দেশে কর্মক্ষম জনসংখ্যার অর্ধেকই হিসাবের বাইরে
Published: 17th, January 2025 GMT
বাংলাদেশের কর্মক্ষম জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক শ্রমশক্তির বাইরে রয়ে গেছে। দেশের ৪৯ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ বর্তমানে শ্রমবাজারে নেই। বিদ্যমান জনশক্তির মধ্যে আবার নারী-পুরুষ বৈষম্য প্রকট। মোট শ্রমশক্তির ৭৮ দশমিক ৫ শতাংশই পুরুষ। বাকি ২১ দশমিক ২৫ শতাংশ নারী।
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলওর প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আইএলওর সদরদপ্তর থেকে ‘বৈশ্বিক কর্মসংস্থান এবং সামাজিক আভাস: ২০২৫’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
দেশে ১৫ বছর ও তার চেয়ে বেশি বয়সী কর্মী ও বেকার জনগোষ্ঠীর সমষ্টিকে শ্রমশক্তি হিসেবে বিবেচনা করে থাকে বিবিএস। সংস্থার সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, দেশে এ ধরনের জনগোষ্ঠী ৭ কোটি ২২ লাখ ৮০ হাজার। বিবিএসের সর্বশেষ জনশুমারি অনুযায়ী, দেশের জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ৯১১ জন।
আইএলওর প্রতিবেদনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বলা হয়, বেকারত্বের বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে তরুণ-তরুণীরা। উৎপাদনশীলতার ক্ষেত্রে তারা তুলনামূলক বেশি পিছিয়ে আছে, যা অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সামাজিক সুবিচার ব্যাহত করছে। এর চেয়েও বেশি উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, এনইইটি (নট ইন এমপ্লয়মেন্ট এডুকেশন ট্রেনিং), অর্থাৎ কোনো রকম কর্মসংস্থান, শিক্ষা, প্রশিক্ষণে নেই– এ হার ৩০ দশমিক ৯ শতাংশ। এনইইটির মোট হারের মধ্যেও তরুণীদের হার বেশি।
প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে বাংলাদেশে আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পুটিআইনেন এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশকে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে সক্রিয় শ্রমবাজার নীতি নিতে হবে। বিশেষ করে, তরুণ, নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য শোভন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
বিশ্ববাজার ও কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, সদ্য সমাপ্ত ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী বেকারত্বের হার ছিল ৫ শতাংশ। আগের বছরও একই হার ছিল। কাজের ইচ্ছা ও সুযোগের ব্যবধান, অর্থাৎ কেউ কাজ করতে চায়, কিন্তু পাচ্ছে না– এ রকম মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪০ কোটি ২০ লাখ। এর মধ্যে ১৮ কোটি ৬০ লাখ বেকার; ১৩ কোটি ৭০ লাখ কাজ করতে আগ্রহী নন। এ ছাড়া ৭ কোটি ৯০ লাখ মানুষ আছেন, যারা কাজ করতে চান। পারিবারিক দায়িত্বের কারণে যোগ দিতে পারেন না। মহামারি করোনা-পরবর্তী সময়ে কর্মসংস্থান, কাজের ইচ্ছা ও সুযোগের ব্যবধান কিছুটা কমে আসছে। তবে স্বাভাবিক হতে আরও দু’বছর লেগে যেতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজ ও কাজের দারিদ্র্য করোনাকালের আগের অবস্থায় ফিরে গেছে। স্বল্প আয়ের দেশগুলো নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বেশি বেকায়দায় আছে। এতে বলা হয়, শ্রমবাজার পুনরুদ্ধারের কাজটিও প্রায় অসম্ভব। কারণ, বিশ্ব অর্থনীতিই এখনও মন্থর গতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
আইএলও’র প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন বছরেও বিশ্বব্যাপী বেকার মানুষের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কারণ হিসেবে উৎপাদনশীলতার মন্থর গতিকে দায়ী করা হয়। উৎপাদন কাঠামোয় দ্রুত গতির প্রযুক্তির একচ্ছত্র ব্যবহারকেও এ জন্য দায়ী করা হচ্ছে। বিশেষ করে, শ্রম বাজারে যুক্ত হওয়া নবীন শ্রমিকদের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির প্রতিবন্ধকতা মারাত্মক আকার নিতে পারে। বেকারত্বের কারণে আয় বৈষম্যও উদ্বেগের বড় কারণ হতে পারে।
.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
বইমেলা উপলক্ষে ঢাবিতে যানবাহন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা শিথিল
অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে বহিরাগত যানবাহন প্রবেশের ক্ষেত্রে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) ঢাবির জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অমর একুশে বইমেলা আমাদের প্রাণের মেলা। সারা দেশ থেকে বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণি-পেশার মানুষ এ বইমেলায় আসেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতর দিয়ে তাদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে প্রবেশপথগুলোতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে যে বিধি-নিষেধ থাকে, তা অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে শিথিল করা হলো। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যানবাহন নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো ব্যারিকেড রাখবে না।
তবে, ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ এ প্রবেশপথগুলোতে সুশৃঙ্খলভাবে যানবাহন প্রবেশ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে যানবাহনগুলো সুশৃঙ্খলভাবে পার্কিং করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বেচ্ছাসেবক দল এবং প্রক্টরিয়াল মোবাইল সিকিউরিটি টিমের সদস্যরা ট্রাফিক বিভাগকে এ ব্যাপারে সার্বিক সহায়তা করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ অমর একুশে বইমেলা উপলক্ষে যানবাহন চলাচল নির্বিঘ্ন করার জন্য ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছে। এ ব্যাপারে সবার সহযোগিতার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।
ঢাকা/সৌরভ/রফিক