জীবনে সফল হওয়ার জন্যে পরিকল্পনা মাফিক ‘ডেইলি রুটিন’ অনুসরণ করার বিকল্প নেই। সঠিক পরিশ্রম ও পরিকল্পনা থাকলে একজন মানুষ পৌঁছাতে পারে সফলতার শীর্ষে। বিশ্বের সকল সফল ব্যক্তিরাই নিজেদের কাজের জন্যে একটি রুটিন মেনে চলেছেন। আসুন, জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে কাজের জন্যে একটি ভালো রুটিন তৈরি করা যায়।

সকালের জন্যে কার্যকর একটি রুটিন তৈরি করুন: সকলেই জানেন যে সকালের জন্যে একটি ভালো রুটিন জীবনের জন্যে কতটা কার্যকর। সকালে যে কাজ আপনার মন করতে চায় এবং সাচ্ছন্দ্যবোধ করেন সেই কাজ করা প্রয়োজন। চাইলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজটিও সকালে করতে পারেন। এতে করে নিজে যেমন কনফিডেন্স পাবেন, তেমনি সকালটিও ভালো যাবে।

কাজের জন্যে একটি নির্দিষ্ট সময় ও স্থান রাখুন: যেকোন কাজের জন্যে সময় ঠিক করে নেওয়া জরুরি। সময়মত কাজ করলে কাজ বেশি আগানো যায়। সপ্তাহ পর হিসাব মিলিয়ে দেখা যায় কতটা কাজ বাকি আছে। রুটিন অনুযায়ী কাজ না রাখলে দেখা যাবে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা হয়নি, বা কম হয়েছে। কাজের জন্যে আলাদা একটি ঘর রাখাও জরুরি বা ডেস্ক। যেখানে শুধুই কাজ করা হবে। কাজ ছাড়া সেখানে না থাকাই ভালো। অনেকেই পরিবারের সাথে  থেকে কাজ করতে পারেন না ঠিকঠাক, হয়তো পরিবারের কেউ তাকে কাজে ডাকে বা কোন ঝামেলায় জড়িয়ে যায়। তাই কাজের জন্যে নির্দিষ্ট সময় ও স্থান রাখা প্রয়োজন এতে কাজ ভালো হয়।

লক্ষ নির্ধারণ করুন: যেকোন কাজ ভালো করার জন্যে একটি লক্ষ থাকা প্রয়োজন। লক্ষ নির্ধারণ না করলে কাজ শেষ করা কঠিন হয়ে পড়বে। কাজের জন্যে একটি লিস্ট করা প্রয়োজন। কোন কাজটি আগে করা হবে, কতদিনের মধ্যে করা হবে সে বিষয়ে লক্ষ্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন। এসব লক্ষ্য পূরণ হলে নিজেকে নিজে উৎসাহ দেওয়া প্রয়োজন এতে কাজের প্রতি আরো অনুপ্রেরণা বাড়বে।

গভীরভাবে কাজে মনযোগ দিন: অনেকেই দেখা যায় কাজের সময় ফোন বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহার করেন। এতে করে কাজ ঠিকঠাক হয়ে ওঠে না। তাই কাজের সময়টুকু শুধুমাত্র কাজের জন্যেই রাখা প্রয়োজন। কাজের ফাঁকে ফাঁকে হাঁটাচলা করা যেতে পারে এতে একগুঁয়েমি কেটে আরো সতেজ অনুভব করা যাবে। কাজ শেষে পুরোপুরি সময় নিজেকে ও পরিবারকে দিন।

নিজের প্রতি যত্ন নিন: কাজের ফাঁকে ফাঁকেও নিজের জন্যে যত্ন নিতে হবে। নিজে সুস্থ না থাকলে লক্ষ্যে পৌঁছানো কষ্টকর হয়ে যাবে। কাজের ত্রিশ মিনিট পর পর পানি পান করুন এবং একটি হাঁটুন বা শরীরকে নাড়াচাড়া করুন। যদি সম্ভব হয়, অফিসের লাঞ্চের সময় সাস্থ্যকর খাবার খান এবং একটু বিশ্রাম নিন। এতে অফিসের কাজ থেকে মানসিকভাবে নিজেকে দূরে রাখতে পারবেন এবং নিজের কাজ ভালোভাবে করার জন্যে নিজেকে রিফ্রেশ করতে পারবেন।


সূত্র: দ্যা হেভেন, ওয়ান্ডারমাইন ও ফুল ফোকাস অবলম্বনে

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক জ র জন য ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

পরিশ্রম আর শৃঙ্খল জীবনে নাঈম পাচ্ছেন সফলতার সুবাস 

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন মেপে। ঠান্ডা মাথায় উত্তর দিচ্ছিলেন বুঝেশুনে। পালটা প্রতিক্রিয়া না দেখিয়ে ‘কঠিন প্রশ্ন’ বলে হেসে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছেন দারুণভাবে। সেঞ্চুরিয়ান নাঈম শেখের পরিবর্তন শুধু ব্যাট হাতে আসেনি, শরীরী ভাষায়ও দিচ্ছেন পরিপক্বতার পরিচয়। 

কদিন আগেই জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টিতে পেয়েছিলেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের স্পর্শ। এবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) প্রথমবারের মতো হাঁকান সেঞ্চুরি। তাও এমন এক মুহূর্তে, যখন হারলেই বাদ পড়বে দল তখন। 

ওপেনিংয়ে নেমে ৬২ বলে ১১১ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন ইনিংসের শেষে। তার দল খুলনা টাইগার্স পায় বড় পুঁজি। তাতে ভর করে ৪৬ রানের বয় জয়ে প্লে-অফের আশা বাঁচিয়ে রাখে খুলনা। শুধু কৌশল নয়, ব্যক্তিগত জীবনে শৃঙ্খলা এনে নাইম পাচ্ছেন সফলতার দেখা।

“সর্বশেষ যতগুলো টুর্নামেন্ট খেলেছি নিজের শতভাগ দিয়ে চেষ্টা করেছি। মাঠে সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। ভেঙে বলতে গেলে অনেক লম্বা হয়ে যাবে। অফ সিজনে কাজ করেছি।”

“যদি সেভাবে বলতে চাই, ঘরোয়া ক্রিকেটের সব কোচের কথা বলতে হবে। বাবুল স্যার, সোহেল স্যারের সাথে কাজ করেছি। আনোয়ার ভাই নামে একজন আছে। নির্দিষ্ট একজন বলতে গেলে মাইন্ড ট্রেনিং নিয়ে কাজ করেছি, ওটা অনেক ভূমিকা রাখছে। শৃঙ্খলাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। অবশ্যই আমার পরিবার”, নিজের পরিবর্তনের গল্প এভাবেই বলছিলেন নাঈম। 

লাল সবুজের জার্সিতে নাঈমের আগমন ছিল দুর্দান্ত। ভারতের বিপক্ষে নাগপুরের তৃতীয় ম্যাচেই খেলছিলেন ৮১ রানের দারুণ এক ইনিংস। সম্ভাবনা দেখিয়ে জাতীয় দলে এলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে যেন নিজেকে হারিয়ে ফেলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। অন্য অনেকের মতো তাকে ধরা হচ্ছিল ‘খসে পড়া তারা’ হিসেবে। তবে না, নাইম আড়ালে গিয়ে আসল কাজটাই করছেন নীরবে-নিভৃতে। 

খেলার ধরন নিয়েও ছিল প্রশ্ন। ইনিংসজুড়ে ডট বলার সমাহার। অবশ্য এতে তৎকালীন কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোর প্রভাব। গুরুর ‘ধরে খেলার’ শিক্ষায় নাঈম যেন আরো দিশেহারা হয়ে যান। নাঈমে শেখে এমন পারফরম্যান্সে ওপেনার খরায় ভুগতে থাকা বাংলাদেশ যেন আরো সংকটে পড়ে। 

নাঈমের জায়গা নিয়ে নেন তরুণ তানজীদ হাসান তামিমরা। ফর্মে ফিরে দলে আসা সৌম্য সরকারও আছেন তালিকায়। সবশেষ তাকে ওয়ানডেতে দেখা গেছে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে। আর টি-টোয়েন্টি খেলেন ২০২২ সালের আগস্টে!  

নিজের সঙ্গে নিজে চ্যালেঞ্জ নিয়ে নাঈম পেয়েছেন সফলতা, “সত্যি বলতে কোনো প্রত্যাশা ছিল না। বেসিক ঠিক রেখে প্রসেস মেনে চলতে চাই। কোনো প্রত্যাশা রেখে শুরু করিনি। কোনো লক্ষ্য নেই, উন্নতি করতে পারছি কি না… নিজের সাথে নিজের চ্যালেঞ্জ। উন্নতি করতে চেয়েছি, হয়েছে কি না। এনসিএলেও কোনো লক্ষ্য ছিল না যেমন সর্বোচ্চ রানের মালিক হতে হবে বা ভালো করতে হবে। এমন কোনো ভাবনা ছিল না। নিজের সাথে নিজের চ্যালেঞ্জ যত বেশি বড় করা যায়।” 

“মানসিকতায় পরিবর্তন অবশ্যই জরুরি। এটা না এলে লম্বা ইনিংস খেলা খুব কঠিন ওপেনার হিসেবে। আগে অফ স্পিনে অনেক সংগ্রাম করছিলাম। ঐ জায়গা থেকে বের হয়ে আসছি, কীভাবে ডট না করে স্ট্রাইক রোটেট করা যায়। আর রেঞ্জ হিটিং। তিন বছর আগে মুশফিক ভাই বলেছিল, রিভার্স সুইপ নিয়ে কাজ করা গেলে আমার জন্য সহজ হয়ে যাবে। এখন অফ স্পিনে সুইপ-রিভার্স সুইপ অনেক সহজ হয়েছে। স্লগ সুইপে আগে ভালো ছিলাম, মাঝখানে সংগ্রাম করছিলাম। বলতে গেলে লম্বা হয়ে যাবে। অবশ্যই কিছু জিনিস পরিবর্তন এনেছি তাই সাফল্য আসছে”— বলছিলেন নাঈম। 

ঢাকা/রিয়াদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পরিশ্রম আর শৃঙ্খল জীবনে নাঈম পাচ্ছেন সফলতার সুবাস