হবিগঞ্জে বুকে বাঁশ বিদ্ধ হয়ে বৃদ্ধের মৃত্যু
Published: 17th, January 2025 GMT
হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলায় পথচারীর কাঁধে থাকা বাঁশ বুকে বিদ্ধ হয়ে আব্দুল মন্নাফ (৮০) নামে সিএনজিচালিত অটোরিকশার এক যাত্রী মারা গেছেন।
নিহত আব্দুল মন্নাফ জেলার মাধবপুর উপজেলার হরিণকোলা গ্রামের ইন্তাজ আলীর ছেলে।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে এসব তথ্য দেন মাধবপুর কাশিমনগর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই সোহেল রানা। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার হরিণখোলা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, আব্দুল মন্নাফ সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকের পাশে বসে হরিণখোলা থেকে চৌমুহনী বাজারে যাচ্ছিলেন। দুটি বাঁশ কাঁধে নিয়ে একই দিকে যাচ্ছিলেন অপর আরেক পথচারী। সিএনজিচালক আকস্মিক হর্ন দিলে পথচারী একটি বাঁশ নিচে ফেলে দেন এবং অটোরিকশার চালকের পাশে বসে থাকা যাত্রী মন্নাফের বুকে বাঁশটি ঢুকে পিঠ দিয়ে বের হয় যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
খবর পেয়ে কাশিমনগর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে গিয়ে আব্দুল মন্নাফের মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন। পরে মরদেহ হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
কাশিমনগর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই সোহেল রানা জানান, মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা/মামুন/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
৬ পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন
২০১৫ সালে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন পাটোয়ারী (২৫) নামে এক ছাত্রশিবির নেতাকে বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে গুলি করে হত্যার ঘটনায় আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার কুমিল্লার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মামলার আবেদন করেন নিহত শাহাব উদ্দিনের বাবা। ঘটনার সময় শাহাব উদ্দিন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের হিসাববিজ্ঞান চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
শাহাব চৌদ্দগ্রাম উপজেলার পশ্চিম চান্দিশকরা গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন পাটোয়ারী ছেলে।
মামলায় চৌদ্দগ্রাম থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম কুমার চক্রবর্তী, পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুল্লাহ আল মাহফুজ, এসআই নুরুজ্জামান হাওলাদার ও এসআই ইব্রাহিমসহ ১২ জন পুলিশ কর্মকর্তা, কনস্টেবল, গাড়িচালক ও আনসার সদস্যকে বিবাদী করা হয়েছে। আদালত মামলার তদন্তের আদেশের জন্য আগামীকাল বুধবার দিন ধার্য করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী মো. শাহ জাহান।
মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, শাহাব উদ্দিন শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় প্রশাসনের সহায়তায় তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। ২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বিকেলে চৌদ্দগ্রাম থানা-পুলিশ শাহাব উদ্দিনকে পৌর এলাকার পশ্চিম চান্দিশকরা বাড়ি থেকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে মাথায় গুলি চালিয়ে হত্যা করে। রাতে পরিবারের লোকজন থানায় গিয়ে তার সন্ধান পায়নি। পর দিন সকালে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মরদেহ শনাক্ত করে পরিবার।
মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়েছে, চৌদ্দগ্রামের তৎকালীন এমপি মুজিবুল হক, পৌর মেয়র মিজানুর রহমান, র্যাবের তৎকালীন মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ ও তৎকালীন পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তীর হুকুমে অন্যান্য আসামিরা প্রত্যক্ষ সহায়তায় পুলিশ শাহাব উদ্দিনকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে।
মামলার বাদী জয়নাল আবেদীন পাটোয়ারী বলেন, ‘এতো দিন ভয় ও ন্যায় বিচার না পাওয়ার আশঙ্কায় মামলা করিনি। এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের কাছে ন্যায় বিচার পাব। সেই ভরসা থেকে মামলা করেছি। আমার ছেলে কোনো অপরাধ করে থাকলে তাকে কারাগারে রেখে বিচার করা যেত। তাকে মাথায় গুলি করে হত্যার পর চৌদ্দগ্রামের শামুকসার নাভানা প্রকল্পের সামনে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছে বলে পুলিশ টিভি ও পত্রিকায় প্রচার করে। এছাড়াও ঘটনা ভিন্ন দিকে নিতে আমার ছেলের বিরুদ্ধে উল্টো অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দেয় পুলিশ।’
বাদীর আইনজীবী মো. শাহ জাহান সমকালকে বলেন, ‘এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ছাত্রশিবির করার অপরাধে ঠাণ্ডা মাথায় তাকে হত্যা করা হয়। কিন্তু একজন নিরপরাধ ছেলেকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গুলি করে হত্যার নির্দেশ ওই দিন কারা দিয়েছিল অভিযোগের তদন্ত হলে আরও অনেক পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ দলীয় রাজনৈতিক নেতার নাম বের হবে। আশা করি বুধবার আদালত মামলার এফআইআর ও তদন্তের নির্দেশনা দেবেন।’