স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য সংস্কার প্রয়োজন: সারজিস
Published: 17th, January 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক ও জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেছেন, “স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রয়োজন। সংস্কারগুলো হওয়ার পর যদি আমরা নির্বাচনের দিকে যাই, তাহলে যে নির্বাচন প্রত্যাশা করছি, তা পূরণ হবে।”
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে পঞ্চগড়ে মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ মাঠে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
সারজিস আলম বলেন, “যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন হলে দ্বিমত করব না। কিন্তু, আগামী ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দেওয়া অবাস্তব এবং অসম্ভব। এত বড় একটি অভ্যুত্থান, এত রক্ত-জীবন গেলো; সকল কিছুর বিনিময়ে যে চাওয়া, এ চাওয়াটা কেবল একটি নির্বাচনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না। আমরা অবশ্যই মনে করি, দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন হলে জনগণের প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা যাবে, কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু, ছয় মাসের মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা, বিচার ব্যবস্থা সংস্কার অসম্ভব।”
তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের জায়গা থেকে বলেছিল, ২০২৬ সালের মাঝামাঝির আগেই নির্বাচন দেবে। অর্থাৎ, অভ্যুত্থানের দুই বছরও হচ্ছে না। তারা যদি মনে করেন, আরো ২-৪ মাস আগেই নির্বাচন দেবেন, তাও যৌক্তিক হতে পারে। আমরা এমনটাও শুনেছিলাম, ২৫ সালের ডিসেম্বরে অথবা ২৬ সালের জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন সম্ভব।”
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা সারজিস আলম বলেন, “অন্যায়-অনিয়ম ঠেকাতে প্রত্যেক জেলা ও উপজেলার মানুষকে নিয়ে গ্রুপ তৈরি করা হবে। বিগত ১৬ বছরে রংপুর বিভাগসহ পঞ্চগড় অনেক বৈষম্যের শিকার হয়েছে। কয়েকটি রাস্তা ছাড়া কিছুই হয়নি। একটা শিল্পকারখানা হয়নি। আমাদের বেশি কিছু দরকার নেই। যেটুকু পঞ্চগড়ের মানুষের পাওনা বা হক, সেটা কীভাবে আদায় করা যায়, আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করব।”
অনুষ্ঠানে জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আদম সুফী, আদালতের গভর্নমেন্ট প্লিডার (জিপি) আব্দুল বারী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড়ের সমন্বয়ক মোকাদ্দেসুর রহমান সান, গরিনাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন দিপু উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নাঈম/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন: সভাপতি ছাড়া সব পদেই আ.লীগের জয়জয়কার
মাদারীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে আওয়ামীপন্থিরা ১৪টিতে জয় পেয়েছেন। সভাপতি পদ ছাড়া অন্য সব পদে তারা জয়ী হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে আইনজীবী সমিতি কার্যালয়ে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
সভাপতি পদে জয়ী হয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর অনুসারী এমদাদুল হক খান। তিনি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাফর আলী মিয়াকে ৭৭ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন।
এদিকে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমকে ১৫৬ ভোটে পরাজিত করে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছেন সদর উপজেলা কৃষক লীগের আহ্বায়ক মাহাবুব হোসেন (শাকিল)। সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে আনোয়ার হোসেন পেয়েছেন ১৩০ ভোট ও জালালুর রহমান পেয়েছেন ১৩০ ভোট। তাদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সেলিম মিয়া পেয়েছেন ২৯ ভোট (নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিদ্বন্দ্বী দুজন প্রার্থীর ভোট সমান হওয়ায় পুনরায় গণনা অথবা লটারি করে বিজয়ী প্রার্থী নির্বাচন করা হবে)। সহ-সভাপতি পদে মাহবুব হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-১ পদে শাকিলা পারভীন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক-২ পদে মশিউর রহমান পারভেজ, কোষাধ্যক্ষ পদে সুজন ভৌমিক, সম্পাদক (লাইব্রেরি) পদে মুনীর হাসান, সম্পাদক (মহরার) পদে এ কে এম আজিজুল হক মুকুল নির্বাচিত হয়েছেন।
কার্যনির্বাহী ৫টি পদে ৮ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বিজয়ী ৫ জন হলেন সৈয়দা তাহমিনা খানম, এনামুল হক, আবদুস সালাম, ইকবাল হোসেন ও আবু সুফিয়ান। এ ছাড়া সম্পাদক (অ্যাপায়ন ও বিনোদন) পদে বদরুন নাহার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
মাদারীপুর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক গোলাম মাওলা আকন্দ মুঠোফোনে জানিয়েছেন, মাদারীপুর আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে সভাপতি ছাড়া ১৪টি পদেই আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী কিংবা সমর্থক বিজয়ী হয়েছেন। তবে এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে সরাসরি আওয়ামী লীগের পদে থাকা কোনো নেতা অংশগ্রহণ করেননি। আওয়ামী লীগের কোনো আইনজীবী নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তিনিও অন্য সবার মতন বিজয়ী হতেন বলে আমি মনে করি। যারা নির্বাচিত হয়েছেন সবাইকে অভিনন্দন।
তবে এমদাদুল হক খান সভাপতি পদে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীদের সমর্থন নিয়েই বিজয়ী হয়েছেন বলে দাবি করেছেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ। তিনি বলেন, সভাপতি পদে আওয়ামী লীগের কেউ প্রার্থী না হওয়ায় তাদের সমর্থক আইনজীবীরা নির্বাচনে মূলত এমদাদুল হক খানকেই ভোট দিয়েছেন। সেকারণেই জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাফর আলী মিয়া পরাজিত হয়েছেন।
মাদারীপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মোখলেছুর রহমান বলেন, এমদাদুল হক খানকে নির্বাচিত করায় সব আইনজীবীদের ধন্যবাদ। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তার বিজয়ে আমরা আনন্দিত।
মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য মাদারীপুর আইনজীবী সমিতি নির্বাচনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। তবে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট ফরহাদ হোসেন জানান, সুন্দরভাবে ভোটগ্রহণ ও ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। দুজন সমান ভোট পাওয়ায় তাদের ছয়মাস করে দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।