উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. ওমর আলীকে দেওয়া পদ স্থগিতের চিঠিতে বলা হয়, “গত ১৩ ও ১৪ জানুয়ারি, ২৫ ইং চট্টগ্রাম হতে প্রকাশিত ‘দৈনিক সাঙ্গু’ পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ, স্থানীয় বাঘাইছড়ি উপজেলা ও পৌর বিএনপি নেতৃবৃন্দের লিখিত অভিযোগ, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে প্রাথমিকভাবে প্রতিয়মান হয় যে, আপনি দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি ও দলের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করাসহ দলের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন। এরূপ অপকর্ম হতে বিরত থাকার জন্য কেন্দ্রীয় ও রাঙামাটি জেলা বিএনপির পক্ষ হতে দলের সব নেতাকর্মীকে বহুবার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। আপনারা দলের দায়িত্বশীল পদে বহাল থেকে দলের সব নির্দেশনা অমান্য করে এসব গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে দলীয় সুনাম ও দলীয় শৃঙ্খলা নষ্ট করেছেন।
আপনি দলের সব নির্দেশনা অমান্য করে দলীয় গঠনতন্ত্র ও শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে দলীয় সুনাম ও দলীয় শৃংখলা নষ্ট করায় আপনার সব পর্যায়ের দলীয় সব পদ-পদবী ও পদের কার্যক্রম দলের গঠনতন্ত্রের ৫(গ) ধারা মোতাবেক অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা রক্ষার প্রয়োজনে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হইল। উক্ত সময়ে আপনি কোনো প্রকার দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ ও দলীয় পদ-পদবী ব্যবহার করিতে পারিবেন না।”
জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, দলের জন্য বিব্রতকর ও মানহানীকর এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে উল্লেখিত অভিযোগ সমূহ সরেজমিনে তদন্ত ও স্বচ্ছতার সঙ্গে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাঙামাটি জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আবু নাছিরকে আহ্বায়ক করে কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে- জেলা বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক আলী বাবর, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শাকিল, এসএম শফিউল আজম, আব্দুল কুদ্দুছকে। এই কমিটিকে আগামী ৩০ জানুয়ারির মধ্যে জেলা বিএনপির কাছে তাদের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/বিজয়/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ দল য় স ন ম ও দল য় শ ছ ত রদল র ব এনপ র স ন ত কর ম র দল য় ক দল র র জন য উপজ ল আপন র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে আওয়ামী দোসরা বিএনপির ব্যানারে, নানা অপকর্ম : ক্ষোভ
সিদ্ধিরগঞ্জে ৫ আগস্টের পর একটি অপরাধী বাহিনী সংগঠিত হয়েছে। এই বাহিনীর সদস্যরা পতিত আওয়ামী দোসর হিসেবে চিহ্নিত ছিলো। ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর নিজেদের বিএনপির লোক পরিচয় দিয়ে গত ৫ মাস ধরে নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে তারা। এতে বিএনপির ভাবমূর্তি বিনস্ট হচ্ছে।
তাদের বিচরণ আদমজী ইপিজেড, কদমতলী, সিদ্ধিরগঞ্জ পুল, মিজমিজি ক্যানেলপাড়, চিটাগাংরোড ও হিরাঝিল এলাকায়। এই বাহিনীর সদস্যরা হলো-সিদ্ধিরগঞ্জের ২নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহসভাপতি সোহাগ, আওয়ামী লীগ কর্মী শেফা, যুবলীগ কর্মী বাদল, ফিরোজ, নিশান, আকতার, রিতু, লিটন, আলম, সুমন এবং জাতীয় পার্টির বর।
এই বাহিনীর নেতৃত্বে রয়েছে আদমজীর লোহা চোর আকরাম। নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন ও বিএনপির ভাবমূর্তি নস্ট করার জন্য লোহা চোর আকরাম এই বাহিনী গড়ে তুলেছে।
তবে স্থানীয় বিএনপি বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, আকরাম হোসেন ওরফে লোহা চোর আকরামের নানা অপকর্মের ইঙ্গিত পেয়ে সম্প্রতি গিয়াস উদ্দিন তাকে নিজের কাছ থেকে দুরে সরিয়ে দিয়েছেন।
তাছাড়া ৫ আগস্টের পর একটি গোয়েন্দা সংস্থার গোপন তদন্তে আদমজী ইপিজেডে ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টাকারী হিসেবে লোহা চোর আকরামের নাম উঠে আসে।
তারা আরও জানান, গিয়াস উদ্দিন লোহা চোর আকরামকে সরিয়ে দেয়ায় এবং বিএনপির কোন নেতাকর্মী তার সাথে না থাকায় সে আওয়ামী দোসদের নিয়ে এই বাহিনী গড়ে তুলেছেন। এই বাহিনীর সদস্যরা আকরামের পুর্ব পরিচিত।
আকরাম নিজেকে বিএনপির নেতা পরিচয় দিলেও বিএনপিতে তার কখনো কোন পদপদবী ছিল না এবং বর্তমানেও নাই বলে জানিয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির একাধিক নেতা।
এদিকে স্থানীয়দের তথ্যমতে, সোহাগ হচ্ছে লোহাচোর আকরামের শ্যালক। সে সিদ্ধিরগঞ্জের দুই নং ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবকলীগের সহসভাপতি।
আওয়ামীলীগ আমলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন মিয়ার সাথে সখ্যতা থাকায় সানারপাড় ও মৌচাক বাসস্ট্যান্ডে ব্যাপক চাঁদাবাজি করে। এবং সবশেষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হাজী ইয়াছিন মিয়ার সাথে সকল আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নিয়েছে।
সেই সকল ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ঘাটলেই পাওয়া যাচ্ছে। ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগের পতনের পর কিছুদিন গা-ঢাকা দিয়ে ছিল। পরে আকরামের শেল্টারের প্রকাশ্যে আসে।
১৯ ডিসেম্বর ইপিজেডের সামনে মিনিবাসস্ট্যান্ডে কথিত মানবাধিকার সংগঠনের শীত বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানের মঞ্চে আকরামের সাথে সোহাগকে দেখা যায়। বতর্মানে লোহা চোর আকরামের পক্ষে আদমজী ইপিজেডে ফ্যাক্টরীর কর্মকর্তাদের হুমকি-ধামকি দিয়ে ব্যবসা দেখা শোনা করে।
শেফা সুমিলপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। পুতা ফিরোজ ছিল নারায়ণগঞ্জ জেলা বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি সিরাজ মন্ডলের সাথে। নিশান সিরাজমন্ডলের সহযোগি সম্রাটের সাথে থেকে ইপিজেডে ব্যবসা করেছে। মাদক সেবন ও বিক্রির সাথেও সে জড়িত।
আওয়ামী লীগ কর্মী হিসেবে বাদল দীর্ঘদিন আদমজী ইপিজেডে ব্যবসা করেছে। ৫ আগস্টের পর আকরাম তাকে দলে টানে। এখন সে আকরামের অফিসিয়াল কাজকর্ম দেখা শোনা করে। লিটন আকরামের সাথে গাড়িতে থাকে। থানায় আকরামের সোর্স হিসেবে কাজ করে। থানার গোপন খবরা খবর ও তথ্য আকরামের কাছে পাচার করে।
রিতু আকরামের অগ্নিপতি। সে বীরমুক্তি যোদ্ধা নান্নুর ছেলে যুবলীগকর্মী আল আমিনের সাথে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে আদমজী ইপিজেডে ব্যবসা করেছে। যুবলীগের পরিচয়ে রিতু ইইপজেডে ব্যবসা করলেও এখন আকরামের অর্থনৈতিক বিষয় দেখা শোনা করে।
সুমন আকরামের কথিত ভাতিজা পরিচয়ে ইপিজেডে হুমকি-ধামকি দিয়ে ব্যবসা দখল করার মিশনে থাকে সব সময়। আকতার যুবলীগের খোকনের কর্মী ছিল। এখন আকরামের জুয়ার বোর্ড পরিচালনা করে।
আলম ইপিজেডে সারাদিন ঘুরাঘুরি করে ব্যবসা খোঁজ রাখে। এবং আকরামকে সেই তথ্য দেয়। জাতীয় পাটির রব কদমতলী দশ তলার সামনে জায়গা দখল করে অবৈধভাবে গড়ে তোলা আকরামের কাঁচাবাজর থেকে টাকা তুলতো। কিন্তু সোমবার সেই বাজার উচ্ছেন করে দেয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী আরও জানায়, হীরাঝিল এলাকার লোহা চোর আকরামের অফিসে বসেই সকল অপকর্মের শলাপরামর্শ হয়। এবং আদমজী ইপিজেডের পাশে মিনিবাস স্ট্যান্ডে কথিত মানবাধিকার অফিসে বসে আড্ডাবাজি ও ইপিজেডে আসা যাওয়ার পথে নারী শ্রমিকদের ইভটিজিং করা হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই অফিসে আকরাম বাহিনীর সদস্যরা আড্ডাবাজি করে।
আকরাম তার এই বাহিনীকে দিয়ে কদমতলী দশতলার সামনে ৯৫ শতাংশ জায়গা দকল করে রাতের অন্ধকারে কাচাবাজার গড়ে তোলে। এক পর্যায়ে জমির মালিক এক ঘন্টার নোটিশে সেই বাজার উচ্ছেদ করে দেয়। কিন্তু আকরাম ঘটনাস্থলে যায়নি ক্ষুদ্র ব্যবসায়িদের রোষানলের ভয়ে।
ওই ব্যবসায়িরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে উচ্ছেদের সময় অভিযোগ করেন। মোটকথা আকরাম বাহিনীর নানা অপকর্মের কারণে সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপির ভাবমূর্তি নস্ট হচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা।