মুন্সীগঞ্জে এবার ব্যাপক পরিমাণে শীতকালীন সবজির চাষ হয়েছে। ফলন হয়েছে ভালো। বাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় এর দামও চড়া। ফলে এসব সবজি চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন কৃষক। এতে তাদের মুখে ফুটেছে স্বস্তির হাসি।
জানা গেছে, শীতকালীন সবজির মধ্যে এ অঞ্চলে লাউ, মিষ্টি কুমড়া, বাঁধাকপি, ফুলকপি, বেগুন, টমেটো, শিম, মুলা, করলা, লালশাক ও বেগুন বেশি চাষ হয়েছে। পাশাপাশি কিছু জমিতে ধনেপাতা, গাজরসহ অন্যান্য সবজি আবাদ হয়েছে। এসব সবজি বেশি উৎপাদন হচ্ছে মুন্সীগঞ্জ সদর, টঙ্গিবাড়ী ও সিরাজদীখান উপজেলায়।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার রামপাল, বজ্রযোগিনী, দক্ষিণ চরমসুরাসহ টঙ্গিবাড়ী উপজেলার ধামারণ ও সিরাজদীখান উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, এসব এলাকায় মিষ্টি কুমড়া, টমেটো, লালশাক, শিম, লাউ, মুলাসহ প্রায় ২০ ধরনের সবজির আবাদ হয়েছে। আবাদ ও পরিচর্যা ছাড়াও কোনো কোনো জমিতে সবজি তোলা শুরু করছেন কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, আলু আবাদের পাশাপাশি সবজি চাষের দিকে বেশি ঝুঁকেছেন কৃষক। এখন পর্যন্ত যারা শীতকালীন সবজি বিক্রি করতে পেরেছেন, তারা প্রত্যেকেই লাভবান হয়েছেন। আর উৎপাদিত সবজি মুন্সীগঞ্জ ছাড়াও ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের জেলার বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। তারা বলছেন, এবার সব ধরনের সবজিচাষি লাভবান হয়েছেন।
সদর উপজেলার রামসিং এলাকার শাহ আলম বলেন, ৩৫ শতক জমিতে দেশি জাতের শিমের চাষ করেছেন। খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। গত দেড় মাসে শিম বিক্রি করে ইতোমধ্যে ৬০ হাজার টাকা আয় করেছেন। এভাবে আরও তিন মাস সবজি বিক্রি করতে পারবেন।
মহাকালী ইউনিয়ন পরিষদের উত্তর মহাকালী গ্রামের সবজিচাষী রাসেল ফরাজী বলেন, এবার ২০০ শতাংশ জমিতে শীতকালীন সবজি চাষাবাদ করেছেন। এর মধ্যে আছে শিম, লাউ, ফুলকপি, জালি, মিষ্টি কুমড়া ও টমেটো।
অন্য সবজি চাষি সদরের রামপাল গ্রামের সালাম ফরাজী বলেন, এবার ২৮৮ শতাংশ জমিতে সাড়ে ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে মরিচ, বেগুন, শিম, ফুলকপি, লাউ, লালশাক ও টমেটো বুনেছেন।
একই উপজেলার দক্ষিণ চরমশুরা গ্রামের চাষি জুলহাস দেওয়ান জানান, এবার তিনি বাঁধাকপি ও ফুলকপির চাষ করেছেন। জমিতে ফলন ভালো হয়েছে। তাই লাভের আশা করছেন তিনি।
এ ছাড়া টঙ্গিবাড়ী উপজেলার ধীপুর এলাকার লাউ, শ্রীনগর উপজেলার আড়িয়ল বিলে মিষ্টি কুমড়া এবং সিরাজদীখান উপজেলায় করলার ফলনও বেড়েছে। একই সঙ্গে শীতকালীন এসব সবজি বিক্রি করে ভালো দাম পাচ্ছেন কৃষক।
মুন্সীগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, এ বছর জেলার ছয়টি উপজেলায় শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৪ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে। এ বছর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৯০০ টন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
রূপগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে এসএসসি পরীক্ষার্থী নিখোঁজ
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পরীক্ষা শেষে ফেরার পথে ট্রলার থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে বন্ধুদের সাথে গোসল করতে নেমে জয় আহমেদ (১৬) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে উপজেলার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের চনপাড়া পূর্ণবাসন এলাকায় ঘাটে দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঢাকা ফায়ার সার্ভিসের একটি ডুবুরি দল প্রায় ৬ ঘন্টা চেষ্টা করেও ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করতে পারেনি ।
নিখোজ, জয় আহমেদ চনপাড়া পূর্নবাসন কেন্দ্রের ৬ নং ওয়ার্ডের বাস চালক মারুফ মিয়ার ছেলে। সে এবছর পিআরডি হাইস্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী জানান, বুধবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে চনপাড়া পূর্নবাসন কেন্দ্রের পিআরডি হাইস্কুলের ৩৮ জন এসএসসি পরীক্ষার্থী সরকারী মুড়াপাড়া পাইলট স্কুল পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে শিক্ষকদের সাথে একটি ট্রলার যোগে বাড়ী ফিরছিল।
ট্রলারটি চনপাড়াপূর্নবাসন কেন্দ্র এলাকার কাছাকাছি আসলে শিক্ষকদের নিষেধ করা সত্ত্বেও এসএসসি পরীক্ষার্থী জয় আহমেদ, ইফাজ, আসিফ, পরশ, ইসমাইল, তানভীর, আব্দুর রহমান ও রাকিব গোসল করতে নদীতে ঝাপ দেয়। এদের মধ্যে জয় আহমেদ ছাড়া বাকি সবাই তীরে উঠতে সক্ষম হয়।
এর পর থেকে নিখোঁজ জয় আহমেদ। বহু খোজাখুজির পর জয়কে না পেয়ে ফায়ার সার্ভিসকে খবন দেন পুলিশ। ঢাকা সিদ্দিক বাজার ফায়ার সার্ভিসের ৫ সদস্যের একটি ডুবুরি দল দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়েও উদ্ধার করতে পারেনি নিখোজ জয়ের মরদেহ। সন্ধ্যার দিকে উদ্ধার অভিযান স্থগিত করেন ফায়ার সার্ভিস।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ফের উদ্ধারে নামে বলে জানায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি ইউনিটের অধিনায়ক হুমায়ুন কবির।