সিরাজগঞ্জের তাড়াশে উপজেলা জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের ৮ ইউনিয়নের কমিটি গঠনে কয়েকটিতে ত্যাগী নেতাকর্মীদের বাদ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অনৈতিক সুবিধা নিয়ে কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি গোপাল চন্দ্রের বিরুদ্ধে। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, ওই ইউনিয়ন কমিটিগুলোতে পতিত আওয়ামী লীগের অনুসারীদেরও পদ-পদবী দেওয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা দেশিগ্রাম ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো.

বাছেদ আলীকে দেশিগ্রাম ইউনিয়ন কৃষকদলের সভাপতি করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য ইউনিয়ন কমিটি নিয়েও চলছে সমালোচনা।

এ ঘটনায় গত শনিবার দুপুরে তাড়াশ প্রেসক্লাব চত্বরে কৃষক দলের ইউনিয়ন কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন দেশিগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পাশাপাশি বিক্ষুদ্ধ প্রতিবাদকারীরা বিষয়টির প্রতিকার চেয়ে তাড়াশ এবং সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন।

যা নিয়ে গত কয়েক দিনে বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে নড়েচড়ে বসে সংগঠনটির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা। বিষয়টি তদন্তের জন্য গত বৃহস্পতিবার রাতে তাড়াশ উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির প্রধান করা হয়েছে তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. দুলার হোসেনকে। সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান সবুজ ও প্রবাসী কল্যাণ সম্পাদক মো. আব্দুল মালেককে। কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠনের বিষয়টি তাড়াশ উপজেলা বিএনপির সভাপতি স ম আফছার আলী এবং সাধারণ সম্পাদক এ টি এম আমিনুর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, তাড়াশ উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি গোপাল চন্দ্র অনৈতিক সুবিধা নিয়ে দেশিগ্রাম ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. বাছেদ আলীকে দেশিগ্রাম ইউনিয়ন কৃষকদলের সভাপতি করেন। তাই পদবঞ্চিত প্রকৃত ইউনিয়ন কৃষক দলের নেতাকর্মীরা মানববন্ধন করে প্রতিবাদ জানায় এবং তাড়াশ উপজেলা ও সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি, কৃষকদলের নেতৃবৃন্দের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এরই প্রেক্ষিতে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো।

এদিকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে কমিটি করার অভিযোগ অস্বীকার করে তা ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন তাড়াশ উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি গোপাল চন্দ্র।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত ড় শ উপজ ল ব এনপ র স তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

জবি শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে দ্রুত বিচার দাবি করেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা হলেন, জবির রসায়ন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ আলী, তামান্না তাবাসসুম ও আবুল বাসার। অপরদিকে, হামলার নেতৃত্ব দেওয়া অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী অনিক কুমার দাশ মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ।

এর আগে, গতকাল বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জবির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মার্কেটিং বিভাগের দুই শিক্ষার্থী জুতা পায়ে উঠলে রসায়ন বিভাগের দুই শিক্ষার্থী তার প্রতিবাদ করে। এতে তাদের ওপর হামলা চালায় মার্কেটিং বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী।

এ হামলার নেতৃত্ব দেন জবি ছাত্রদল কর্মী ও মার্কেটিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী অনিক কুমার দাশ। এতে আরো যুক্ত ছিলেন, মাহফুজুর রহমান চৌধুরী মাহী, আয়ান, আরিফ, রাতুল, আসিফসহ আরো ১৫ জন।

এ হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে আমরা আর কোন দমন-পীড়ন বরদাস্ত করব না। আর কাউকে ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠার সুযোগ দেওয়া হবে না। এর আগের হামলাগুলোর ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এসব ঘটনার দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করুক। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

রসায়ন বিভাগের ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী ২০২০ -২০২১ সেশনের তামান্না তাবাসসুম বলেন, “আমরা প্রক্টরের কাছে গিয়েছিলাম। তারা আমাদের কোন সহযোগিতা করেনি। আমরা তাহলে কার কাছে যাব? আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”

একই বিভাগের শিক্ষার্থী আকরাম হোসেন বলেন, “গতকালের ঘটনার পর আমরা প্রক্টরের কাছে যাওয়ার পর তিনি আমাদের বলেন, ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়ার জন্য। এ বিষয়ে তারা কি পদক্ষেপ নেবে, সে ব্যাপারে তিনি আমাদের কিছু জানাতে পারেননি। বরং আমাদের বিভাগের শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। যদি এ ঘটনায় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমরা প্রশাসন ও যে দলের  প্রশ্রয়ে এ ঘটনা ঘটেছে, তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলন গড়ে তুলবে। সেই সঙ্গে আমরা ক্লাস বর্জনের ডাক দেব।”

আব্দুল কাহহার জামিল বলেন, “গতকালের ঘটনায় প্রক্টর স্যার আমাদের কোন খোঁজ নেননি। রাত ১০টার পর একজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠান। তিনি চিকিৎসার জন্য কিছু টাকা দেন। কিন্তু প্রক্টর স্যারের সঙ্গে আমরা কথা বলতে গেলে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। গত ১ বছরে আামদের বিভাগের শিক্ষার্থীরা তিনটি হামলার অভিযোগ করলেও সুষ্ঠু বিচার পাননি। যদি ওই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হত, তাহলে আজ আমাদের এখানে দাঁড়াতে হত না। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

তিনি বলেন, “বিচারের নামে টালবাহানা করা হয়। আমাদের প্রক্টর অফিস থেকে ভয় দেখিয়ে অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হয়। এছাড়া আমাদের নানা হুমকি দিয়ে ভয় দেখনো হয়। বলা হয়, যদি ক্যাম্পাসের বাইরে কেউ হামলা করে, তাহলে সে দায় প্রক্টর অফিস নেবে না।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “সবকিছুর জন্য সময় দরকার। রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা যেভাবে বিচার চাচ্ছে, সেটা এত দ্রুত সম্ভব না। আগের একটা কমিটি আছে, সে কমিটির কাছেই আমি এটার তদন্ত হস্তান্তর করেছি।”

তিনি বলেন, “হ্যাঁ, আমি তাদের ২০০৫ সালের নীতিমালা পড়তে বলেছি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামীকাল ভর্তি পরীক্ষা আছে। সব মিলিয়ে ব্যস্ততার মধ্যে আছি।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৫ দাবিতে নোবিপ্রবির ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
  • জবি শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রদল কর্মীর নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
  • সোনারগাঁয়ে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত
  • সেন্টমার্টিনে পর্যটক উন্মুক্ত রাখার দাবি
  • সাদ্দা‌মের ফাঁসির দাবিতে দে‌বিদ্বা‌রে বি‌ক্ষোভ
  • মাছচাষিদের ‘পাওনা’ সাত কোটি টাকা, পুলিশ সদস্য লাপাত্তা