যুদ্ধবিরতি চুক্তি সঠিক পথে আছে এবং তা শিগগিরই কার্যকর হবে বলে মন্তব্য করেছেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কারবি। গতকাল বৃহস্পতিবার সিএনএনকে তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি লাইনচ্যুত হতে চলেছে, এ মুহূর্তে এমনটা বলার মতো আমরা এমন কিছু দেখতে পাচ্ছি না।

গতকাল ইসরায়েলি মন্ত্রিসভায় ভোটাভুটির কথা থাকলেও তা হয়নি। তবে আজ শুক্রবার বা আগামীকাল শনিবার ভোট হতে পারে বলে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে।

এদিকে যুদ্ধবিরতি যখন দরজায় কড়া নাড়ছে তখনও গাজা উপত্যকায় ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। গতকাল রাতে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ বলেছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিষয়ে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে সমঝোতা হওয়ার ঘোষণা আসার পরদিন ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৮৬ জন নিহত হয়েছেন।

যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে ইসরায়েলের মন্ত্রীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিভাজন রয়েছে। চুক্তিটি ঝুলে থাকার জন্য হামাসকে দায়ী করা হচ্ছে। এমন অবস্থায় গতকাল নির্ধারিত ভোটাভুটি হয়নি।

যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হওয়ার প্রথম ছয় সপ্তাহে গাজায় জিম্মি থাকা ইসরায়েলি নাগরিকদের মধ্য থেকে ৩৩ জনকে ছেড়ে দেওয়ার কথা। পরিবারের সদস্যরা জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন।

গতকাল গভীর রাতে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ৯৮ জন জিম্মির জন্য প্রতিটি রাতই আরেকটি ভয়াবহ দুঃস্বপ্নের রাত। তাদের ফিরিয়ে আনতে আর এক রাতের জন্যও দেরি করবেন না।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গতকাল বলেছেন, আলোচনার ক্ষেত্রে যেসব অমীমাংসিত বিষয় আছে, সেগুলোর সমাধান করা দরকার।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, হামাস যেসব কারাবন্দীর মুক্তি চাইছে, তাদের কারও কারও পরিচয় নিয়ে বিরোধ আছে। কর্মকর্তারা বলেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিনিধিরা দোহায় ছিলেন এবং মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীরা এটি সমাধানের জন্য কাজ করছেন।

হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইজ্জত আল রেশিক বলেছেন, তাঁরা যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আছেন।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। ইসরায়েলের হিসাব অনুসারে, এতে ১ হাজার ২০০ জন নিহত হয়েছেন। ২৫০ জনের বেশি মানুষকে জিম্মি করা হয়েছে। জবাবে সেদিন থেকে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এতে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার বেশির ভাগকেই বাস্তুচ্যুত হতে হয়েছে। গাজা কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুসারে, ইসরায়েলি হামলায় ৪৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র জন য গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেনে জেলেনস্কির বিকল্প নেতা খুঁজছে যুক্তরাষ্ট্র!

ইউক্রেনে শান্তিচুক্তির জন্য দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির পদত্যাগ করা লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎস। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেনের একজন নেতা প্রয়োজন, তিনি আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। তিনি শেষ পর্যন্ত রাশিয়ার সঙ্গে কাজ করতে পারবেন এবং এই যুদ্ধ থামাতে পারবেন।’ খবর- সিএনএন

গণমাধ্যমের সামনেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাগবিতণ্ডার পর এ কথা বললেন তিনি। বাগবিতণ্ডার এ ঘটনাটি নিয়ে নানা আলোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। ওই ঘটনার পর ইউক্রেনের খনিজ সম্পদ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে ঐতিহাসিক চুক্তি হওয়ার কথা ছিল, সেটিও বাতিল হয়ে যায়। আর এর পরই ইউক্রেনের ভবিষ্যৎ কোন পথে, তা নিয়ে শুরু হয় আলোচনা।

এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবারের ওই ঘটনায় সাবেক ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের গড়া ওয়াশিংটন-কিয়েভ সম্পর্ক ভেঙে পড়েছে। এই প্রকাশ্য দ্বন্দ্ব ন্যাটোর ইউরোপীয় সদস্যদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বড় সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। 

যদিও ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের বিষয়ে আবারও এক টেবিলে বসার ইঙ্গিত দিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। তিনি বলেছেন, ইউক্রেন ও রাশিয়া-দুই পক্ষই আলোচনায় না বসলে যুদ্ধ থামবে না। হোয়াইট হাউসে শুক্রবার ট্রাম্প-জেলেনস্কি বিতণ্ডার পর থেকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের আর কথা হয়নি। যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে হবে। তবে তাদের প্রতি বৈরী মনোভাব রাখলে, মস্কোকে আলোচনায় যুক্ত করা সম্ভব হবে না। কোনো চুক্তি করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই মনোভাবই দেখিয়ে আসছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সবকিছু আবার শুরু হতে পারে। আশা করি, তিনি (জেলেনস্কি) এটা বুঝতে পারবেন যে আমরা আসলে আরও হাজার হাজার মানুষের মৃত্যুর আগে, তাঁর দেশকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ