পাবনায় স্মৃতি সংগ্রহশালা না হওয়ায় ক্ষোভ
Published: 17th, January 2025 GMT
শ্রদ্ধা নিবেদন ও আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে পাবনায় বাংলা সিনেমার কিংবদন্তী নায়িকা সুচিত্রা সেনের ১১তম প্রয়াণ দিবস পালিত হয়েছে। শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) সকালে পাবনা শহরের গোপালপুর হেমাসাগর লেনের পৈত্রিক ভিটায় সুচিত্রা সেনের ভাস্কর্যে জেলা প্রশাসকের পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জাহাঙ্গীর আলম।
পরে সুচিত্র সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের পক্ষে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন পরিষদের সদস্যরা। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা।
সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড.
সভায় সুচিত্রা সেনের পৈত্রিক বাড়ি উদ্ধারের দীর্ঘদিন পার হলেও বাড়িটিতে স্মৃতি সংগ্রহশালা গড়ে না ওঠায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তারা বলেন, বাড়িটিতে এখনো সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংগ্রহশালা করার কোনো কাজ হয়নি। দিনে দিনে বিষয়টি স্তিমিত হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান বক্তারা।
প্রসঙ্গত, একজন সাধারণ বাঙালি নারী থেকে নায়িকা হয়ে ওঠা, তারপর মহানায়িকা হয়ে অনেকটা নীরবে চলে যাওয়া। যার ভুবন ভোলানো হাসিতে আজও বুদ হয়ে আছেন চলচ্চিত্রপ্রেমীরা। তার নাম সুচিত্রা সেন। আজ ১৭ জানুয়ারি, বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি মহানায়িকা পাবনার মেয়ে সুচিত্রা সেনের প্রয়াণ দিবস।
২০১৪ সালের এইদিনে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন তিনি। তার মৃত্যুর পর পাবনায় সুচিত্রা সেনের স্মৃতি বিজড়িত পৈত্রিক ভিটা দখলমুক্ত হলেও অনেকটা অবহেলা আর অযত্নে পড়ে আছে। জেলা প্রশাসনের দখলে থাকা বাড়িটি যেন প্রাণহীন। বাড়ির বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে ফাটল। বাড়ি উদ্ধারের প্রায় ১১ বছর পার হলেও বাড়িতে ‘সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংগ্রহশালা’ গড়ে তোলার দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই। এ নিয়ে আক্ষেপের শেষ নেই পাবনাবাসীর।
সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ডা. রামদুলাল ভৌমিক বলেন, “সুচিত্রা সেনের পৈত্রিক বাড়িটিতে ‘সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংগ্রহশালা’ করার জন্য আমাদের পরিষদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীতে প্রস্তাবনা দেওয়া আছে। কিন্তু সেটি আজও সেই প্রস্তাবনা হিসেবে তাদের কাছে পড়ে আছে।”
তিনি আরো বলেন, “সুচিত্রা সেনের বাড়িতে স্মৃতি সংগ্রহশালা করার প্রকল্পটি দেশের আরো অনেকগুলো প্রকল্পের সাথে অন্তর্ভুক্ত। সেখান থেকে সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংগ্রহশালা প্রকল্পটি আলাদা করে আলাদা প্যাকেজে বাড়িটি সংস্কার করা দাবি জানাচ্ছি।”
জানা জায়, ১৯৩১ সালের ৬ এপ্রিল পাবনায় জন্ম সুচিত্রা সেনের। ৯ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন পঞ্চম। মা-বাবা নাম রেখেছিলেন রমা। পরিচালক সুকুমার দাশগুপ্তের সহকারী নীতীশ রায় তা বদলে রাখেন সুচিত্রা। কিন্তু পাবনার মহাকালী পাঠশালার খাতায় তার নাম ছিল কৃষ্ণা দাশগুপ্ত। পাবনা শহরের গোপালপুর মহল্লার হেমাসাগর লেনের একতলা পাকা পৈতৃক বাড়িতে সুচিত্রা সেনের শৈশব ও কৈশোর কেটেছে।
তার বাবা করুণাময় দাশগুপ্ত পাবনা মিউনিসিপ্যালিটির স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদে চাকরি করতেন। মা ইন্দিরা দাশগুপ্ত ছিলেন গৃহিণী। দুই বোনের মধ্যে সুচিত্রা সেন ছিলেন বড়। মহাকালী পাঠশালায় পড়ালেখা শেষ করে সুচিত্রা সেন স্থানীয় পাবনা বালিকা বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেন। পড়ালেখায় খুব একটা মনোযোগ না থাকলেও গান, নাটক, অভিনয় প্রিয় ও পছন্দের ছিল সুচিত্রা সেনের।
১৯৪৭ সালে দেশভাগের কয়েকমাস আগে সুচিত্রার বাবা সপরিবারে ভারত চলে যান। কলকাতা যাবার বছর দুয়েক পরেই দিবানাথ সেনের সঙ্গে রমাদাশ গুপ্ত ওরফে সুচিত্রা সেনের বিয়ে হয়।
ঢাকা/শাহীন/ইমন
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সামারিক শক্তিতে মিয়ানমারের চেয়ে ২ ধাপ এগিয়ে বাংলাদেশ
চলতি বছর সামরিক শক্তির দিক থেকে মিয়ানমারের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। চলতি সপ্তাহে সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষক প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার প্রকাশিত সূচকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এই র্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের সামরিক বাজেট। সেনাবাহিনীর আকার, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর শক্তিকেও বিবেচনা করা হয়েছে সমীক্ষায়।
গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের সূচক অনুযায়ী, বিশ্বে সামরিক শক্তির ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, এরপরে পরে রয়েছে রাশিয়া, চীন, ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়া। পরমাণু শক্তিধর হলেও পাকিস্তানের অবস্থান ১২ নম্বরে। তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে ৩৫তম অবস্থানে। বাংলাদেশের আগে রয়েছে উত্তর কোরিয়া ও আর্জেন্টিনা। আর বাংলাদেশের প্রতিবেশী মিয়ানমার রয়েছে ৩৭তম অবস্থানে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটির বেশি। এর মধ্যে প্রায় ৬ কোটি ৬১ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীতে মোট সেনা সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৭ হাজার ৪০০ সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ২৫ হাজার ১০০ সেনা।
অন্যদিকে, মিয়ানমারের মোট জনসংখ্যা ৫ কোটি ৭৫ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ মানুষ সামরিক বাহিনীতে যুক্ত হওয়ার যোগ্য। মিয়ানমারের সক্রিয় সৈন্য সংখ্যা ১ লাখ ৫০ হাজার। মিয়ানমারের রিজার্ভ সৈন্য রয়েছে ২০ হাজার। দেশটির বিমানবাহিনীতে রয়েছে ১৫ হাজার সদস্য এবং নৌবাহিনীতে রয়েছে ১৬ হাজার সেনা।
ঢাকা/শাহেদ